সিডনি: যে কাজ করেছি তা নিয়ে আক্ষেপ থেকে যাবে সারা জীবন। দেশে ফিরে চোখে জল স্টিভ স্মিথের। দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ভারতীয় সময় হিসেবে বৃহষ্পতিবার দুপুরে সিডনি বিমানবন্দরে নামেন বল বিকৃতি কান্ডে এক বছরের জন্য নির্বাসিত হওয়া অসি ক্রিকেটার। স্মিথ অস্ট্রেলিয়ার সমর্থকদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন কেপ টাউন টেস্ট ম্যাচে তাঁর অখেলোয়াড়োচিত ভুলের জন্য।
ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া বল বিকৃতির ঘটনায় তিন দোষী ক্রিকেটার স্মিথ, ডেভিড ওয়ার্নার এবং ক্যামেরন ব্যানক্রফ্টকে সাজা দিয়েছে। স্মিথ ও ওয়ার্নারকে এক বছর এবং ব্যানক্রফ্টকে নয় মাস নির্বাসিত করা হয়েছে। স্মিথের অধিনায়কত্ব আগেই কেড়ে নেওয়া হয়।
সিডনিতে সাংবাদিক বৈঠকে স্মিথ বল বিকৃতির ঘটনার পুরো দায় নিজের ঘাড়েই নিয়েছেন । ২৮ বছরের স্মিথ বলেছেন, অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট দলের অধিনায়ক হিসেবে আমি পুরো দায় নিচ্ছি। আমি খুবই ভুল সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আর এখন তার ফল বুঝতে পারছি।এটা আমার নেতৃত্বের ব্যর্থতা।
ভিড়ে ঠাসা সাংবাদিক বৈঠকে স্মিথ বলেন, 'এই ভুল শোধরানোর জন্য এবং এর ফলে যে ক্ষতি হয়েছে, তা পূরণের জন্য আমি সবকিছু করব, যাতে অন্যরা এই ঘটনা দেখে শিক্ষা নিতে পারে। আশা করছি, এটা একটা বদল ঘটাতে পারব। আমি জানি, আমাকে সারাজীবন অনুতপ্ত থাকতে হবে। আমি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত'।



বল বিকৃতির ঘটনায় ক্রিকেট বিশ্বে রাতারাতি খলনায়ক হয়ে উঠেছেন নির্বাসিত অস্ট্রেলিয় অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ। বর্তমান ক্রিকেটে অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যানের আসন ওই লজ্জাজনক কেলেঙ্কারির ঘটনায় টলে গিয়েছে। পৃথিবীটা কয়েকদিনের মধ্যেই বদলে গিয়েছে, তা বাস্তবের রুক্ষ্ম মাটিতে দাঁড়িয়ে বুঝতে পারছেন স্মিথ। জেন্টলম্যানস গেমে বল বিকৃতির মতো প্রতারণার ঘটনা ক্রিকেট অনুরাগীরা কখনওই মেনে নেন না, তা এখন বোধহয় হাড়ে হাড়ে বুঝেছেন স্মিথ। দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ফেরার সময় জোহানেসবার্গ বিমানবন্দরেই টের পেয়েছিলেন ক্রিকেটপ্রেমীদের ক্ষোভের কথা। সেখানে প্রতারক বলে ছিচ্ছিকারের মুখোমুখি হতে হয়েছিল তাঁকে।
নায়কের সিংহাসন থেকে এভাবে নিচে নেমে যাওয়া যে কতটা লজ্জার, তা বোঝা গেল স্মিথের সাংবাদিক বৈঠকে।
স্মিথ বলেছেন, 'সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমি মর্যাদা ও ক্ষমা ফিরে পাব বলে আশা করছি। এ ধরনের ঘটনা ঘটতে দিয়ে আমি খুব বড় ভুল করেছি। এটা আমার খুব বড় ভুল। আমি খুবই দুঃখিত'।
দলের অন্য কোনও খেলোয়াড়ের ওপর দোষ চাপাতে চাননি তিনি। এই ঘটনায় নিজেকেই দায়ী করেছেন স্মিথ। তিনি বলেছেন,অনেকেই ভুল করে। এ ধরনের ঘটনা ঘটতে দিয়ে তিনি ভুল করেছেন। এ ধরনের ঘটনা এই প্রথম তাঁর ক্ষেত্রে ঘটল। ভবিষ্যতে এর আর পুনরাবৃত্তি হবে না বলেও জানিয়েছেন স্মিথ।
তাঁর এই ঘটনা থেকে অন্যরা শিক্ষা নেবে বলেও আশা প্রকাশ করেছেন স্মিথ। তিনি বলেছেন, 'এ ধরনের জবাবদিহির মতো সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে আশেপাশের মানুষদের কথা অন্তত ভেবে দেখা উচিত। এতে বাবা-মা-ও বেদনাগ্রস্ত হয়ে পড়েন...'..এ কথা বলতে বলতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন স্মিথ।