নয়াদিল্লি: এক নির্বাচকের সঙ্গে কথা প্রসঙ্গে সচিন তেন্ডুলকরের শতরানের বিষয়টি উল্লেখ করেছিলেন। সে কথা পছন্দ হয়নি ওই নির্বাচকের। ইউটিউবে প্রাক্তন ক্রিকেটার আকাশ চোপড়ার শো ‘আকাশ বাণী’-তে এমনই জানালেন লেগ-স্পিনার পীযূষ চাওলা।

এই শোয়ে চাওলা বলেন, ‘আমার মনে আছে, একবার এক নির্বাচকের সঙ্গে কথা হয়েছিল। তিনি আমাকে বলেছিলেন, আমি অধিকাংশ উইকেটই পাই গুগলির সাহায্যে। আমি আবার কোনও কথা মনে হলে সেটা না বলে থাকতে পারি না। আমি সঙ্গে সঙ্গে জবাব দিই। তাই অনেকেই আমাকে পছন্দ করেন না। আমি নির্বাচকদের বলেছিলাম, সচিন পাজি শতরান করার সময় যদি স্ট্রেট ড্রাইভে ৬০ রান করেন, তাহলে কি তাঁর শতরানের মূল্য নেই? আমার মনে হয়, নির্বাচকদের সে কথা ভাল লাগেনি। তবে দিনের শেষে উইকেট পেলেই হল। সেটা যে ভাবেই হোক না কেন।’

নিজের আন্তর্জাতিক কেরিয়ার প্রসঙ্গে চাওলা আরও বলেন, ‘সত্যি বলছি, প্রথম দু’টি টেস্ট ম্যাচে (২০০৬ সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে এবং ২০০৮ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে) আমি খুব একটা ভাল খেলতে পারিনি। আমি সেটা জানতাম। তাই আমার কোনও আফশোস নেই। তৃতীয় টেস্টে (২০১২ সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে) আমি ভাল পারফরম্যান্স দেখাই। তাই ফের বাদ পড়ে খারাপ লেগেছিল। কারণ, কেন বাদ দেওয়া হল, সেটা আমাকে জানানো হয়নি। আমি তখন হতাশ হয়েছিলাম। কিন্তু নিজের কাজটা করে যাওয়া ছাড়া আর কিছু করার ছিল না। তবে সেই ঘটনা নিয়ে খুব বেশি ভাবিনি। না হলে খেলা উপভোগ করতে পারতাম না।’

৩১ বছর বয়সি এই ক্রিকেটার ২০০৭ সালের টি-২০ বিশ্বকাপ ও ২০১১ সালে একদিনের বিশ্বকাপ জয়ী ভারতীয় দলের সদস্য ছিলেন। তবে তিনি এই দুই প্রতিযোগিতাতেই খুব বেশি খেলার সুযোগ পাননি। এ বিষয়ে এই স্পিনার বলেছেন, ‘অনিল ভাই (কুম্বলে) ও ভাজ্জি পার (হরভজন সিংহ) সঙ্গে আমার তুলনা হয় না। তবে আমার কোনওদিনই মনে হয়নি, ভুল সময়ে জন্মেছি। আমি দলে আসার পর অনিল ভাই ও ভাজ্জি পা বেশিদিন খেলেননি। অনিল ভাই অবসর নেন এবং ভাজ্জি পা কখনও দলে থাকছিলেন, আবার কখনও দলের বাইরে থাকছিলেন। আমার মনে হয়, একটু বেশিই আগে খেলার সুযোগ পেয়েছিলাম। তবে ঠিক সময়েই আমার জন্ম হয়েছে। আমি যখন ক্রিকেট খেলা শুরু করি, তখন জানতামই না কীভাবে কেরিয়ার নিয়ে পরিকল্পনা করতে হয়। আমি সবে রঞ্জি ট্রফিতে এক মরসুম খেলেছিলাম। সাতটি ম্যাচ খেলে ৩৫-৩৬টি উইকেট নিয়েছিলাম। আমি তখন যা করছিলাম, সেটাই ঠিকঠাক হচ্ছিল। সেই সময় কোনও দিকেই নজর দিইনি। খারাপ সময় আসার পরেই শিক্ষা শুরু হয়। আমি প্রতিটি রঞ্জি ম্যাচেই উইকেট নিচ্ছিলাম। তাই কীভাবে পরিকল্পনা করতে হবে, সেটা ভাবিনি। শুধু বোলিং করছিলাম আর উইকেট নিচ্ছিলাম। কিন্তু আন্তর্জাতিক স্তরে ব্যাটসম্যানরা অন্য মানের। সেই সময় উইকেট নেওয়ার জন্য কী পরিকল্পনা করতে হবে, সেটা আমি বুঝতে পারিনি।’

এখনও পর্যন্ত ভারতের হয়ে তিনটি টেস্ট ও ২৫টি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছেন চাওলা। তিনি দীর্ঘদিন জাতীয় দলের বাইরে। ভবিষ্যতে আর সুযোগ পাবেন কি না, সে বিষয়ে সংশয় রয়েছে।