নয়াদিল্লি:  এখন ভারতের ক্রিকেট দলে অন্যতম নির্ভরযোগ্য খেলোয়াড় হার্দিক পান্ড্য। আইপিএলে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে খেলেই প্রচারের আলোয় উঠে এসেছিলেন এই তরুণ অলরাউন্ডার। ঘরোয়া ক্রিকেটের গণ্ডি পেরিয়ে পরে নীল জার্সি গায়ে চাপানোর সুযোগ পান তিনি। জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার পর আর ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে। সীমিত ওভারের মতো টেস্ট দলেও এখন নিয়মিত খেলোয়াড় হয়ে উঠেছেন তিনি।
কিন্তু স্বপ্নের এই উড়ান একেবারেই সহজ ছিল না। নিজের মুখেই তিনি জানিয়েছেন, ২০১৫-য় মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে অভিষেকের আগের লড়াই এবং তার পরবর্তী ঘটনার কথা।আইপিএলে খেলার আগে নিজেদের আর্থিক সংকট নিয়ে একটি অনুষ্ঠানে অকপটে জানিয়েছেন হার্দিক।
হার্দিক বলেছেন, ‘তখন আমার ১৭ এবং ক্রুনালের ২০ বছর বয়স। তখন বাবাকে বলেছিলাম, আমাদের কারুর সহানুভূতি প্রয়োজন নেই, কাউকে বলতে হবে না যে, দলে আমার ছেলেদের নাও। কারণ, এটা একেবারেই ভালো লাগে না এটা। আমরা নিজেরা খেললে খেলব, না হয় তো খেলব না। আমরা আদৌ চাইতাম না যে, পরে কেউ বলেন ওই দুটো ছেলেকে সুযোগ করে দিয়েছিলাম বলে খেলছে। হ্যাঁ, আমাদের কোচের মতো অনেক লোকই আমাদের সাহায্য করেছেন। তাঁদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। কিন্তু মাঠে আমাদের নিজেদেরই নিজেদের যোগ্যতার প্রমাণ দিতে হয়েছে’।
স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য তাঁর পরিবার কীভাবে লড়াই করেছে এবং তাঁর ও তাঁর দাদার কঠোর পরিশ্রমে পরিবারে স্বচ্ছলতা এসেছে, সে কথাও জানিয়েছেন হার্দিক।
হার্দিক বলেছেন, ‘একটা সময় প্রতিটি পয়সার জন্য আমাদের কীভাবে সংগ্রাম করতে হয়েছে, তা কেউই জানে না। পাঁচ-দশ টাকা বাঁচানোও খুবই কষ্টকর ছিল। একবার সৈয়দ মুস্তাক আলি টুর্নামেন্টে আমি ও ক্রনাল প্রত্যেকে ৭০ হাজার টাকা করে পেয়েছিলাম। আমি দাদাকে বলেছিলাম, এই টাকায় আমরা কিছুদিন চালিয়ে নিতে পারব’।
হার্দিক বলেছেন, ‘দু বছর গাড়ির ইএমআই দিতে পারিনি। তাই গাড়িটি যাতে বাজেয়াপ্ত না হয়ে যায়, সেজন্য সেটি লুকিয়ে রাখতাম। ওই তিন বছর যা কিছু আয় করেছি, তা ওই গাড়ির ইএমআই ও খাবার জন্য’।
২০১৫-তে হার্দিক মুম্বই ইন্ডিয়ান্সে সুযোগ পাওয়ার পর পরিস্থিতি বদলে যায়। হার্দিক জানিয়েছেন, ‘ঈশ্বরের কৃপায় যে বছর আমি মুম্বই ইন্ডিয়ান্সে যোগ দিই, সে বার দল আইপিএল জেতে এবং আমি ৫০ লক্ষ টাকার চেক পাই। সেই টাকা থেকে পুরানো গাড়ির ইএমআই চুকিয়ে নতুন একটা গাড়িও কিনে ফেলি। ভেবে দেখুন, তিন মাস আগেও টাকাপয়সা জন্য কষ্ট করছিলাম, আর তিনমাসের মধ্যেই আমার পকেটে চলে এল ৫০-৬০ লক্ষ টাকা। তখন থেকেই সময়টা বদলে গেল’।