কলকাতা: সাম্প্রতিক অতীতেও মাঠে দুজনকে দেখে মনে হয়েছে, জাতীয় দলের স্বার্থে হয়তো ব্যক্তিগত সংঘাত ভুলেছেন। প্রতিপক্ষের উইকেট পড়লে একসঙ্গে সেলিব্রেট করেছেন। দল জিতলে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে জয়োধ্বনি দিয়েছেন।


কিন্তু বিরাট কোহলি (Virat Kohli) ও রোহিত শর্মার (Rohit Sharma) মধ্যে সম্পর্কের শৈত্য কি আদৌ কেটেছে? নাকি বরফ আগের চেয়েও বেশি জমে চির বাড়িয়েছে পারস্পরিক সম্পর্কের ফাটলের?


ইংল্যান্ড সফররত ভারতীয় শিবিরে (Team India) খোঁজ নিয়ে অন্তত ইতিবাচক কিছু তথ্য উঠে আসছে না। বরং যা জানা যাচ্ছে, তাতে হিন্দি গানের জনপ্রিয় কলি মনে পড়ে যেতে পারে। কিতনে দূর, কিতনে পাস...


মাঠে কাছাকাছি দেখালেও মাঠের বাইরে কোহলি ও রোহিতের কথাবার্তা নাকি কার্যত বন্ধ। খুব প্রয়োজন না পড়লে একে অপরের সঙ্গে সেভাবে কথা বলছেন না। একে অপরের সঙ্গে আড্ডা দেওয়া, হাসিঠাট্টা করা তো রীতিমতো অভাবনীয় হয়ে পড়েছে যেন।


ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে পাঁচ ম্যাচের সিরিজ খেলতে গতবছরই বিলেতে পাড়ি দিয়েছিল টিম ইন্ডিয়া। সেই দলের অধিনায়ক ছিলেন বিরাট। কোচ ছিলেন রবি শাস্ত্রী। করোনার ধাক্কায় টেস্ট সিরিজ অসমাপ্ত রেখে ফিরেছিল ভারতীয় দল। শেষ টেস্ট ম্যাচ খেলতে ফের ইংল্যান্ডে গিয়েছে ভারতীয় দল। তবে এবারের ছবিটা সম্পূর্ণ আলাদা। দলের অধিনায়ক রোহিত। বিরাট-যুগের শেষে বিতর্কের দাবানলের মধ্যে যিনি জাতীয় দলের দায়িত্ব নিয়েছেন। পাল্টে গিয়েছে কোচও। প্রশিক্ষকের দায়িত্বে এখন রাহুল দ্রাবিড়।


ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভারতের পঞ্চম তথা সিরিজের শেষ টেস্টটি হবে বার্মিংহ্যামে। ১ জুলাই থেকে শুরু হবে ম্যাচ। তার আগে লেস্টারশায়ারের বিরুদ্ধে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে ভারত। যে ম্যাচ খেলতে ভারতীয় ক্রিকেটারেরা এখন রয়েছেন লেস্টারে। সেখানে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, মাঠের বাইরে তো বটেই, এমনকী, মাঠেও কোহলি ও রোহিত, দুই মহাতারকা খুব একটা কথা বলছেন না। সোমবার প্র্যাক্টিসের জন্য স্টেডিয়ামে ঢোকার সময়ও দুজনকে কার্যত দুই প্রান্তে দেখা গিয়েছে। রোহিত যেখানে টিমবাস থেকে নেমে রবীন্দ্র জাডেজা, যশপ্রীত বুমরা, মহম্মদ শামিদের সঙ্গে হাসিঠাট্টা করতে করতে মাঠে ঢুকেছেন, সেখানে কোহলি নাকি ছিলেন সকলের পিছনে। তাঁর কানে হেডফোন। চোখে সানগ্লাস। কিছুটা যেন নিঃসঙ্গ দেখিয়েছে প্রাক্তন অধিনায়ককে।


তবে এই দূরত্ব মাঠের পারফরম্যান্সে প্রভাব ফেলবে না বলেই দাবি করছেন ভারতীয় শিবিরের হালহকিকত জানা অনেকে। বলা হচ্ছে, টেস্ট দলের নেতৃত্ব চালিয়ে যেতে চেয়েছিলেন কোহলি। কিন্তু কার্যত বাধ্য হয়েছিলেন সরে দাঁড়াতে। তাঁর জায়গায় দায়িত্ব পেয়েছেন রোহিত। ফলে ভেতর ভেতর কোহলির কিছুটা মুষড়ে পড়া স্বাভাবিক। বলা হচ্ছে, হয়তো তারই প্রতিফলন পড়ছে কোহলির আচরণে। নিজেকে একটু যেন গুটিয়ে রেখেছেন।


পাশাপাশি এ-ও বলা হচ্ছে যে, মাঠে নামলে কোহলি অন্য চেহারা ধারণ করবেন। তখন তাঁর মনোভাবে নেতিবাচক কিছু থাকবে না বলেও ভারতীয় শিবিরের কেউ কেউ বলছেন। বরং একশো শতাংশ ছাপিয়ে গিয়েও দলের জন্য কিছু করতে প্রস্তুত থাকবেন কোহলি।


ভক্তরাও ইংল্যান্ডে কোহলিকে স্বমেজাজেই দেখতে চাইছেন। কিন্তু জল্পনা থামছে কি?


আরও পড়ুন: কোচিংয়ে আসছেন যুবরাজ! নিখরচায় শেখার সুযোগ পাবে উঠতি প্রতিভাবানরা