অ্যাডিলেড: ভারতের বিরুদ্ধে শেষ পর্যন্ত লড়াই করেও ম্যাচ জিততে পারল না বাংলাদেশ। কাজে দিল না লিটন দাসের (Litton Das) ৬০ রানের দুরন্ত ইনিংস। ৫ রানে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে জয় পেল ভারত। বল হাতে ভারতের হয়ে অর্শদীপ সিংহ ও হার্দিক পাণ্ড্য দুইটি করে উইকেট নেন। 


লিটন, নুরুলের লড়াই


১৮৫ রান তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশের লিটন দাস আক্রমণাত্মক মেজাজে ব্যাটিং করা শুরু করেন। মাত্র ২১ বলেই অর্ধশতরান পূরণ করে ফেলেন বাংলাদেশি ব্যাটার। পরে বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে বাংলাদেশের লক্ষ্য পরিবর্তিত হয়। ১৬ ওভারে টাইগারদের জয়ের জন্য ১৫১ রানের প্রয়োজন ছিল। বৃষ্টিতে ম্যাচ থেমে থাকলেও, তা লিটনের ওপর কোনওরকম প্রভাব ফেলেনি। দারুণ ছন্দেই দেখাচ্ছিল বাংলাদেশ তারকাকে। লিটনের ইনিংসও ক্রমেই চাপ বাড়াচ্ছিল ভারতের। তবে ম্যাচের অষ্টম ওভারেই দুরন্ত ছন্দে দেখানো লিটনকে সাজঘরে ফেরান কেএল রাহুল (KL Rahul)। কভার থেকে ডাইরেক্ট থ্রোয়ে লিটনকে আউট করেন রাহুল।


৬০ রানে লিটন রান আউট হওয়ার পর ক্রিজে বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে পারেননি আরেক ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্তও। তিনি ২১ রানেই সাজঘরে ফেরেন। বাংলাদেশকে ম্যাচ জেতানোর দায়িত্ব ফের একবার শাকিবের কাঁধেই এসে পড়ে। তবে অর্শদীপ সিংহ ১২তম ওভারে বল হাতে পেয়েই শাকিব (১৩) ও আফিফ (৩) উভয়কেই ফেরান। পরের ওভারে ফের জোড়া সাফল্য। হার্দিক ইয়াসির আলি (১) ও মোসাদ্দেক হোসেনকে (৬) সাজঘরে ফিরিয়ে বাংলাদেশের মিডল অর্ডারের কোমর ভেঙে দেন। ১০৮ রানেই ছয় উইকেট হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। তবে তা সত্ত্বেও হার মানেনি টাইগাররা। নুরুল হাসান ২৫ ও তাসকিন আমেদ ১২ শেষ পর্যন্ত লড়াই চালান। কিন্তু শেষমেশ ১৪৫ রানেই থামে বাংলাদেশের ইনিংস। পাঁচ রানে জয় পায় ভারত। 


প্রথম ইনিংস


অ্যাডিলেড বরাবরই বিরাটের পয়মন্ত মাঠ। এই মাঠে দারুণ রেকর্ড কোহলির। সেই অ্যাডিলেডে ঝোড়ো হাফসেঞ্চুরি করলেন কিং কোহলি। শেষ পর্যন্ত ৪৪ বলে ৬৪ রানে অপরাজিত রইলেন কোহলি। অন্যদিকে ৩২ বলে ৫০ রান করে সমালোচনার জবাব দিলেন রাহুল। 


টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বাংলাদেশের অধিনায়ক শাকিব আল হাসান। অ্যাডিলেডে ভারত-বাংলাদেশ ম্যাচে বৃষ্টির আশঙ্কা রয়েছে। আকাশের মুখ ভার। বৃষ্টি নামলে ডাকওয়ার্থ লুইস নিয়ম গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়াবে। তাই টস জিতলে যে কোনও দলই প্রথমে ফিল্ডিং করে নিতে চাইতো। যাতে পরে ব্যাট করলে অঙ্ক কষে রান তাড়া করা যায়। তার ওপর মেঘলা আবহাওয়ায় পেসারদের সুবিধা পাওয়ার কথা। তাই ফিল্ডিং নিতে দুবার ভাবেননি শাকিব। ভারতের ইনিংসের শুরুতেই ধাক্কা লাগে। একবার ক্যাচ দিয়ে বেঁচেছিলেন। কিন্তু সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি রোহিত শর্মা। মাত্র ২ রান করে ফেরেন তিনি।


তবে ইনিংসের হাল ধরে নেন রাহুল ও কোহলি। এই ম্যাচের আগে চলতি বিশ্বকাপে তিন ইনিংসে রাহুলের মোট রান ছিল ২২। যথাক্রমে ৪, ৯ ও ৯ রান করেছিলেন তিনি। তাঁকে বাদ দিয়ে ঋষভ পন্থকে খেলানোর দাবি উঠেছিল। কিন্তু রাহুলে আস্থা দেখিয়েছে ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট। রাহুল হাফসেঞ্চুরি করে তার মর্যাদাও দেন। রাহুল ফেরার পর ব্যাটে ঝড় তোলেন সূর্যকুমার যাদব। যাঁকে অনেকে ভারতীয় দলের গেমচেঞ্জার বলছেন। মাত্র ১৬ বলে ৩০ রান করেন সূর্য। অন্যদিকে হাফসেঞ্চুরি করেন কোহলি। হার্দিক পাণ্ড্য (৫), দীনেশ কার্তিক (৭), অক্ষর পটেল (৭) রান পাননি। বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে ৪৭ রানে তিন উইকেট হাসান মাহমুদের। ভারত ছয় উইকেটের বিনিময়ে ১৮৪ রান তোলে। 


আরও পড়ুন: রাহুলের অনবদ্য থ্রোয়ে লিটনের রান আউটেই কি বদলে গেল ম্যাচের রং?