কলকাতা: বাবা মুরলী ছিলেন কলেজ দলের জোরে বোলার। মা কলাবতী আবার রাজ্য দলের ভলিবলার। তাঁদের সন্তান যে খেলাধুলোর ময়দানকেই আঁকড়ে ধরবে, প্রত্যাশিত। কিন্তু কোন খেলা বেছে নেবে সে বড় হয়ে? ক্রিকেট, নাকি ভলিবল? নাকি অন্য কোনও খেলা?


কর্নাটকের প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ অবশ্য বাবার পথেই হেঁটেছেন। পেশা হিসাবে বেছে নিয়েছেন ক্রিকেটকে। কর্নাটকের রাজ্য দল, আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্স হয়ে এখন তিনি বিরাট কোহলির জাতীয় দলেও জায়গা করে নিয়েছেন। আপাতত নবি মুম্বইয়ে শাহরুখ খানের দলের প্রস্তুতি শিবিরে রয়েছেন ডানহাতি পেসার। সেখান থেকে একান্ত সাক্ষাৎকারে এবিপি লাইভকে প্রসিদ্ধ বললেন, 'ছোটবেলা যে কোনও বাচ্চার মতোই সারাদিন পাড়ায়, বাড়ির সামনের গলিতে ক্রিকেট খেলতাম। তবে বড় হয়ে পেশাদার ক্রিকেটার হব বা ক্রিকেটকেই পেশা হিসাবে বেছে নেব, সেটা কখনও ভাবিনি। একটা সময় ক্লাব পর্যায়ে ভাল খেলছিলাম। আমার শৈশবের কোচ শ্রীনিবাস মূর্তি স্যার বলেন, ক্রিকেট মাঠে ভাল করার মতো দক্ষতা আমার রয়েছে। তারপরই পেশাদারভাবে ক্রিকেটকে বেছে নেওয়া।'


উচ্চতা ৬ ফিট ২ ইঞ্চি। বলের গতি? ঘণ্টায় ১৪৫ কিলোমিটার। ভারতের হয়ে তিনটি ওয়ান ডে-তে ৬ উইকেট। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে অভিষেকেই নজরকাড়া বোলিং। ব্যাটসম্যানেরা আক্রমণাত্মক শট খেললেও শান্ত থেকেছেন প্রসিদ্ধ। নিখুঁত লাইন-লেংথে উইকেট তুলে নিয়ে শেষ হাসি হেসেছেন। চাপের মুখেও নির্লিপ্ত থেকে নিজের কাজটা করে যাওয়ার রসায়নটা কী? প্রসিদ্ধ বলছেন, 'ব্যাটসম্যানরা আক্রমণাত্মক শট খেললেও শান্ত, সংযত থাকতে পারি। মেজাজ হারাই না। এটা গ্লেন ম্যাকগ্রার ক্লাসের ইতিবাচক দিক। চেন্নাইয়ে এমআরএফ পেস ফাউন্ডেশনে ম্যাকগ্রা স্যারের কাছে প্রশিক্ষণের সুযোগ পেয়েছিলাম। ম্যাকগ্রা স্যার সব সময় বলতেন, ব্যাটসম্যানরা আগ্রাসী শট খেললেও বোলারকে শান্ত থাকতে হবে। তবেই প্রত্যাঘাত সম্ভব। ম্যাচে পরিস্থিতি যে রকমই থাকুক না কেন, চাপমুক্ত থাকতে পারি। চাপ যাতে আমার পারফরম্যান্সে প্রভাব না ফেলতে পারে, সে দিকে সব সময় খেয়াল রাখি।'


ছোটবেলা সমস্ত নামী বোলারদের বোলিং অ্যাকশন অনুকরণ করতেন। রাস্তাঘাটেও তাঁকে দেখা যেত কখনও ওয়াসিম আক্রম তো কখনও জাহির খানের নকল করতে। প্রিয় বোলার কে? প্রসিদ্ধ বলছেন, 'আমার ব্রেট লি-র বোলিং অ্যাকশন দুর্দান্ত লাগত। ছোট থেকেই ওর বোলিংয়ের ভক্ত। ব্রেট লি-ই আমার আদর্শ।'


ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ওয়ান ডে অভিষেকেই রেকর্ড। প্রথম ভারতীয় পেসার হিসাবে কেরিয়ারের প্রথম ওয়ান ডে-তেই চার উইকেট নিয়েছিলেন। সেই ম্যাচের বলটি কি সংগ্রহ করে রেখেছেন স্মারক হিসাবে? প্রসিদ্ধ বলছেন, 'পাঁচ উইকেট পেলে হয়তো বলটা পেতাম। তবে চার উইকেট নিয়ে সেই বল সংগ্রহ করে রাখতে চাই না। হয়তো অভিষেক ম্যাচ হিসাবে ভাল পারফর্ম করেছি। তবে পাঁচ উইকেট পেলে তবেই বলটাকে স্মারক হিসাবে বাড়ি নিয়ে যেতে চাই। তার আগে নয়।'


ভারতের অধিনায়ক হতে পারেন পন্থ, মত আজ়হারের


বিরাট কোহলিদের জাতীয় শিবির থেকে কী শিখলেন? কলকাতা নাইট রাইডার্সের পেসার বলছেন, 'ভারতীয় ড্রেসিংরুম থেকে শিখেছি কীভাবে মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিতে হয়। কতটা পেশাদার হতে হয়। কঠিন পরিস্থিতি সামলানোর উপায় শিখেছি জাতীয় দলের সতীর্থদের থেকে। বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা-সহ সকলে যেভাবে ম্যাচের আগে বা যে কোনও পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকে, তা সামনে থেকে দেখে অনেক কিছু শিখেছি।'


এবারের আইপিএলে সেই শিক্ষাই কাজে লাগাতে চান নাইট পেসার প্রসিদ্ধ।