রাঁচি: দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে দুরন্ত ভঙ্গিমায় দ্বিতীয় ওয়ান ডে ম্যাচ (IND vs SA 2nd ODI) জিতে তিন ম্যাচের সিরিজে সমতায় ফিরল ভারতীয় দল। ২৭৯ রান তাড়া করতে নেমে, ২৫ বল বাকি থাকতেই সাত উইকেটে ম্যাচ জিতে নিল ভারতীয় দল। সৌজন্যে মূলত ঈশান কিষাণ (Ishan Kishan) ও শ্রেয়স আইয়ার (Shreyas Iyer)। ৫০ রানের মধ্যেই দুই ওপেনারকে হারানোর পর, ঈশান ও শ্রেয়স তৃতীয় উইকেটে ১৬১ রানের পার্টনারশিপ গড়েন। এই পার্টনারশিপই ভারতের জয় সুনিশ্চিত করে দেয়। ঈশান নিজের শতরান হাতছাড়া করলেও, শ্রেয়স কিন্তু তা করেননি।
শ্রেয়স-ঈশানের পার্টনারশিপ
বড় রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা খুব একটা ভাল করেনি ভারতীয় দল। নাগাড়ে দ্বিতীয় ম্যাচে ওয়েন পার্নেলের বলে আউট হন শিখর ধবন (১৩)। শুভমন গিলকে এই ম্যাচে দারুণ ছন্দে দেখাচ্ছিল। তবে কাগিসো রাবাডার অনবদ্য কট অ্যান্ড বোলে ২৮ রানেই সাজঘরে ফিরতে হয় তাঁকেও। এরপরেই ভারতীয় ইনিংসের হাল ধরেন শ্রেয়স ও ঈশান। গত ম্যাচে রান পাননি ঈশান। কিন্তু নিজের ঘরের মাঠে বড় রান করার সুযোগ হাতছাড়া করেননি তিনি। শ্রেয়স তো দুর্দান্ত ফর্মে ছিলেনই। ঈশান শুরুর দিকে আক্রমণ করায় শ্রেয়স একটু সামলেই খেলছিলেন।
দুইজনে মিলেই বিশেষ করে দক্ষিণ আফ্রিকার স্পিনারদের বিরুদ্ধে দুরন্ত ভঙ্গিমায় ব্যাট করে রানের গতি বাড়ান। ঈশান অবশ্য অল্পের জন্য নিজের শতরান হাতছাড়া করে ৯৩ রানে আউট হন। তবে শ্রেয়স নিজের ইনিংস চালিয়ে যান। রাবাডার বলে চার মেরে ১০৩ বলে শতরানও পূরণ করেন। সঞ্জু স্যামসনও ভাল ছন্দে ছিলেন। তিনি শ্রেয়সকে সঙ্গ দেন। শেষ পর্যন্ত টিকে থেকে শ্রেয়স এবং সঞ্জুই ভারতের জয় সুনিশ্চিত করেন। সঞ্জু ৩০ রানে ও শ্রেয়স ১১৩ রানে অপরাজিত থাকেন। এটি শ্রেয়সের কেরিয়ারের দ্বিতীয় শতরান। ভারত এই ম্যাচ জেতায় নয়া দিল্লিতে শেষ ম্য়াচে সিরিজের ভাগ্য নির্ধারিত হবে।
প্রথম ইনিংস
এদিন তেম্বা বাভুমা অসুস্থতার কারণে মাঠে নামতে পারেননি। তাঁর বদলে দক্ষিণ আফ্রিকা দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার দায়ভার সামলান কেশব মহারাজ। টসে জিতে রাঁচির ময়দানে প্রথমে ব্যাটিং করারই সিদ্ধান্ত নেন মহারাজ। প্রোটিয়া দলে গত ম্যাচের একাদশ থেকে তিন ও ভারতীয় দলে দুই পরিবর্তন করা হয়। জাতীয় দলের হয়ে অভিষেক ঘটান বাংলার শাহবাজ আহমেদ (Shahbaz Ahmed)। ভারতীয় দলের শাহবাজের অভিষেকের পাশাপাশি দলে সুযোগ পান ওয়াশিংটন সুন্দরও। গত ম্যাচে খেললেও এই ম্যাচে সুযোগ পাননি রবি বিষ্ণোই এবং রুতুরাজ গায়কোয়াড়।
প্রোটিয়াদের শুরুটা ভাল হয়নি। মাত্র তৃতীয় ওভারেই পাঁচ রানে কুইন্টন ডি কককে সাজঘরে ফেরত পাঠান মহম্মদ সিরাজ। ইনিংসের ১০ম ওভারে ২৫ রানে জানেমন মালানকে ফিরিয়ে নিজের প্রথম আন্তর্জাতিক উইকেটটি তুলে নেন শাহবাজ। তবে ৪০ রানে দুই উইকেট হারানোর অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়ায় দক্ষিণ আফ্রিকা। তৃতীয় উইকেটে রিজা হেন্ডরিক্স ও এইডেন মারক্রাম ১২৯ রান যোগ করেন। দুরন্ত ছন্দে দেখানো রিজাকে অবশ্য ৭৪ রানেই সাজঘরে ফেরত পাঠান সিরাজ। তবে গত ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার নায়ক হেনরিখ ক্লাসেন এরপর ব্যাটে নেমে শুরু থেকেই আগ্রাসী মেজাজে ব্যাট করতে থাকেন।
একসময় মনে হচ্ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা সহজেই ৩০০ রানের গণ্ডি পার করে ফেলবে। তবে পরপর দুই ওভারে কুলদীপ যাদব এবং সুন্দর যথাক্রমে ক্লাসেন ও মারক্রামকে আউট করে ভারতকে ম্যাচে ফেরান। ক্লাসেন ৩০ ও মারক্রাম ৭৯ রানের ইনিংস খেলেন। ডেভিড মিলার শেষের দিকে রানের গতি বাড়ানোর চেষ্টা করলেও, ভারতের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের বিরুদ্ধে ৩৪ বলে অপরাজিত ৩৫ রানের ইনিংস খেলেই সন্তুষ্ট থাকতে হয় তাঁকে।
আরও পড়ুন: বিশ্বকাপের আগেই 'ভালবাসার' টানে অস্ট্রেলিয়ায় পৌঁছলেন উর্বশী রাউতেলা