মুম্বই: আইসিসি-র ‘স্পিরিট অফ ক্রিকেট’ পুরস্কার পাওয়ার পর বিরাট কোহলির একটি ভিডিও প্রতিক্রিয়ায় ট্যুইটে মন্তব্য করলেন মহম্মদ আমির। পাকিস্তানের ফাস্ট বোলার লিখলেন, এক সত্যিকারের বড়মাপের খেলোয়াড়ের থেকে দারুণ একটা কথা শোনা গেল। তাঁর এই ট্যুইট সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রশংসা কুড়িয়েছে।
মাঠে কোহলি ও আমিরের প্রতিদ্বন্দ্বিতা চরমে থাকে। যখনই কোনও প্রতিযোগিতায় কোহলি ও আমির মুখোমুখি হয়েছেন, তখনই উত্তেজনার পারদ চড়েছে। তা সে ২০১৬ এশিয়া কাপ হোক বা ২০১৭ ক্রিকেট বিশ্বকাপ-- কোহলি বনাম আমির সর্বদা একটা আলাদা আকর্ষণ বহন করে। তবে, মাঠে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকলেও, তার বৃত্তের বাইরে দুজনই একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। যার উদাহরণ দেখা গেল বুধবার। ভারত অধিনায়কের ভূয়সী প্রশংসা করলেন পাক পেসার।





আইসিসি-র ‘স্পিরিট অফ ক্রিকেট’ পুরস্কার পাওয়ায় তিনি যে ‘অবাক’, তা স্বীকার করে নেন কোহলি। অতীতে বিভিন্ন ভুল-ঘটনার জন্য তিনি যে বহু বছর নজরবন্দি ছিলেন, সে কথাও মনে করান ভারত অধিনায়ক। একটি ভিডিও বার্তায় বলেন, আমি সত্যিই অবাক হয়েছি যে এই পুরস্কার আমি পেয়েছি।
প্রসঙ্গত, বিশ্বকাপে ভারত-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচে করা একটি সদর্থক ব্যবহারের জন্যই চলতি বছরের পুরস্কার জেতেন কোহলি। ওই ম্যাচে বাউন্ডারি লাইনের ধারে গিয়ে ভারতীয় সমর্থকদের উদ্দেশে কোহলি বলেন, তাঁরা যেন কোনও অবস্থাতেই স্টিভ স্মিথকে ব্যঙ্গ বা কটাক্ষ না করেন। প্রসঙ্গত, বল-বিকৃতির জন্য এক বছরের নির্বাসন কাটিয়ে জাতীয় দলে কিছুদিন আগেই ফিরেছিলেন স্মিথ।
অথচ একটা সময় গিয়েছিল, যখন এই স্মিথকেই তীব্র সমালোচনা করে তাঁকে কার্যত ‘ঠগবাজ’ হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন কোহলি। সেখান থেকে কোহলির এই পরিবর্তন কোনও গল্পগাথার চেয়ে কম নয়। বিশ্বের সেরা ব্যাটসম্যানের লড়াইয়ে কোহলি ও স্মিথের জোর টক্কর চলে। কিন্তু, মাঠের প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে বরাবর মাঠেই সীমাবদ্ধ রাখতে আগ্রহী কোহলি।
ওই ভিডিও বার্তায় স্মিথের পাশে তিনি কেন দাঁড়িয়েছিলেন, তা ব্যাখ্যা করেন কোহলি। বলেন, ওই পরিস্থিতিতে এক ব্যক্তির মনে কী হয়, তা সহজেই অনুমেয়। আমার মনে হয় না, একজন ব্যক্তি, যিনি ওই কঠিন পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা চালাচ্ছেন, কেউ তাঁর ফায়দা তুলুক।
এই কোহলিকে একটা সময় ম্যাচ-ফির ৫০ শতাংশ জরিমানা করা হয়েছিল। কারণ তিনি দর্শকদের উদ্দেশ্যে কুরুচিকর অঙ্গভঙ্গি করেছিলেন। ভিডিওয় তিনি জানিয়ে দেন, দর্শকদের উচিত নয় কোনও ক্রিকেটারকে হেয় করা। বলেন, অনুগামীদের থেকে এটা কাম্য নয়। বিশেষ করে, আমাদের মতো ক্রিকেটীয় দেশ ও ক্রীড়াপ্রেমী রাষ্ট্রের অনুগামীদের তো নয়-ই।
ভারত অধিনায়ক যোগ করেন, আমাদের সকলের দায়িত্বশীল হওয়া উচিত। প্রতিপক্ষকে উস্কাও, মাঠে অবশ্যই তাদের ওপর কর্তৃত্ব কর। কিন্তু, কোনওভাবে কাউকে মানসিকভাবে আঘাত দিয়ে নয়। এটা কোনওভাবেই কোৌনও অবস্থাতেই গ্রহণযোগ্য নয়। মানুষের এটা মনে রাখা উচিত।