কলকাতা: কখনও ক্রিস গেল, কখনও যুবরাজ সিংহ, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের তাবড় সব নাম আইপিএলে পঞ্জাবের হয়ে খেলেছে। তাও সাফল্যের হিসেব কষতে বসলে হাতে পড়ে থাকে শুধু পেন্সিল! ১৩ বছর ধরে আইপিএল খেলে প্রীতি জিন্টার দলের সেরা পারফরম্যান্স? ২০১৪ সালে ফাইনালে ওঠা। বেঙ্গালুরুতে যে ফাইনালে ঋদ্ধিমান সাহার দাপুটে সেঞ্চুরির পরেও পঞ্জাবের স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল শাহরুখ খানের কলকাতা নাইট রাইডার্সের হাতে।
সাফল্যের খোঁজে নাম বদলে ফেলেছে পঞ্জাব। কিংস ইলেভেন পঞ্জাব এবারের আইপিএলে খেলবে পঞ্জাব কিংস নামে। জার্সি থেকে শুরু করে হেলমেটের রং, সব পাল্টে গিয়েছে। আইপিএল ভাগ্য কি বদলাবে?
গতবার আইপিএলে আট দলের মধ্যে ছ'নম্বরে শেষ করেছিল পঞ্জাব। প্রীতি জিন্টার দলের প্রধান সমস্যা হল, বড় ম্যাচে চোক করে যায়। স্নায়ুর চাপ সামলাতে পারে না। দু-একটা ম্যাচ ভাল জিতলেও, টুর্নামেন্টের মাঝপথে ছন্দ হারিয়ে ফেলে। এবার ডাভিড মালানের মতো এক ঝাঁক নতুন মুখকে দলে নিয়েছে পঞ্জাব। ডাভিড মালান ওদের সেরা সম্পদ হতে পারে। ইংল্যান্ডের সীমিত ওভারের ক্রিকেট দলে বিশ্বের সেরা। এবারের আইপিএলে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিদেশি ক্রিকেটার হতে চলেছে মালান। ওর জন্যই এক কদম এগিয়ে গেল পঞ্জাব।
ধোনিদের কাঁটা বয়স, তুরুপের তাস হতে পারে কারান-ঋতুরাজ
তবে ক্রিস গেলকে নিয়ে বেশি স্বপ্ন না দেখাই ভাল। গেলকে ধারাবাহিকভাবে সব ম্যাচে পাওয়া যাবে না। ফিটনেসের সমস্যা রয়েছে। গেল দু-একটা ম্যাচে বিস্ফোরক ইনিংস খেলে দেবে। ধারাবাহিকভাবে ম্যাচ জেতাতে পারবে না।
ওদের অন্যতম প্রধান শক্তি অধিনায়ক কে এল রাহুল। উইকেটকিপিংও করে দেবে হয়তো সব ম্যাচে। ব্যাট হাতে ম্যাচ জেতাতে পারে। গত আইপিএলেও দুরন্ত ফর্মে ছিল। সঙ্গে ময়ঙ্ক অগ্রবাল আছে। রাহুল ও ময়ঙ্কের ওপেনিং জুটি আইপিএলের অন্যতম সেরা। নিকোলাস পুরানও টি-টোয়েন্টিতে দারুণ ব্যাটসম্যান।
পঞ্জাবের পেস বোলিং বিভাগও নজরকাড়া। মহম্মদ শামি সেরা পেসার। অনেকে বলবে শামি টেস্টের জন্য আদর্শ। তবে ইদানীং কালে টি-টোয়েন্টিতেও ও দারুণ বল করছে। বাংলার ঈশান পোড়েল রয়েছে। তবে ঈশানকে প্রথম একাদশে কতটা দেখা যাবে, সন্দেহ রয়েছে।
স্পিন বিভাগের সেরা প্রতিভা রবি বিষ্ণোই। ও একটু জোরের ওপর লেগস্পিন করে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে আদর্শ। তবে বিষ্ণোই ও এম অশ্বিন ছাড়া আর কোনও দারুণ স্পিনার নেই। এটা সমস্যায় ফেলতে পারে। সব মিলিয়ে এবারের পঞ্জাব কিংস দলের ভারসাম্য অন্যান্যবারের তুলনায় অনেক বেশি। আশা করছি পঞ্জাব এবার অনেক দূর যাবে। ট্রফি জয়েরও অন্যতম দাবিদার ওরা।
পুরো দল: ক্রিস গেল, ডাভিড মালান, দীপক হুডা, মনদীপ সিংহ, ময়ঙ্ক অগ্রবাল, সরফরাজ খান, শাহরুখ খান, অর্শদীপ সিংহ, ক্রিস জর্ডান, দর্শন নালকাণ্ডে, হরপ্রীত ব্রার, ঈশান পোড়েল, ঝাই রিচার্ডসন, মহম্মদ শামি, এম অশ্বিন, রবি বিষ্ণোই, রিলে মেরিডিথ, সৌরভ কুমার, ফাবিয়েন অ্যালেন, জলজ সাক্সেনা, মোয়েস অনরিকস, উৎকর্ষ সিংহ, কে এল রাহুল, নিকলাস পুরান ও প্রভসিমরন সিংহ।
অধিনায়ক: কে এল রাহুল
হেড কোচ: অনিল কুম্বলে
সহকারী কোচ: অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার
ব্যাটিং কোচ: ওয়াসিম জাফর
বোলিং কোচ: ড্যামিয়েন রাইট
ফিল্ডিং কোচ: জন্টি রোডস
আইপিএলে সেরা পারফরম্যান্স: রানার্স (২০১৪)
আইপিএল রেকর্ড: ম্যাচ ১৯০, জয় ৮৭, হার ১০১, অমীমাংসিত ২
গত আইপিএলের পারফরম্যান্স: ম্যাচ ১৪, জয় ৬, হার ৮
শক্তি: দলে এবার ভারসাম্য অনেক বেশি। সব বিভাগে ভাল ক্রিকেটার রয়েছে। মালানের অন্তর্ভুক্তি।
দুর্বলতা: স্পিন বিভাগে বৈচিত্র কম। রবি বিষ্ণোইয়ের ৪ ওভারের ওপর অনেরক কিছু নির্ভর করবে। রবি ছন্দ হারালে বা চোট পেলে বিকল্প স্পিনার নেই।
এক্স ফ্যাক্টর: রাহুল-ময়ঙ্কের ওপেনিং জুটি।
আইপিএলে পঞ্জাব কিংসের ম্যাচ:
১২ এপ্রিল আরআর বনাম পিকে মুম্বই, রাত ৭.৩০
১৬ এপ্রিল পিকে বনাম সিএসকে মুম্বই, রাত ৭.৩০
১৮ এপ্রিল ডিসি বনাম পিকে মুম্বই, রাত ৭.৩০
২১ এপ্রিল পিকে বনাম এসআরএইচ চেন্নাই, দুপুর ৩.৩০
২৩ এপ্রিল পিকে বনাম এমআই চেন্নাই, রাত ৭.৩০
২৬ এপ্রিল পিকে বনাম কেকেআর আমদাবাদ, রাত ৭.৩০
৩০ এপ্রিল পিকে বনাম আরসিবি আমদাবাদ, রাত ৭.৩০
২ মে পিকে বনাম ডিসি আমদাবাদ, রাত ৭.৩০
৬ মে আরসিবি বনাম পিকে আমদাবাদ, রাত ৭.৩০
৯ মে সিএসকে বনাম পিকে বেঙ্গালুরু, দুপুর ৩.৩০
১৩ মে এমআই বনাম পিকে বেঙ্গালুরু, দুপুর ৩.৩০
১৫ মে কেকেআর বনাম পিকে বেঙ্গালুরু, রাত ৭.৩০
১৯ মে এসআরএইচ বনাম পিকে বেঙ্গালুরু, রাত ৭.৩০
২২ মে পিকে বনাম আরআর বেঙ্গালুরু, রাত ৭.৩০
*অনুলিখন: সন্দীপ সরকার