লন্ডন: আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দ্বিতীয় তথা শেষ প্রস্তুতি ম্যাচে বাংলাদেশকে বিশাল ২৪০ রানের ব্যবধানে হারাল ভারত। আগামী রবিবার পাকিস্তানের বিরুদ্ধে হাইভোল্টেজ ম্যাচের আত্মবিশ্বাস অর্জন করল কোহলি-ব্রিগেড।
মঙ্গলবার ওভালে টসে জিতে ভারতকে প্রথম ব্যাট করতে পাঠান বাংলাদেশ অধিনায়ক শাকিব আল হাসান। শিখর ধবন, দীনেশ কার্তিক ও হার্দিক পাণ্ড্যর দৌলতে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৭ উইকেটের বিনিময়ে ৩২৪ রান তোলে ভারত। জবাবে মাত্র ২৩.৫ ওভারে ৮৪ রানে শেষ হয়ে যায় বাংলাদেশের লড়াই। তিনটি করে উইকেট দখল করেন ভূবনেশ্বর কুমার ও উমেশ যাদব।
এদিন টিম ইন্ডিয়ার ইনিংসের শুরুটা একেবারেই ভাল হয়নি। প্রথম প্রস্তুতি ম্যাচে সুযোগ না পেলেও, এদিন রোহিত শর্মাকে প্রথম এগারোয় রেখে ওপেনিং করানোর সিদ্ধান্ত নেয় ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট। তবে, হতাশ করেছেন তিনি। প্রথম ওভারেই রুবেলের বলে আউট হয়ে যান রোহিত। সপ্তম ওভারে ফের ধাক্কা খায় বিরাট-বাহিনী। দলের ২১ রান ও ব্যক্তিগত ১১ রান করে আউট হন তিন নম্বরে নামা অজিঙ্ক রাহানে।
এখান থেকেই ইনিংস সাজাতে শুরু করেন শিখর ধবন ও দীনেশ কার্তিক। দুজনে মিলে তৃতীয় উইকেটে ১০০ রান যোগ করেন। কার্তিক-ধবনের দাপটে তখন রুবেল-মুস্তাফিজুরদের দেখে মনে হচ্ছিল কোনও ক্লাবস্তরের বোলার। ব্যক্তিগত ৬০ রান করে আউট হন ধবন। তবে, এদিন নিজের পারফরম্যান্স দিয়ে টিম ম্যানেজমেন্টকে আশ্বস্ত করে যান। ধবন আউট হতে নামেন কেদার যাদব। তিনি ৩১ রান করেন।
তারপর নামেন হার্দিক পাণ্ড্য। কিছুক্ষণ পরই ৯৩ রানে অবসৃত কার্তিক। রবীন্দ্র জাডেজার সঙ্গে দলের স্কোরকে এগিয়ে নিয়ে যেতে শুরু করেন পাণ্ড্য। ৩২ রান করে জাডেজা আউট হলেও, এদিন শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন পাণ্ড্য। এদিন বিস্ফোরক মেজাজে ছিলেন হার্দিক। বাংলাদেশ বোলারদের নিয়ে তিনি কার্যত ছেলেখেলা করেন। মাত্র ৫৪ বলে ৮০ রান করেন তিনি। তাঁর ইনিংস সাজানো ছিল ৬টি চার ও ৪টি ছক্কায়।
নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৩২৪ রান করে মেন ইন ব্লু-রা। এদিন বাংলাদেশ আট বোলারদের পরীক্ষা করায়। সবচেয়ে সফল ছিলেন রুবেল। ৫০ রান দিয়ে তিনটি উইকেট দখল করেন তিনি। সুনজামুল ইসলাম নেন ২টি ও মুস্তাফিজুর নেন একটি উইকেট।
জবাবে রান তাড়া করতে নেমে ভারতীয় পেস আক্রমণের সামনে তাসের ঘরের মত ভেঙে পড়ে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইন-আপ। মহম্মদ শামি-ভূবনেশ্বর কুমার-উমেশ যাদব পেস ত্রয়ীর সামনে দিশেহারা দেখাচ্ছিল বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের। ইংল্যান্ডের মেঘলা আবহাওয়ায় এদিন ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছিলেন তিনজন। বিনা উইকেটে ১১ থেকে ২২/৬। এই ছোট্ট পরিসংখ্যানই বলে দিচ্ছে ভারতীয় বোলাররা এদিন কতটা কর্তৃত্ব করেছেন। মাত্র ১১ রানের মধ্যে ৬ উইকেট হারানোর পর বাংলাদেশের পরাজয়টা ছিল স্রেফ সময়ের অপেক্ষা।
বাকি কাজটা সারেন জসপ্রীত বুমরাহ, হার্দিক পাণ্ড্য ও রবীচন্দ্রণ অশ্বিন। মাত্র ২৩.৫ ওভারে ৮৪ রানে শেষ হয়ে যায় বাংলাদেশের লড়াই। তিনটি করে উইকেট দখল করেন ভূবনেশ্বর কুমার ও উমেশ যাদব। শামি, বুমরাহ, পাণ্ড্য ও অশ্বিন নেন একটি করে উইকেট।
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে নামার আগে এখন আত্মবিশ্বাসের শিখরে কোহালি ব্রিগেড। দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ জিতে মেন ইন ব্লু যেন জানান দিয়েই দিল, চ্যাম্পিয়ন হিসেবেই এবার অভিযান শুরু করবে তাঁরা।
ভারতীয় দল: বিরাট কোহলি (অধিনায়ক), রবিচন্দ্রন অশ্বিন, জসপ্রিত বুমরাহ, শিখর ধবন, এমএস ধোনি, রবীন্দ্র জাদেজা, কেদার যাদব, দীনেশ কার্তিক, ভূবনেশ্বর কুমার, মহম্মদ শামি, হার্দিক পাণ্ড্য, অজিঙ্ক রাহানে, রোহিত শর্মা, উমেশ যাদব, যুবরাজ সিংহ।
বাংলাদেশ দল: মাশরফি মর্তুজা, ইমরুল কয়েশ, মাহমুদুল্লাহ, মেহেদি হাসান মিরাজ, মোসাদ্দেক হোসেন, মুশফিকুর রহিম, মুস্তাফিজুর রহমান, রুবেল হুসেন, সাব্বির রহমান, শফিকুল ইসলাম, শাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), সৌম্য সরকার, সুঞ্জামুল ইসলাম, তামিম ইকবাল, তাসকিন আহমেদ।