সন্দীপ সরকার, কলকাতা: আইপিএল (IPL) আসে। আইপিএল যায়। পাঞ্জাব কিংসের (Punjab Kings) সঙ্গে ট্রফির দূরত্ব কিছুতেই মেটে না। ২০১৪ সালের ফাইনালে উঠে হারতে হয়েছিল। তারপর থেকে প্লে অফের দরজাও আর খোলেনি। এবার কি সেই ছবি বদলাবে? মিনি অকশন থেকে স্যাম কারানের মতো তারকাকে রেকর্ড অর্থে কিনেছে প্রীতি জিন্টার দল। ট্রফি ভাগ্য দেখা দেবে? কে হতে পারেন পাঞ্জাবের তুরুপের তাস? প্রথম ম্যাচেই কলকাতা নাইট রাইডার্সকে হারিয়ে অভিযান শুরু করেছে পাঞ্জাব। টুর্নামেন্টের ফাঁকে মোহালি থেকে জুম কলে এবিপি লাইভকে ভিডিও সাক্ষাৎকার দিলেন পাঞ্জাবের ব্যাটিং কোচ তথা জাতীয় দলের প্রাক্তন ওপেনার ওয়াসিম জাফর। শিখর ধবনের নেতৃত্ব থেকে শুরু করে জনি বেয়ারস্টোর ছিটকে যাওয়া, সব ব্যাপারেই অকপট প্রাক্তন তারকা।
প্রশ্ন: আগেরবার অল্পের জন্য প্লে অফে যেতে পারেনি পাঞ্জাব কিংস। এবার দলের সামনে কী লক্ষ্য রাখছেন?
ওয়াসিম জাফর: গত তিনবার অল্পের জন্য প্লে অফের যোগ্যতা পাইনি। অনেক হাড্ডাহাড্ডি ম্যাচে হেরে গিয়েছি। যেগুলো জেতা উচিত ছিল। প্লে অফ থেকে মাত্র এক জয় দূরে ছিলাম। শুরুতেই কেউ ট্রফির কথা ভাবে না। আমাদের প্রথম লক্ষ্য প্লে অফের যোগ্যতা অর্জন করা। দশ দলের মধ্যে প্রথম চার দল প্লে অফে যাবে। আগে প্লে অফ। তারপর পরের কথা ভাবা হবে।
প্রশ্ন: শিখর ধবনের মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেটার, শাহরুখ খানের মতো প্রতিভাবান তরুণ, পাঞ্জাবের ব্যাটিং শক্তি কীরকম দেখছেন?
জাফর: প্রথম আইপিএল থেকে খেলছে ধবন। ২০০৮ সাল থেকে প্রায় ১৫-১৬ বছর হয়ে গেল। দারুণ সমস্ত ইনিংস রয়েছে। ওর অভিজ্ঞতা দলের সম্পদ। ভারতীয় দলকেও নেতৃত্ব দিয়েছে। ও মুখিয়ে রয়েছে। শাহরুখ খান ও অন্য তরুণরাও নিজেদের প্রমাণ করতে মরিয়া। আইপিএলের আগে আমরা দুটো প্রস্তুতি শিবির করেছি। সেখানে তরুণ ক্রিকেটারেরা বেশ নজর কেড়েছে। আইপিএলে ভাল পারফর্ম করলে জাতীয় দলের দরজা খুলে যেতে পারে। সেটা সব ক্রিকেটারই মাথায় রাখবে।
প্রশ্ন: আইপিএলে সাতবার সাড়ে চারশোর বেশি রান করেছেন শিখর ধবন। ইদানীং জাতীয় দলের বাইরে। কীভাবে ধবনের সেরাটা বার করে আনবেন?
জাফর: এ বছর ভারতের মাটিতে ওয়ান ডে বিশ্বকাপ। শিখর জানে একটা ভাল আইপিএল ওয়ান ডে বিশ্বকাপের দলে জায়গা করে দিতে পারে। আইসিসি টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত রেকর্ড। ওকে হিসেবের বাইরে রাখা যাবে না। ও নিজে জানে ওকে কী করতে হবে। ধবনের গোড়ালিতে চোট ছিল। নেতৃত্বের দায়িত্ব ওকে আরও উদ্বুদ্ধ করছে। আগেও চাপের মুখে ভাল খেলেছে। এবারও সেই পারফরম্যান্সই দেখা যাবে বলে আমি আশাবাদী।
প্রশ্ন: জনি বেয়ারস্টো আইপিএলে নেই। ওঁর অভাব পূরণ করার জন্য কী পরিকল্পনা নিয়েছেন?
জাফর: বেয়ারস্টো দুর্দান্ত ক্রিকেটার। ওর অভাব অনুভূত হবে। তবে চোটের জন্য টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও খেলতে পারেনি। বিশ্বকাপের আগে ঝুঁকি নেওয়া যায় না। হয়তো পরের দিকে সেরে যেত। কিন্তু আমাদের পক্ষে অপেক্ষা করা সম্ভব ছিল না। তবে অন্যদের জন্য এটা বড় সুযোগ। ম্যাথু শর্ট বিগ ব্যাশে দুর্দান্ত খেলেছে। বোলিংও করে। ওর জন্য নিজেকে প্রমাণ করার বিরাট মঞ্চ।
প্রশ্ন: প্রায় তিন বছর পর আইপিএলে হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে ফর্ম্যাট ফিরছে। হোমগ্রাউন্ডে খেলার সুযোগকে কীভাবে দেখছেন?
জাফর: সমর্থকদের জন্য দারুণ খবর। ক্রিকেটারদের হয়তো যাতায়াতের ধকল থাকবে। তবে রোমহর্ষক একটা টুর্নামেন্ট হবে। সব দলই চায় ঘরের মাঠের সমর্থকদের সামনে খেলতে। সেই স্বপ্নপূরণ হবে।
প্রশ্ন: এবারের আইপিএলে কে হতে পারেন পাঞ্জাব কিংসের এক্স ফ্যাক্টর?
জাফর: লিয়াম লিভিংস্টোনকে শুরুর দিকে পাওয়া যাবে না। তবে ও ম্যাচের রং পাল্টে দিতে পারে। শিখর ধবন, স্যাম কারানরাও আছে।
প্রশ্ন: গত ১৫ বার আইপিএলে ট্রফিহীন থাকতে হয়েছে। এটা কি বাড়তি চাপ?
জাফর: চাপ তো থাকবেই। সব দলের ওপরই চাপ আছে। তবে গতবারও আমরা ভাল খেলেছিলাম। আশা করছি এবার ইতিহাস পাল্টাতে পারব।
প্রশ্ন: এবার আইপিএলে যুক্ত হয়েছে ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার নিয়ম। আপনাদের তুরুপের তাস কে হবে?
জাফর: সেভাবে তালিকা তৈরি করা নেই। পরিস্থিতি আর প্রতিপক্ষ অনুযায়ী ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার নির্বাচন করা হবে। ১১ জনের বদলে ম্যাচে যুক্ত থাকবে ১২ জন। টসের পর দল জানানো যাবে। খুব রোমাঞ্চকর নিয়ম। এতে টস অতটা ফ্যাক্টর হবে না। নিয়মটা কাজে লাগাতে হবে।