নয়াদিল্লি: করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে রুখা-শুখা চলছে বাইশ গজ। ক্রিকেট মাঠে খেলোয়াড়দের মতোই অনেক সময় নজর কাড়েন আম্পায়াররাও। তবে এবার ক্রিকেট মাঠে নয়, উত্তরপ্রদেশের মুজফফরনগরে নিজের গ্রামে নায়কের মর্যাদা পাচ্ছেন আইসিসি-র এলিট প্যানেলের আম্পায়ার অনিল চৌধুরী। করোনা অতিমারীর মধ্যের গ্রামে দীর্ঘস্থায়ী যোগাযোগ সমস্যার সমাধান হয়েছে তাঁরই হাত ধরে।
করোনা সংক্রমণ দেশে ছড়িয়ে পড়ার ঠিক আগে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার একদিনের সিরিজে অনিল চৌধুরীর আম্পায়ারিংয়ের দায়িত্ব সামলানোর কথা ছিল। সেই সিরিজ বাতিল হয়ে যায়। এই অবসরে অনিল উত্তরপ্রদেশে তাঁর গ্রাম ড্যাংরোলে গিয়ে সপ্তাহ খানেক কাটিয়ে আসার পরিকল্পনা করেন।
কিন্তু গ্রামে আসার পর জারি হয় দেশজুড়ে লকডাউন। সেজন্য গ্রামের বাড়িতেই আটকে পড়তে হয় অনিলকে। কিন্তু সবচেয়ে সমস্যায় পড়েন তিনি মোবাইল নেটওয়ার্ক কভারেজ নিয়ে। গ্রামে নেটওয়ার্ক প্রায় ছিল না বললেই চলে। এর ফলে চরম সমস্যায় পড়েন আইসিসি প্যানেলের ৪২ বছরের আম্পায়ার। আইসিসি-র অনলাইন প্রোগ্রাম থেকে শুরু করে দিল্লিতে প্রিয়জনদের সঙ্গে কথাবার্তা বলার ক্ষেত্রে চরম সমস্যায় পড়তে হয় তাঁকে। কখনও আধ কিলোমিটার দূরে ধানের ক্ষেতে, কখনও টিউব ওয়েলের সামনে গাছে চড়ে কিছুটা নেটওয়ার্ক পাওয়ার চেষ্টা করতেন। ভাগ্য ভালো থাকলে কখনও সখনও নেটওয়ার্ক মিলত।

তবে সেই দুঃসহ অভিজ্ঞতার অবসান হয়েছে। একটি টেলিকম কোম্পানি অনিল চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করে গ্রামে মোবাইল টাওয়ার বসানোর বন্দোবস্ত করেন।

অনিল চৌধুরী বলেছেন, এই উদ্যোগ গ্রামের পক্ষে এতটা লাভজনক হবে বলে তিনি আশা করেননি। জলন্ধরের এক অধ্যাপক এখন ক্লাস নিতে পারছেন। পড়ুয়াতে এতে খুশি। কারণ, অনলাইন ক্লাসের জন্য তাদের মাঠে নিয়ে মশার কামড় খেতে হচ্ছে না।
গ্রামের এক বাসিন্দার ছোটখাটো ব্যাঙ্ক লেনদেনের কেন্দ্র রয়েছে। টাকাপয়সা হস্তান্তর করতে গিয়ে তাঁকে ব্যাপক সমস্যার মুখে পড়তে হত। নতুন টাওয়ার বসার পর তিনি এখন যারপরনাই খুশি। তিনি এজন্য অনিল চৌধুরীকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।
এখন তো গ্রামবাসীরা অন্যান্য সমস্যা নিয়েও অনিল চৌধুরীর দ্বারস্থ হচ্ছেন। এর জবাবে অনিল বলেছেন, তিনি তো শুধু একজন আম্পায়ার।