কিন্তু এখানে অস্ট্রেলিয়ার সেরা দলকে হারিয়ে দিল ভারতের ভাঙাচোরা দল। দলে নেই চার সেরা বোলার, দুই স্পিনার, সেই সঙ্গে কোহলি দলে নেই। এরপরও পূর্ণশক্তির অস্ট্রেলিয়াকে সিরিজে হারাল ভারত। এটাই প্রমাণ করল ভারত রিজার্ভ বেঞ্চ কতটা শক্তিশালী।
সেইসঙ্গে আজিঙ্কা রাহানেকে নিয়েও একটা আলোচনা শুরু হয়ে গেল। টেস্ট ক্রিকেটে ঠাণ্ডা মাথার অধিনায়কের কথা বলা হয়। শুধুমাত্র চেঁচালে বা শরীরে আগ্রাসন ফুটিয়ে তুললেই যে ভালো ক্যাপ্টেন হওয়া যায়, তা কিন্তু নয়। রাহানে বারেবারেই তা প্রমাণ করে দিয়েছেন। এক্ষেত্রে চলতি সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট বা ভারতের মাঠে সিরিজে ধর্মশালা টেস্টের কথা উল্লেখ করা যায়। সেখানে ডু অর ডাই ম্যাচে সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়ে কুলদীপ যাদবের অভিষেক ঘটিয়েছিলেন রাহানে। ম্যাচে চার উইকেট নিয়ে ম্যাচ জেতাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন কুলদীপ। টেস্ট ক্রিকেটে অধিনায়কত্বের সুযোগ পেলেই নিজেকে প্রমাণ করছেন রাহানে। ফলে ভেতরে ভেতরে কোথাও কোথাও বিরাট কোহলির সঙ্গে একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতার শুরু হয়ে যাবে এবং এনিয়ে আলোচনা শুরু হওয়াটাই স্বাভাবিক।
ব্রিসবেনের ম্যাচে ১৮৬ রানে ছয় উইকেট পড়ে গিয়েছিল। সেখান থেকে এমন কামব্যাক দেখে সমস্ত বিশেষজ্ঞই একবাক্যে মেনে নিয়েছেন যে, এই জয় ভারতের প্রথম সেরা পাঁচ টেস্ট জয়ের মধ্যে থাকবে।
প্রথম টেস্টে ভারতের ৩৬ রানে গুটিয়ে যাওয়ার পর ক্রিকেটারদের টেস্ট ক্রিকেটের প্রতি আবেগ আইপিএল-প্রজন্মের ক্রিকেটারদের নেই বলে সমালোচনা উঠেছিল। এই সমালোচনা কিন্তু ভুল প্রমা করল ভারতীয় দল। টেস্ট ক্রিকেটই যে অগ্রাধিকার, তাঁরা তা ফের প্রমাণ করেছেন ভারতের তরুণ ক্রিকেটাররা।
সবমিলিয়ে বলা যায়, ক্রিকেটের পাওয়ার হাউস অস্ট্রেলিয়াকে ধাক্কা দিল ভারত। প্রমাণ করল, যে কোনও পরিস্থিতিতে, যে কোনও দল নিয়ে জিততে পারে ভারত। যে ক্ষমতা ৯০ বা ২০০০-এর শুরুতে অস্ট্রেলিয়ার ছিল। উল্টে এর কারণ হতে পারে আইপিএল। কারণ, আইপিএলে ভারতের তরুণ ক্রিকেটাররা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের তারকাদের সঙ্গে ড্রেসিংরুম শেয়ার করার সুযোগ পাচ্ছেন। ফলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথমবার খেলার যে ভীতি তরুণ ক্রিকেটারদের থাকে, তা আইপিএল খেলার সময়ই কেটে যাচ্ছে।
টেস্ট ক্রিকেটে যে ভারত এখন অন্যতম সেরা দল তা আরও একবার প্রমাণিত হল। সেইসঙ্গে প্রায় হারিয়ে যেতে বসা রাহানেকে পাদপ্রদীপের আলোয় ফের নিয়ে এল এই সিরিজ। শুধু একজন ক্রিকেটার হিসেবে নয়, একজন তথা তথা অধিনায়ক হিসেবে।