ম্যাঞ্চেস্টার:  গতকাল রবিবার বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের স্পিনার কুলদীপ যাদবের বোলিং সবার প্রশংসা আদায় করে নিয়েছে। অনেকেই বলছেন, নিজের ছন্দে ফিরেছেন কুলদীপ। কিন্তু এই বক্তব্যের সঙ্গে একেবারেই একমত নন ভারতের এই রিস্ট স্পিনার। কুলদীপ বলেছেন, তিনি তো কখনওই ছন্দ হারাননি।


উল্লেখ্য, গতকালের ম্যাচে রান তাড়া করতে নেমে বাবর আজম ও ফকর জামান ক্রিজে জমে গিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ১০০-র বেশি রান ওঠে। ওই জুটি ভাঙেন কুলদীপ। বাবর ও ফকর-এই দুই ব্যাটসম্যানকে আউট করে ভারতের জয়ে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেন কুলদীপ।

ম্যাচের পর মিক্সড জোনে তাঁর ছন্দে ফেরার কথা নিয়ে বিরক্তি ঝরে পড়ল কুলদীপের গলায়। তিনি বলেন, সবাই আমার ছন্দ নিয়ে কথা বলছেন। কিন্তু আমি ছন্দ হারিয়েছিলাম বলে কখনওই মনে  করিনি।

বাবরের আউট সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে এই তরুণ বাঁহাতি রিস্ট স্পিনার বলেছেন, এটা তাঁর অন্যতম সেরা ডেলিভারি। কুলদীপ বলেছেন, আমি মনে করি, এটি আমার এই টুর্নামেন্টে সবচেয়ে সেরা ডেলিভারি। গত বছর এশিয়া কাপে আমি বাবরকে আউট করেছিলাম। ও স্পিনের বিরুদ্ধে ভালো খেলে।

বাবর ও ফকরের জুটি ভাঙতে পারা নিয়ে কুলদীপের গলায় সন্তুষ্টির আভাস পাওয়া গিয়েছে। তিনি বলেছেন, দলের দিক থেকে দেখতে গেলে, ওরা ওই সময় খুব ভালো খেলছিল। উইকেটে টিকে ওরা স্ট্রাইক রোটেট করছিল। আমরা সবাই জানতে এক্ষেত্রে একটা উইকেট খুবই গুরুত্বপূর্ণ। উইকেট পড়লে ওরা চাপে পড়ে যাবে এবং এরপর ফকরও আউট হয়ে গেল।

যে বলে বাবর আউট হলেন, তা বাবরের কাছে ছিল অফ-ব্রেক। কিন্তু বাঁহাতি রিস্ট স্পিনারের কাছে তা লেগ-ব্রেক।

কুলদীপ বলেছেন, ব্রেকের সময় ফিরে আমি ডেলিভারিটা দেখলাম। বলটা ড্রিফ্ট ও টার্ন করল। যে কোনও স্পিনারেরই এ ধরনের বল করলে ভালো লাগবে। এটা স্বপ্নের ডেলিভারি। এটাকে টেস্ট ম্যাচের পক্ষে একেবারে সঠিক ডেলিভারিও বলা যেতে পারে। শূন্য ব্যাটসম্যানকে বোকা বানিয়ে তাকে ভুল করতে বাধ্য করে এই ডেলিভারি।

কুলদীপের ইকোনমি রেট প্রতি ওভারে পাঁচের নিচে এবং এখনও পর্যন্ত যে বোলিং করেছেন, তাতে তিনি খুশি বলে জানিয়েছেন।

কুলদীপ বলেছেন, এটা কোনও কোনও সময় হয় যে, উইকেট পাওয়া যাচ্ছে না..খেলোয়াড় হিসেবে এটা হতাশাজনক হতে পারে। আমিও প্লেয়ার এবং উইকেট না পেলে আমিও ভাবতে শুরু করি যে, কেন উইকেট পাচ্ছি না।

বিশ্বকাপে এখনও পর্যন্ত তিন ম্যাচে তিন উইকেট পেয়েছেন কুলদীপ। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে উইকেট না পেলেও ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে ব্যাটসম্যানদের বেঁধে রাখতে পেরেছিলেন।

কুলদীপ বলেছেন, শেষ তিনটি ম্যাচেই আমি ভালো বল করেছি। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ব্যাটসম্যানরা আমার বলে মারতে সমস্যায় পড়ছিল আর এটাই যে কোনও স্পিনারের কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ।

সহ অধিনায়ক রোহিত শর্মা বলেছেন, কুলদীপ আত্মবিশ্বাসী বোলার এবং গত কয়েক বছরে ও ম্যাচ উইনারের ভূমিকা পালন করেছে। রোহিতের কথায়. ও সম্ভবত ৪৮ ম্যাচে ৯০ টার মতো উইকেট নিয়েছে। প্রতি ম্যাচে প্রায় দুই উইকেট। আর বেশিরভাগ উইকেটই এসেছে উপমহাদেশের বাইরে।

ওল্ড ট্র্যাফোর্ডের উইকেটে সহায়তা পাবেন বলে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন কুলদীপ। কারণ, শেষবার এখানে টি ২০ ম্যাচে পাঁচ উইকেট পেয়েছিলেন তিনি।