সন্দীপ সরকার, ভুবনেশ্বর: কথায় বলে, অর্ধাঙ্গিনী। অর্ধ অঙ্গের অধিকারী দুই সত্ত্বা।


স্ত্রী সন্তানসম্ভবা হলে স্বামীও বা নিজেকে অন্তঃসত্ত্বা বলবেন না কেন!


সেই ব্যতিক্রমী পথেই হাঁটলেন সুনীল ছেত্রী (Sunil Chhetri)। দেখিয়ে দিলেন, শুধু ফুটবল মাঠে নয়, মাঠের বাইরেও তিনি উদাহরণ তৈরি করতে জানেন।


সোমবাব ভুবনেশ্বরের কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপে (Intercontinental Cup 2023) ভানুয়াটুর বিরুদ্ধে গোল করে জার্সির পেটের ভেতর বল ঢুকিয়ে সেলিব্রেশনেই সুনীল বুঝিয়ে দিয়েছিলেন যে, পরিবারে নতুন সদস্য আসতে চলেছে। মৌখিক ঘোষণাও করে দিলেন ম্যাচের পর। তবে অভিনবভাবে।


ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপের ফাইনালে উঠে সাংবাদিক বৈঠকে আসতেই সুনীলের উদ্দেশে ভেসে এল প্রশ্ন। আপনার সেলিব্রেশন দেখে মনে হল যেন গোল ছাড়া আরও কিছু সুখবর রয়েছে? সুনীল বললেন, 'খুবই স্পষ্ট। আমি ও আমার স্ত্রী, দুজনই সন্তানসম্ভবা।'


স্ত্রী সোনম মা হতে চলেছেন। তবে সুনীল বুঝিয়ে দিলেন, সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার এই সফরে তিনিও রয়েছেন স্ত্রীর সঙ্গেই। সহযাত্রী হয়ে। সঙ্গী হয়ে।


 






সুনীল জানালেন, ১৯ বছর আগে জুনেই শুরু হয়েছিল তাঁরে প্রেমপর্ব। প্রথম দেখা। ভাল লাগা। কাছে আসা। আন্তর্জাতিক ফুটবলে ৮৬ গোলের গর্বিত মালিক বললেন, 'আমরা চেয়েছিলাম সুখবরটা সকলকে জানিয়ে প্রত্যেকের শুভেচ্ছাবার্তা নিতে। কীভাবে ঘোষণা করব ভাবছিলাম। তারপর দুজনে মিলে ফুটবল মাঠের ভীষণ একঘেঁয়ে ঘরানাই বেছে নিলাম। আমি স্ত্রীর অনুমতি চেয়েছিলাম। ও রাজি হয়। ২০০৪ সালের ১১ জুন আমাদের প্রথম দেখা। সে জন্যই বলেছিলাম, ভানুয়াটুর বিরুদ্ধে ১২ জুন খেলা। গোল পেলে গোটা দেশকে সুখবরটা দেব। সকলের ভালবাসা আর শুভেচ্ছা চাই।'


ভানুয়াটুর বিরুদ্ধে ম্যাচে ৮১ মিনিট পর্যন্ত ০-০ আটকে ছিল ভারত। শেষ পর্যন্ত রক্ষাকর্তা হয়ে হাজির হলেন সুনীল। ম্যাচের ৮১ মিনিটের মাথায় ভানুয়াটু বক্সের বাঁদিক থেকে ক্রস বাড়ান শুভাশিস বসু। বুকে করে সেই বল নামিয়ে বাঁ পায়ের নিখুঁত ভলিতে জালে জড়িয়ে দিলেন সুনীল। ভারতের জার্সিতে তাঁর ৮৬তম গোল। ম্যাচের সেরাও হলেন ভারতীয় ফুটবলের কিংবদন্তি।


পরপর দুই ম্যাচ জিতে ফাইনালে পৌঁছে গেল ভারত। সোমবার শেষ পাতে মিষ্টিমুখ-সম হয়ে রইল অধিনায়কের দেওয়া সুখবর।



আরও পড়ুন: বরফ নিয়ে ঘুরতে হচ্ছে মঙ্গোলিয়াকে, ভুবনেশ্বরে রুখে দিল ৮৪ ধাপ এগিয়ে থাকা লেবাননকে