কলকাতা: তাঁর দু'হাত বহু ম্যাচে দলকে জিতিয়েছে । এই দুটি হাতের উপর ভরসা রেখে অনেক কঠিন ম্যাচ উতরে গিয়েছে ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান ও মহমেডান। প্রাক্তন গোলরক্ষক সেই প্রশান্ত ডোরা প্রয়াত হলেন। মাত্র ৪৪ বছর বয়সেই।


গত আড়াই মাস ধরে জ্বরে ভুগছিলেন প্রশান্ত। তাঁর দাদা হেমন্ত ডোরা জানিয়েছিলেন, জ্বর না কমায় তাঁকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। প্রাথমিক অবস্থায় তাঁর রোগ নির্ণয় করা সম্ভব হয়নি। প্রশান্ত করোনায় আক্রান্ত কি না, সেই সন্দেহ হয়েছিল ৷ এরপর তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে। পরে দেখা যায় তিনি‌ এইচএলএইচ রোগে আক্রান্ত। হেমন্ত বলেছিলেন, "ভাইয়ের প্লেটলেট ক্রমশ কমছে। ওর রক্তের প্রয়োজন।" স্বামীর জীবনরক্ষায় O+ গ্রুপের রক্তের আবেদন জানিয়েছিলেন স্ত্রী সৌমি। বিভিন্ন ফুটবলপ্রেমী গ্রুপ থেকেও তাঁর জন্য রক্ত চেয়ে আবেদন করা হয়। রক্তের প্রয়োজন শুনে নির্দিষ্ট গ্রুপের রক্তের ব্যবস্থা করেছিলেন প্রাক্তন ক্রীড়ামন্ত্রী মদন মিত্র। তবে শেষ পর্যন্ত জীবনযুদ্ধে হার মানতে হল প্রশান্তকে।

প্রশান্তর দাদা হেমন্ত ডোরাও ছিলেন নামী গোলকিপার। প্রশান্ত ডোরা মোহনবাগান, ইস্টবেঙ্গল, মহমেডানে সুনামের সঙ্গে খেলেছেন। বাংলার হয়ে খেলেছিলেন সন্তোষ ট্রফি। ১৯৯৯ সালে ভারতীয় দলে সুযোগ পেয়েছিলেন প্রশান্ত। পরবর্তীকালে সাফ কাপ, সাফ গেমসেও ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। চাকরি করতেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কে। খেলা ছেড়ে দেওয়ার পরও ছোটদের প্রশিক্ষণ দিতেন প্রশান্ত।

প্রশান্তর বাড়ি হুগলির বৈদ্যবাটিতে। তবে সম্প্রতি তিনি দমদমেপ নাগেরবাজারে ফ্ল্যাট কিনে সেখানেই থাকতেন। বেশ কয়েক মাস ধরেই তিনি ভুগছিলেন হিমোফ্যাগোসাইটিক লিম্ফোহিস্টিওসিটোসিসে। এই রোগ সাধারণত শিশুদেরই দেখা যায়। প্রাপ্ত বয়স্কদের এই রোগ প্রায় বিরল। সেই রোগেই মঙ্গলবার সকালে মারা গেলেন তিনি। সমগ্র দেশ যখন স্বাধীন ভারতের ৭২তম স্বাধীনতা দিবস পালন করছে সেই সময়ে এল দুঃসংবাদ। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৪৪ বছর। টাটা মেডিক্যাল রিসার্চ সেন্টারে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। প্রশান্তর অকাল প্রয়াণে ময়দানে শোকের ছায়া।