সন্দীপ সরকার, কলকাতা: ছেলের ৯৭ বলের ইনিংসের প্রতিটি বল মন দিয়ে দেখেছেন। হারারে স্পোর্টস ক্লাবে তরুণ তুর্কি তিন অঙ্কের গণ্ডি পেরতেই উচ্ছ্বসিত লখবিন্দর গিল (Lakhwinder Gill)। তবে গর্বিত হলেও লখবিন্দর সতর্ক গলায় জানিয়ে দিচ্ছেন, এই সবে শুরু। ছেলেকে এখনও অনেক পথ পেরতে হবে।
আলাপ করিয়ে দেওয়া যাক। লখবিন্দর ভারতীয় দলের নতুন তারা শুভমন গিলের (Shubman Gill) বাবা। তাঁর আর একটি পরিচয়, লখবিন্দর শুভমনের প্রথম কোচও।
ভারতীয় ক্রিকেটে বাবার কাছে তালিম নিয়ে বিশ্ব মঞ্চে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার কাহিনি নতুন নয়। মোহিন্দর অমরনাথের (Mohinder Amarnath) খেলার সবচেয়ে বড় সমালোচক ছিলেন লালা অমরনাথ (Lala Amarnath)। যোগরাজ সিংহের কড়া পর্যবেক্ষণে যুবরাজ সিংহের (Yuvraj Singh) উত্থান তো রূপকথার মতো হয়ে রয়েছে। সেই তালিকাতেই নবতম সংযোজন লখবিন্দর-শুভমন জুটি। পঞ্জাবের ফাজিলকায় চাষের জমির মাঝে পিচ তৈরি করে ঘণ্টার পর ঘণ্টা শুভমনকে ক্রিকেট পাঠ দিতেন লখবিন্দর। তাঁর হাতে গড়ে ওঠা শুভমন সোমবার ওয়ান ডে কেরিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি করলেন। ভেঙে দিলেন সচিন তেন্ডুলকরের ২৪ বছরের পুরনো রেকর্ড।
১৯৯৮ সালে জিম্বাবোয়েতে গিয়ে সচিন অপরাজিত ১২৭ রান করেছিলেন। সেটাই এতদিন ছিল জিম্বাবোয়ের মাটিতে কোনও ভারতীয় ক্রিকেটারের সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের ইনিংস। সেই রেকর্ডই এ দিন ভেঙে দিলেন শুভমন। সোমবার শুভমন করলেন ১৩০ রান। এটিই জিম্বাবোয়ের মাটিতে ওয়ান ডে-তে কোনও ভারতীয় ক্রিকেটারের সর্বোচ্চ রানের ইনিংস হয়ে রইল।
কেমন দেখলেন ছেলের ব্যাটিং? চণ্ডীগঢ় থেকে ফোনে এবিপি লাইভকে লখবিন্দর বললেন, 'দারুণ ইনিংস। পরিশ্রমের সুফল পেল ও।'
সচিনের ২৪ বছরের রেকর্ড ভেঙে দিলেন শুভমন...। কথা থামিয়ে দিয়ে সতর্ক গলায় লখবিন্দর বললেন, 'সচিনের সঙ্গে তুলনা করবেন না। সচিন কিংবদন্তি। শুভমন এখনও বাচ্চা। সচিনের সঙ্গে তুলনা করাটা একেবারেই ভুল হবে। সবে কেরিয়ার শুরু করেছে। এখনও অনেক পথ যেতে হবে।'
ওয়ান ডে ক্রিকেটে প্রথম সেঞ্চুরি। সবচেয়ে ইতিবাচক কী দেখলেন? লখবিন্দর বলছেন, 'সাবলীলভাবে খেলেছে। সহজাত ব্যাটিং করেছে। মারার বল পেলেই স্ট্রোক খেলছে। এটাই ওর খেলার ধরন। বল অনুযায়ী খেলেছে। বেশি আগ্রাসী হয়ে বেপরোয়া শট খেলেনি। আবার অতিরিক্ত রক্ষণাত্মকও ছিল না।'
আইপিএলে ওপেন করেন। জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে ওয়ান ডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ওপেন করে বড় রান পেয়েছিলেন। সোমবার তিন নম্বরে নেমে সেঞ্চুরি। ব্যাটিং অর্ডারের ওঠা-পড়ায় সমস্যা হয় না? লখবিন্দর বলছেন, 'দলের যেখানে প্রয়োজন, সেখানে খেলছে। ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে নমনীয় হতেই হবে। শুভমনের সবচেয়ে ইতিবাচক দিক হল, ও ওপেন থেকে তিন-চার নম্বর, ব্যাটিং অর্ডারের সব জায়গাতেই খেলতে পারে।'
আরও পড়ুন: ক্ষমতাচ্যুত সিওএ, সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তে কি নির্বাসন উঠবে ভারতীয় ফুটবলের?