চণ্ডীগড়: হরিয়ানা সরকারের বিভিন্ন দফতরে যে ক্রীড়াবিদরা চাকরি করেন, তাঁদের পুরস্কারমূল্য এবং নানা সংস্থার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডার হিসেবে পাওয়া অর্থের এক-তৃতীয়াংশ জমা দিতে হবে রাজ্যের স্পোর্টস কাউন্সিলে। এমনই নির্দেশ দিয়েছে মনোহরলাল খট্টার সরকার। হরিয়ানার ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ বিভাগের প্রিন্সিপ্যাল সেক্রেটারি অশোক খেমকা যে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন তাতে বলা হয়েছে, ‘ক্রীড়াবিদরা পেশাদারী খেলা বা বাণিজ্যিক এনডোর্সমেন্ট থেকে যে অর্থ উপার্জন করেন, তার এক-তৃতীয়াংশ হরিয়ানা রাজ্য স্পোর্টস কাউন্সিলে জমা রাখতে হবে। রাজ্যের ক্রীড়া উন্নয়নে এই অর্থ খরচ করা হবে। যদি কোনও ক্রীড়াবিদ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আগাম অনুমতি নিয়ে পেশাদারী ক্রীড়া বা বাণিজ্যিক এনডোর্সমেন্টে কর্তব্যরত অবস্থায় থাকেন, তাহলে সেই খাতে তিনি যে অর্থ উপার্জন করবেন, তার গোটাটাই রাজ্য হরিয়ানা রাজ্য স্পোর্টস কাউন্সিলে জমা দিতে হবে।’


হরিয়ানা সরকারের বিভিন্ন দফতরে আন্তর্জাতিক স্তরে সফল হওয়া বেশ কয়েকজন ক্রীড়াবিদ কর্মরত। তাঁদের মধ্যে আছেন বক্সার বিজেন্দ্র সিংহ ও অখিল কুমার। তাঁরা দু’জনেই ডিএসপি। এছাড়া হকি দলের অধিনায়ক সর্দার সিংহ, কুস্তিগীর গীতা ও ববিতা ফোগটও হরিয়ানা পুলিশে কর্মরত। তাঁদের মধ্যে একমাত্র ববিতাই এ বিষয়ে মুখ খুলেছেন। তিনি বলেছেন, ‘সরকারের এই বিজ্ঞপ্তিতে অ্যাথলিটদের প্রস্তুতি ব্যাহত হবে। সরকার কী করে এই ধরনের নির্দেশ দিতে পারে? আমরা যে অর্থ রোজগার করি তার ভিত্তিতে কর দিই। তারপরেও উপার্জনের এক-তৃতীয়াংশ জমা দিতে বলা হচ্ছে। দেশকে পদক এনে দেওয়ার জন্য একজন অ্যাথলিট ও তার পরিবারের লোকজনকে কতটা আত্মত্যাগ করতে হয়, সেটা কি সরকার বোঝে? হরিয়ানা সরকারের এই বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করে নেওয়া উচিত।’

হরিয়ানা সরকারে কর্মরত না হলেও, এই বিজ্ঞপ্তির কড়া সমালোচনা করেছেন অলিম্পিকে পদকজয়ী সুশীল কুমার, যোগেশ্বর দত্তরা। সুশীল বলেছেন, ‘আমি এখনও এই বিজ্ঞপ্তি দেখিনি, সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর পেয়েছি। আমি এটা বলতে পারি, যে অ্যাথলিটরা অলিম্পিকে যোগ দেয়, তারা গরিব পরিবার থেকে উঠে আসে। অ্যাথলিটদের উৎসাহ দেওয়ার জন্য নীতি গ্রহণ করা উচিত সরকারের। বিশ্বের অন্য কোথাও এই ধরনের নীতির কথা শুনিনি। অ্যাথলিটদের উপর এই ধরনের চাপ না দিয়ে তাদের বিনা বাধায় খেলতে দেওয়া উচিত।’

যোগেশ্বর ট্যুইট করে বলেছেন, ‘যে আধিকারিকরা এই ধরনের যুক্তিহীন সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, তাঁদের হাত থেকে ঈশ্বর আমাদের রক্ষা করুন। হরিয়ানার ক্রীড়াক্ষেত্রে তাঁদের অবদান শূন্য। তবে আমি নিশ্চিত, রাজ্যে খেলা ধ্বংস করে দেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁদের বড় অবদান থাকবে। এবার অ্যাথলিটরা অন্য রাজ্যে চলে যাবেন। তার জন্য এই আধিকারিকরাই দায়ী থাকবেন।’