সন্দীপ সরকার, কলকাতা: পরোটার প্লেট তুলে দেওয়া হচ্ছে লিওনেল মেসির (Lionel Messi) হাতে। সঙ্গে আনলিমিটেড তরকারি! কাঁচা লঙ্কা, পেঁয়াজও থাকতে পারে পাতে!
কথাগুলো ভীষণ চেনা শোনাচ্ছে না? প্রথম তিন লাইন পড়ে অনেকেই বুঝে গিয়েছেন যে, এ সেই রাজুদার বিখ্যাত সংলাপ। শিয়ালদহ স্টেশনের বাইরে যিনি পরোটা বিক্রি করেন। ফুড ব্লগার, ইউটিউবার, কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের সৌজন্যে যে নাম এখন বাংলার প্রায় প্রতি ঘরে পৌঁছে গিয়েছে।
সেই 'রাজুদা'র সঙ্গে এবার সাক্ষাৎ হতে চলেছে ফুটবল গ্রহের উজ্জ্বলতম নক্ষত্রের?
এমন অসম্ভবকেই সম্ভব করার পরিকল্পনা নিয়েছেন শতদ্রু দত্ত। যাঁর উদ্যোগে আগামী ডিসেম্বরে মেসি আসছেন ভারতে। কলকাতা-সহ তিন শহরে এক ঝাঁক অনুষ্ঠান রয়েছে কিংবদন্তি ফুটবলারের। আর্জেন্তিনার বিশ্বকাপজয়ী ফুটবলারকে দেখতে এখন থেকেই আগ্রহ তুঙ্গে।
কলকাতা সফরের ফাঁকে যদি 'পকেট পরোটা' খ্যাত 'রাজুদা'র সঙ্গে মেসির দেখা হয়ে যায়, অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। শতদ্রু অন্তত সেরকমই ছকে রেখেছেন।
গোটা পরিকল্পনার কথা এবিপি লাইভ বাংলাকে বললেন শতদ্রু। জানালেন, কীভাবে মেসি-রাজুদা সাক্ষাতের নকশা তাঁর মাথায় এসেছে। শতদ্রু বললেন, 'সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু ছবি চোখে পড়ছিল কয়েকদিন ধরেই। সেখানে পরোটা বিক্রেতা রাজুকে ভীষণভাবে ট্রোল করা হচ্ছে। মেসির সঙ্গে রাজুকে জড়িয়ে কটাক্ষ করা হচ্ছিল। মেসি কলকাতায় এসে রাজুর কাছে পরোটা খেতে গিয়েছেন, এসব লেখালিখি হচ্ছিল। দেখে ভীষণ খারাপ লাগে। এভাবে কাউকে ট্রোলিং করার ঘোরতর বিরোধী আমি।'
তারপরই ট্রোলারদের জবাব দেওয়ার রাস্তা খুঁজে বার করে ফেলেন শতদ্রু। ঠিক করেছেন, যে ছবি তৈরি করে ট্রোলিং করা হচ্ছে রাজুকে, সেই কল্পনাকেই তিনি বাস্তব রূপ দেবেন। শতদ্রুর কথায়, 'পরিকল্পনা করেছি, মেসির সঙ্গে রাজুর সাক্ষাৎ করাব। আমরা বাঙালিরা তো পরোটা ভীষণ পছন্দ করি। সকলেই পরোটা খাই। মেসির হাতে পরোটা দিয়ে বলার ইচ্ছে আছে যে, দেখুন, আপনারা যেমন ব্রেকফাস্ট করেন, এটাও সেরকম বাঙালির প্রিয় প্রাতঃরাশ। আমার সঙ্গে রাজুর আলাপ নেই। তবে খুব শীঘ্রই ওঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে।'
সেই সঙ্গে ট্রোলারদের উদ্দেশে ক্রীড়া সংগঠক শতদ্রুর বার্তা, 'রাজু পরোটা বিক্রি করে রোজগার করেন, এতে অন্যায়ের কী আছে! ব্যঙ্গ না করে ওঁকে সম্মান করা উচিত। যে যে পেশাতেই থাকুন না কেন, ট্রোলিং করাটা এখন স্বভাব হয়ে গিয়েছে। কী যে আনন্দ পান এতে, বুঝতে পারি না। অন্যকে ছোট করে মানসিক তৃপ্তি খোঁজা আসলে ব্যধি। সেই রোগ যাতে সারে, তাই আমি মেসি-রাজুর সাক্ষাতের কথা ভাবছি। এটাই ট্রোলারদের জবাব।'
শীতের কলকাতা ফুটবলের রাজপুত্রের দর্শন তো পাচ্ছেই, সেই সঙ্গে এক অভাবনীয় দৃশ্যেরও সাক্ষী থাকার সুযোগ মিলতে পারে।