নয়াদিল্লি: এবারের অস্ট্রেলিয়া সিরিজের স্মৃতি ভারতীয় দলের ক্রিকেটারদের তো বটেই, সমর্থকদের মনেও চির অমলিন হয়ে থাকবে। প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে ৩৬ রানে গুটিয়ে যাওয়ার লজ্জা থেকে ব্রিসবেনের গাব্বায় প্রথমবার অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে পরপর দুবার সিরিজ জয় ভারতের। সিডনিতে ৩৬ রানে গুটিয়ে গিয়ে অস্ট্রেলিয়ার হাতে বিধ্বস্ত হতে হয়েছিল ভারতকে। আর তারপরই দুরন্ত প্রত্যাবর্তন। মেলবোর্নে পাল্টা আঘাত অস্ট্রেলিয়াকে। সিরিজে ফিরে আসে সমতা। তৃতীয় টেস্টে চোয়ালচাপা লড়াইয়ে ড্র। তারপর ব্রিসবেনে চতুর্থ টেস্টে ভাঙাচোরা দল নিয়েও ১৮৬ রানে প্রথম ইনিংসে ছয় উইকেট পড়ে যাওয়ার পর পাল্টা লড়াই। তারপর শেষ দিনে ৩২৫ রান তুলে জয়। ডাউনআন্ডারে ক্রিকেটের রূপকথা লিখে এসেছে টিম ইন্ডিয়া।
টিম ইন্ডিয়ার প্রত্যাব্রন শুরু মেলবোর্নে। আর এর ছক তৈরি হয়েছিল মাঝরাতে। অফস্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও ফিল্ডিং কোচ আর শ্রীধর জানিয়েছেন, মাঝরাতে অধিনায়ক বিরাট কোহলির আচমকা ফোনেই শুরু হয়েছিল মিশন মেলবোর্ন।
১৭ ডিসেম্বর ২০২০ থেকে ১৯ জানুয়ারি ২০২১ পর্যন্ত চলেছিল ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার টেস্ট সিরিজ। এরমধ্যে ১৯ ডিসেম্বর দিনটি ভারতীয় ক্রিকেটের ইতিহাসে লজ্জার দিন হয়েই থাকবে। ওই দিনই অ্যাডিলেড টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ৩৬ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল টিম ইন্ডিয়া। অস্ট্রেলিয়া সিরিজের প্রথম টেস্ট জিতে নিয়েছিল ৮ উইকেটে।
নিজের ইউটিউব চ্যানেলে কথোপকথনের সময় অশ্বিন কথা বলেন ফিল্ডিং কোচ আর শ্রীধরের সঙ্গে। অ্যাডিলেড টেস্টে ভারতের হার এবং এরপর অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে পাল্টা আক্রমণের পরিকল্পনা সম্পর্কে তাঁরা কথা বলেন।
শ্রীধর জানান,টেস্ট সিরিজে এই পাল্টা আক্রমণের পরিকল্পনার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছিল যে, মেলবোর্নে দলের জয় নিশ্চিত করা। আর এজন্য বিরাট কোহলি ও সহ অধিনায়ক আজিঙ্কা রাহানে নীল নকশা তৈরি করেন এবং এতে সাহায্য করেন কোচ রবি শাস্ত্রী।

শ্রীধর জানিয়েছেন, অ্যাডিলেড টেস্টে যেদিন হেরে গিয়েছিলাম, সেদিন মাঝরাতে সাড়ে বারোটা নাগাদ কোহলি আমাকে মেসেজ করে। জানতে চায়, তুমি কী করছ? এই মেসেজ পেয়ে চমকে গিয়েছিলাম। ভাবছিলাম, এত রাতে ও কেন মেসেজ পাঠালো? আমি ওকে বললাম, হোড কোচ (রবি শাস্ত্রী), আমি, ভরত অরুণ ও বিক্রম রাঠোর একসঙ্গে রয়েছি। ও বলে, আমিও আসছি। আমি বললাম, কোনও সমস্যা নেই, এসো।
শ্রীধর জানিয়েছেন, ও আসার পর আমরা সবাই আলোচনা শুরু করি। আর এটাই ছিল মিশন মেলবোর্নের সূত্রপাত। শাস্ত্রী একটা কথা বলে দেন, এই ৩৫, এটা ব্যাজের মতো পরে থাকো। এই ৩৬-ই আমাদের দলকে শক্তিশালী করে তুলবে।

তারপর বাকিটা ইতিহাস। অস্ট্রেলিয়ার ইতিহাস তৈরি করে দেশে ফিরেছে টিম ইন্ডিয়া।