কলকাতা: যাঁর ফুটবল জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িত একটা নাম, মোহনবাগান, তাঁকে সবুজ-মেরুন জার্সি ফেলে রেখে কেরল পাড়ি দিতে হবে কেরল ব্লাস্টার্সের হলুদ জার্সি গায়ে মাঠে নামতে, এটা যেমন কখনও ভাবতে পারেননি প্রীতম কোটাল (Pritam Kotal), তেমনই হয়তো ভাবতে পারেননি তাঁর ভক্তরাও।
২০১৩-র অক্টোবরে প্রথম মোহনবাগানে (Mohun Bagan) যোগ দেওয়ার পর থেকে তাঁর সঙ্গে ‘মোহনবাগান’ নামটা কী ভাবে জড়িয়ে গিয়েছে, তিনি নিজেই বুঝতে পারেননি। এক সাক্ষাৎকারে প্রীতম বলেছিলেন, “মোহনবাগান আমার কাছে শুধু ফুটবল ক্লাব নয়, একটা পরিবারও।” মোহনবাগান থেকে লোনে তিনি পুণে সিটি, আতলেটিকো কলকাতায় খেলেছেন ঠিকই। কিন্তু ফিরে এসেছেন সেই সবুজ-মেরুন তাঁবুতেই।
মাঝে ২০১৭-য় দিল্লি ডায়নামোজে যান। বছর দেড়েক সেখানে কাটিয়ে ফিরে আসেন তৎকালীন এটিকে এফসি-তে। ২০২০-তে সেখান থেকে যখন এটিকে মোহনবাগানে যান, তাঁর চেয়ে খুশি বোধহয় কেউই ছিলেন না। বলেছিলেন, “আবার যে সবুজ-মেরুন জার্সি পরে মাঠে নামতে পারব, এটাই ভেবেই আনন্দে লাফাতে ইচ্ছে করছে। আমার কাছে এর চেয়ে ভাল খবর আর কিছু হতেই পারে না”। আদ্যান্ত মোহনবাগানী এই প্রীতম কোটালকে এ বার মোহনবাগান ছেড়ে যেতে হচ্ছে কেরল ব্লাস্টার্সে!
গতবার আইএসএলেই যাদের ঘরের মাঠে ৫-১ গোলে হারিয়ে আত্মহারা হয়ে গিয়েছিলেন, সেই কেরল ব্লাস্টার্সই আসন্ন মরশুম থেকে হতে চলেছে তাঁর ক্লাব এবং কোচির জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামই হতে চলেছে তাঁর ঘরের মাঠ।
মোহনবাগান তথা বাংলার ফুটবলের সঙ্গে তাঁর এত বছরের আত্মীয়তা কাটিয়ে ভিনরাজ্যে যাওয়া। আবেগ যেন ধরে রাখা যায় না। বুকের ভিতরের কষ্ট বাঁধ মানতে চায় না। গত শুক্রবার বিদায় বেলা নিশ্চিত হওয়ার পরে প্রীতম তাঁর ভক্তদের উদ্দেশে যে বার্তা দিয়েছেন, তাতে লিখেছেন, “কিচ্ছুটি থেমে থাকে না। পায়ে পায়ে পাড়ি দেয় অন্য কোথাও। তবুও ফেলে আসা সময়টুকু সঙ্গে থেকে যায়। সেই সবুজ মেরুনের আবেগ, গ্যালারিতে সমর্থকদের চিৎকার, তাঁদের হাসি, তাঁদের চোখের জল, সতীর্থদের ভালবাসা এগুলো না হয় জমা থাকুক আমার মনে। একসঙ্গে বেঁধে থাকা এতগুলো বছর। অধিনায়ক হিসেবে নিজেকে নতুন করে পাওয়া। সবকিছুই আমার অভিজ্ঞতাকে আরও পরিপূর্ণ করেছে। বলতে দ্বিধা নেই নিজেকে উজাড় করে দিয়ে যে ভালবাসা পেয়েছি তা বলে শেষ করা যাবে না।”
মোহনবাগানের মতো ক্লাবের সঙ্গে এতগুলো বছর কাটানোর মায়া যে সহজে ত্যাগ করা যাবে না, তা স্পষ্ট জানিয়ে প্রীতম বলেছেন, “বিপক্ষ দলের খেলোয়াড়ের পা থেকে বলটা কাটানো যায় কিন্তু এই সবুজ মেরুনের মায়াটা কাটানো সত্যি একটু কঠিন হয়ে যায়। সবাইকে অফুরান ভালবাসা। আবার দেখা হবে নতুন কোনও একদিনে।”
আরও পড়ুন: বছর শেষে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে পরীক্ষা টিম ইন্ডিয়ার, প্রকাশিত হল পূর্ণাঙ্গ সূচি
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম টেলিগ্রামেও। যুক্ত হোন