কলকাতা: আইপিএলের ইতিহাসে ঈর্ষণীয় রেকর্ড। ভাঁড়ারে রয়েছে তিন-তিনটি আইপিএল ট্রফি। স্পট ফিক্সিং বিতর্ক, দু বছরের নির্বাসন, ফিরে এসে ফের চ্যাম্পিয়ন হওয়া, বরাবর খবরের শিরোনামে থেকেছে চেন্নাই সুপার কিংস। তবে সংযুক্ত আরব আমিরশাহির মাটিতে গতবারের আইপিএলে হতাশা সঙ্গী হয়েছিল মহেন্দ্র সিংহ ধোনিদের। আট দলের টুর্নামেন্টে সপ্তম স্থানে শেষ করেছিল ধোনিরা। ১৪ ম্যাচের মধ্যে ৬টি জয়, ৮টি পরাজয়, প্লে অফের অনেক আগেই থেমে গিয়েছিল অভিযান। দরজায় কড়া নাড়ছে আর একটি আইপিএল। নতুন মরসুম, নতুন স্বপ্ন নিয়ে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে সবকটি দলের। কেমন হয়েছে এবারের চেন্নাই সুপার কিংস দল? চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সম্ভাবনা কতটা? প্রতিবন্ধকতাই বা কী?


সিএসকে-র সবচেয়ে বড় সমস্যা দলের গড় বয়স। ধোনি থেকে শুরু করে সুরেশ রায়না, অম্বাতি রায়ডু, ডোয়েন ব্র্যাভো - আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের মধ্যে নেই দলের বেশিরভাগ ক্রিকেটার। গতবছর অনেকে মজা করে সিএসকে-কে বৃদ্ধাশ্রম বলছিল। এবারও কিন্তু সেই ছবিটা বদলায়নি।


ভারতের ঘরোয়া ক্রিকেটারদের মধ্যে ঋতুরাজ গায়কোয়াড় খুব ভাল। করোনার জন্য এবার রঞ্জি ট্রফি হয়নি। ঘরোয়া ক্রিকেট বলতে হয়েছে বিজয় হাজারে ট্রফি ও সৈয়দ মুস্তাক আলি টি-টোয়েন্টি। দুটি টুর্নামেন্টেই ভাল খেলেছে ঋতুরাজ। বিদেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে স্যাম কারান সেরা। সদ্যসমাপ্ত ভারত-ইংল্যান্ড ওয়ান ডে সিরিজে দারুণ ছন্দে ছিল কারান। ব্যাটিং-বোলিং দুইয়েই ফর্মে রয়েছে। যে কোনও পোজিশনে ব্যাট করতে পারে। প্রয়োজনে ওকে দিয়ে ওপেনও করানো যায়। মাঝখানেও খেলানো যায়। কারান গত আইপিএলে চেন্নাইয়ের হয়ে নজর কেড়েছিল। এছাড়া রবীন্দ্র জাডেজার জ্বলে ওঠার দিকেও তাকিয়ে থাকবে সিএসকে ভক্তরা।


চেন্নাই সুপার কিংসকে নিয়ে যে কোনওরকম আলোচনায় সবার আগে আসে ধোনির নাম। গতবার ওর নেতৃত্বে সিএসকে ভাল কিছু করতে পারেনি। ব্যাটসম্যান হিসাবেও ধোনির সামনে কঠিন পরীক্ষা। কারণ, ও বেশ কিছুদিন ক্রিকেটের মধ্যে নেই। যতই ট্রেনিং করো, ধারাবাহিকভাবে পারফর্ম করা মুশকিল। ডোয়েন ব্র্যাভো, সুরেশ রায়নার ক্ষেত্রেও একই অন্তরায়।


সিএসকে দলের খোলনলচে গত মরসুমের চেয়ে খুব একটা বদলায়নি। ওদের দলে এক ঝাঁক তামিলনাড়ুর ক্রিকেটার রয়েছে। স্থানীয় ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্স খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে। তবে আইপিএলে সিএসকে-কে নিয়ে খুব একটা আশা করছি না। শুধু অভিজ্ঞতা দিয়ে টি-টোয়েন্টির মতো ফর্ম্যাটে দাগ ফেলা কঠিন। তাই গতবারের ছবিটা বদলানো কতটা সম্ভব, সংশয় রয়েছে।


পুরো দল: মহেন্দ্র সিংহ ধোনি, সুরেশ রায়না, ডোয়েন ব্র্যাভো, ফাফ ডুপ্লেসি, রবীন্দ্র জাডেজা, অম্বাতি রায়ডু, কর্ণ শর্মা, ইমরান তাহির, দীপক চাহার, শার্দুল ঠাকুর, লুনগি এনগিডি, মইন আলি, কে গৌতম, স্যাম কারান, রবিন উথাপ্পা, চেতেশ্বর পূজারা, মিটেল স্যান্টনার, ঋতুরাজ গায়কোয়াড়, জগদীশান এন, কে এম আসিফ, আর সাই কিশোর, সি হরি নিশান্থ, এম হরিশঙ্কর রেড্ডি, কে ভগৎ বর্মা (জস হ্যাজলউডের পরিবর্তের নাম এখনও ঘোষণা হয়নি)।


অধিনায়ক: মহেন্দ্র সিংহ ধোনি


হেড কোচ: স্টিফেন ফ্লেমিং


ব্যাটিং কোচ: মাইকেল হাসি


বোলিং কোচ: লক্ষীপতি বালাজি


আইপিএল চ্যাম্পিয়ন: ৩ বার (২০১০, ২০১১, ২০১৮)


আইপিএল রেকর্ড: ম্যাচ ১৮০, জয় ১০৬, হার ৭২ অমীমাংসিত ২


গত আইপিএলের পারফরম্যান্স: ম্যাচ ১৪, জয় ৬, হার ৮


শক্তি: অভিজ্ঞতা। সিএসকে যেমন জেতা ম্যাচ হেরে যেতে পারে, সেরকম অভিজ্ঞতার জোরে হারা ম্যাচ জিতেও যেতে পারে।


দুর্বলতা: টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট হচ্ছে ফিটনেসের লড়াই। তবে চেন্নাই দলের ক্রিকেটারদের গড় বয়স বেশি। ফিটনেসে অন্য দলের চেয়ে পিছিয়ে।


এক্স ফ্যাক্টর:  ধোনির নেতৃত্ব। হাতে মশলা সেরকম নেই এবারও। তা দিয়েই কতটা সুস্বাদু রান্না করতে পারে ক্য়াপ্টেন কুল, দেখার জন্য অপেক্ষা করছে সিএসকে সমর্থকেরা।


আইপিএলে সিএসকে-র ম্যাচের সূচি:


১০ এপ্রিল  সিএসকে বনাম ডিসি  মুম্বই, রাত ৭.৩০


১৬ এপ্রিল  পিকে বনাম সিএসকে মুম্বই, রাত ৭.৩০


১৯ এপ্রিল  সিএসকে বনাম আরআর    মুম্বই, রাত ৭.৩০


২১ এপ্রিল  কেকেআর বনাম সিএসকে  মুম্বই, রাত ৭.৩০


২৫ এপ্রিল সিএসকে বনাম আরসিবি    মুম্বই, দুপুর ৩.৩০


২৮ এপ্রিল সিএসকে বনাম এসআরএইচ       দিল্লি, রাত ৭.৩০


১ মে এমআই বনাম সিএসকে      দিল্লি, রাত ৭.৩০


৫ মে আরআর বনাম সিএসকে    দিল্লি, রাত ৭.৩০


৭ মে এসআরএইচ বনাম সিএসকে       দিল্লি, রাত ৭.৩০


৯ মে সিএসকে বনাম পিকে বেঙ্গালুরু, দুপুর ৩.৩০


১২ মে       সিএসকে বনাম কেকেআর  বেঙ্গালুরু, রাত ৭.৩০


১৬ মে      সিএসকে বনাম এমআই      বেঙ্গালুরু, রাত ৭.৩০


২১ মে       ডিসি বনাম সিএসকে  কলকাতা, রাত ৭.৩০


২৩ মে      আরসিবি বনাম সিএসকে    কলকাতা, রাত ৭.৩০


*অনুলিখন: সন্দীপ সরকার