আমদাবাদ: গত এশিয়া কাপে (Asia Cup) ২ বার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে খেলতে নেমেছিল ভারত (India Cricket Team)। প্রথম ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেস্তে গেলেও দ্বিতীয় ম্যাচটিতে বড় ব্যবধানে জয় ছিনিয়ে নেয় রোহিত বাহিনী। বিশ্বকাপের মঞ্চেও ২ দলের সাক্ষাতে এখনও পর্যন্ত খাতা খুলতে পারেনি বাবর আজমের দল। কীভাবে এসেছিল ওই সাতটি জয়। দেখে নেওয়া যাক -


১. ১৯৯২ সালে বিশ্বকাপের মঞ্চে প্রথমবার দু দল একে অপরের মুখোমুখি হয়। সেবার ৪৩ রানে জয় পেয়েছিল টিম ইন্ডিয়া। নিজের বিশ্বকাপ কেরিয়ারে ১৫টি অর্ধশতরানের প্রথম অর্ধশতরানটি হাঁকিয়েছিলেন সচিন তেন্ডুলকর। প্রথমে ব্যাটিং করতে নামে ভারত। সচিন ৬২ বলে অপরাজিত ৫৪ রান করেন। বল হাতেও এক উইকেট নেন। ভারত ৪৯ ওভারে বোর্ডে ২১৬/৭ তুলতে পারে। জবাবে ব্যাটিং করতে নেমে পাকিস্তান ৪৮.১ ওভারে ১৭৩ রানে অল আউট হয়ে যায়। ভারতের মনোজ প্রভাকর ২২ রানের বিনিময়ে ২ উইকেট নেন। কপিল দেব ৩০ রান খরচ করে ২ উইকেট নেন ও শ্রীনাথ ৩৭ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন। 


২. ১৯৯৬ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের সঙ্গে খেলতে নেমে ৩৯ রানে জেতে ভারতীয় দল। প্রথমে ব্যাট করে ভারত ৮ উইকেট হারিয়ে ২৮৭ রান বোর্ডে তুলে নেয়। নভজ্যোৎ সিং সিঁধু ৯৩ ও অজয় জাডেজা ৪৫ রান করেন। পাকিস্তানের মুস্তাক আহমেদ ও ওয়াকার ইউনিস ২ টো করে উইকেট নেন। জবাবে রান তাড়া করতে নেমে ভেঙ্কটেশ প্রসাদ ও অনিল কুম্বলের বোলিংয়ের সামনে মাথা নত করে পাক ব্যাটিং লাইন আপ। প্রসাদ ৪৫ রানের বিনিময়ে ৩ উইকেট নেন ও কুম্বলে ৪৮ রানের বিনিময়ে ৩ উইকেট নেন। 


৩. ১৯৯৯ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ৪৭ রানে জয় ছিনিয়ে নেয় ভারত। প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে সচিন তেন্ডুলকর ৬৫ বলে ৪৫ রান করেন। রাহুল দ্রাবিড় ৬১ রান করেন। অধিনায়ক মহম্মদ আজহারউদ্দিন ৫৯ রানের ইনিংস খেলেন। ভারত নির্ধারিত ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ২২৭ রান বোর্ডে তুলে নেয়। জবাবে পাকিস্তান ব্যাটিং করতে এলে এবারও ঘাতক হয়ে ওঠেন ভেঙ্কটেশ প্রসাদ। তিনি মাত্র ২৭ রান খরচ করে ৫ উইকেট তুলে নেন। ক্রমশি বিপজ্জ্বনক হয়ে ওঠা সৈয়দ আনােয়ার (৩৬), ইনজামাম উল হক (৪১) ও মঈন খান (৩৪)-কে আউট করেন তিনি। ভারতীয় বোলারদের মধ্যে জাভাগান শ্রীনাথও সেদিন ৩৭ রান খরচ করে ৩ উইকেট তুলে নিয়েছিলেন।


৪. ২০০৩ বিশ্বকাপ, সেঞ্চুরিয়নে হওয়া সেই ম্যাচে ভারত ৬ উইকেটে জয় ছিনিয়ে নিয়েছিল। সচিন তেন্ডুলকরের ওয়ান ডে কেরিয়ারের অন্যতম সেরা ইনিংস খেলেছিলেন সেদিন। সেদিন প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে সৈয়দ আনোয়ার শতরান হাঁকান। পাকিস্তান ৭ উইকেট হারিয়ে ২৭৩ রান বাের্ড তুলে নেয়। ভারতীয় বোলারদের মধ্যে জাহির খান ৪৬ রানের বিনিময়ে ২ উইকেট নেন ও আশিস নেহরা ৭৪ রান খরচ করে ২ উইকেট নেন। রান তাড়া করতে নেমে দ্রুত সহবাগ ও সৌরভের উইকেট হারায় ভারত। এরপরই আসেন সচিন তেন্ডুলকরের ৭৫ বলে বিখ্যাত ৯৮ রানের ইনিংস। শোয়েব আখতারকে পয়েন্টের ওপর দিয়ে ছক্কা হাঁকিয়েছিলেন সচিন। যুবরাজ সিংহ সেই ম্যাচে অপরাজিত ৫০ করেছিলেন। এছাড়াও রাহুল দ্রাবিড় অপরাজিত ৪৪ রানের ইনিংস খেলেন। 


৫. ২০১১ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মুখােমুখি হয় ভারত। সেবার ২৯ রানে জয় ছিনিয়ে নিয়েছিল মহেন্দ্র সিংহ ধোনির দল। সৈয়দ আজমলের বলে বিকর্তিক আউট হয়েছিল ৮৫ রানের ইনিংস খেলে। সেদিন ভারত প্রথমে ব্যাটিং করে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৬০ রান বোর্ডে তুলে নেয়। রান তাড়া করতে নেমে ৫৬ রানের ইনিংস খেলেন মিসবা উল হক। এছাড়া আর কোনও ব্যাটারই ভারতীয় বোলিং বাহিনীর সামনে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেননি। জাহির খান, আশিস নেহরা, মুনাফ পটেল, হরভজন সিংহদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের ওপর ভর করে ম্যাচে জয় ছিনিয়ে নেয় ভারত। ১৯৮৩ সালের পর প্রথমবার বিশ্বকাপের ফাইনালে পৌঁছয় ভারত। 


৬. ২০১৫ বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ৭৬ রানে জয় ছিনিয়ে নিয়েছিল ভারত। সেই ম্যাচে ১০৭ রানের ঝকঝকে শতরান হাঁকিয়েছিলেন বিরাট কােহলি। সুরেশ রায়না ৭৪ রান ও শিখর ধবন ৭৩ রান করেছিলেন। প্রথমে ব্যাটিং করে ৭ উইকেট হারিয়ে ৩০০ বোর্ডে তোলে ভারত। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ২২৪ রানে অল আউট হয়ে যায় পাকিস্তান। একমাত্র লড়াই করেন অধিনায়ক মিসবা। তিনি ৮৪ বলে ৭৬ রান করেন। ৪ উইকেট নেন মহম্মদ শামি। 


৭. শেষ বিশ্বকাপেও ইংল্যান্ডের মাটিতে পাকিস্তানকে হারিয়ে দিয়েছিল ভারতীয় দল। বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে ৮৯ রানে জয় ছিনিয়ে নেয় টিম ইন্ডিয়া। বিরাটের নেতৃত্বাধীন দল ম্যাঞ্চেস্টারে প্রথমে ব্য়াটিং করতে নেমে ৫০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ৩৩৬ রান বোর্ডে তোলে। ঝকঝকে ১৪০ রানের ইনিংস খেলেছিলেন হিটম্যান। বিরাট কোহলি ৭৭ ও কে এল রাহুল ৫৭ রানের ইনিংস খেলেন। জবাবে ৬ উইকেট হারিয়ে মাত্র ২১২ রানই তুলতে পারে পাকিস্তান। পরে ডার্কওয়ার্থ লুইস নিয়মে জয় ছিনিয়ে নেয় বাবর আজমদের।