ম্যাঞ্চেস্টার: প্রস্তুতি ম্যাচের পর বিশ্বকাপে এই প্রথম নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হচ্ছে ভারত। গত ২৫ মে দুই দলের প্রস্তুতি ম্যাচ হয়েছিল লন্ডনে। চলতি টুর্নামেন্টে এখনও পর্যন্ত ফেভারিটের মতো খেলেছে ভারত এবং দাপটের সঙ্গে ম্যাচ জিতেছে। কিন্তু টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে যথেষ্ট সতর্ক থাকতে হবে ভারতকে। কেন উইলিয়ামসনের দলকে হারাতে নিজেদের সেরা খেলা খেলতে হবে বিরাট কোহলির দলকে। প্রস্তুতি ম্যাচে কিউই ব্রিগেড কিন্তু ভারতকে হারিয়ে দিয়েছিল। এবার মঙ্গলবার ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে দুই দল বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে পরস্পরের মুখোমুখি।


ভারত এখনও পর্যন্ত বিশ্বকাপে একটি ম্যাচই হেরেছে। বার্মিংহ্যামে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে তিনশো-র বেশি রান তাড়া করতে জিততে পারেনি ভারত। কিন্তু ভারত যে রকম ছন্দে রয়েছে তাতে নিউজিল্যান্ডকে সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপাতে হবে।
সেমিফাইনালের উইকেট ব্যাটসম্যানদের সহায়ক হবে কিনা, সেই প্রশ্নও রয়েছে। গ্রুপ পর্বে ভারত ও ইংল্যান্ডের ম্যাচের সময় আইসিসি-র সিইও ডেভ রিচার্ডসন ভারসাম্য রাখার কথা বলেছিলেন। এরসঙ্গে থাকছে বৃষ্টির আশঙ্কা। মঙ্গলবার বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। মাঝেমধ্যে বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকলেও এ ধরনের পরিস্থিতিতে ট্রেন্ট বোল্ট, লকি ফার্গুসন ও টিম সাউদিকে নিয়ে গড়া কিউই বোলিং লাইনআপ বিধ্বংসী হয়ে উঠতে পারে। এক্ষেত্রে ফার্গুসনের ফিটনেস গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। তাঁকে খেলানো যাবে বলে আত্মবিশ্বাসী ব্ল্যাক ক্যাপস শিবির।
অন্যদিকে, সেমিফাইনালে মেঘমুক্ত আকাশে পছন্দ করবে ভারতীয় শিবির। মেঘলা পরিবেশে নিউজিল্যান্ডের বোলিং অ্যাটাক সম্পূর্ণ ভিন্ন হয়ে যায়। কেননা, কিউই শিবিরে রয়েছে ভালো মানেই সুইং বোলার।
ভারতীয় অধিনায়কের আরও একটি চিন্তার কারণ, মিডল অর্ডার। যদিও টিম ম্যানেজমেন্ট মিডল অর্ডার নিয়ে কোনও রকম উদ্বেগকে পাত্তা দিতে নারাজ। কিন্তু বাস্তবে ভারতীয় দলের হয়ে সবচেয়ে বেশি রান প্রথম তিন ব্যাটসম্যান-রোহিত শর্মা, কোহলি ও কে এল রাহুলের। আট ম্যাচে পাঁচটি সেঞ্চুরি সহ রোহিতের রান ৬৪৭। পাঁচটি হাফসেঞ্চুরি সহ কোহলির রান ৪২২। তৃতীয় স্থানে রাহুল একটি সেঞ্চুরি ও দুটি হাফসেঞ্চুরি সহ করেছেন ৩৬০ রান। সবচেয়ে এই তালিকায় চতুর্থ স্থানে রয়েছেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। তাঁর মোট রান ২২৩। সবমিলিয়ে মিডল অর্ডারকে দৃশ্যতই চিন্তা রয়েছে। কিন্তু টিম ম্যানেজমেন্ট তেমন কিছু ভাবছে না।
জসপ্রিত বুমরাহ, মহম্মদ শামি, ভুবনেশ্বর কুমাপ ও স্পিনারদের নিয়ে ভারতের বোলিং আক্রমণ যথেষ্টই শক্তিশালী। কিন্তু মাঝের পর্বে ব্যাটিংয়েও নির্ভরতার প্রয়োজন। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে যুজবেন্দ্র চাহলকে বিশ্রাম দিয়ে কুলদীপ ও রবীন্দ্র জাডেজাকে নিয়ে নেমেছিল ভারত। সেমিফাইনালেও ওই দুই স্পিনারকেই দলে রাখা হবে না, চাহলকে ফেরানো হবে, তা নিয়ে আগ্রহ রয়েছে।
তবে সব কিছুই উইকেট ও পরিবেশের ওপর নির্ভর করছে। আকাশে মেঘ থাকলে ভারত একজন স্পিনার নিয়ে খেলতে পারে। সেক্ষেত্রে বাড়তি আর একজন ব্যাটসম্যান খেলানো হতে পারে।

এরমধ্যে সবচেয়ে বড় ব্যাপার আবহাওয়ার পূর্বাভাস। বৃষ্টির আশঙ্কা থাকছে। ফলে মঙ্গলবার ভারত-নিউজিল্যান্ড প্রথম সেমিফাইনাল হওয়া নিয়ে জোর সংশয় রয়েছে। স্থানীয় আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস-মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টা থেকে বৃষ্টি শুরু হওয়ার সম্ভাবণা রয়েছে। ম্যাচ শুরু স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ১০টা থেকে। বৃষ্টি হতে পারে দুপুর ১ পর্যন্ত। এরপরেও আকাশ মেঘলা থাকবে।
আকাশের অবস্থা দেখে ম্যাঞ্চেস্টারের সেমিফাইনালে গুরুত্বপূর্ন হয়ে উঠেছে টস। কারন, ম্যাচ যদি বৃষ্টিতে বিঘ্নিত হয়, তবে তার ফল নির্ধারণ হতে পারে ডাকওয়ার্থ-লুইস নিয়মে। তাই দুইদলই চাইবে টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করতে।সেমিফাইনালের নিয়ম যা, তাতে বৃষ্টিতে খেলাই না হলে লাভ ভারতের। যদি মঙ্গলবার এবং রিজার্ভ ডে বুধবারেও বৃষ্টিতে ম্যাচ না হয়, তবে লাভ ভারতের। সেক্ষেত্রে সেমিফাইনালে একটি বলও না হলে. লিগে বেশি পয়েন্ট থাকায়, ফাইনালে চলে যাবেন বিরাটরা।