সন্দীপ সরকার, কলকাতা: মহেন্দ্র সিংহ ধোনি (MS Dhoni) কি কেরিয়ারের শেষ আইপিএল খেলছেন?


যাঁর টেস্ট অবসর নিয়ে সতীর্থরাও অন্ধকারে ছিলেন, যাঁর ওয়ান ডে ও টি-টোয়েন্টি কেরিয়ারে ইতি টানা নিয়ে কাকপক্ষীও আগাম টের পায়নি, তাঁর আইপিএল কেরিয়ারের হদিশ কেই বা দিতে পারে!


তবে ধোনি-বন্দনায় বাংলার ক্রিকেটপ্রেমীরা তৈরি হচ্ছেন। যেন ধরেই নেওয়া হচ্ছে যে, ইডেনে হয়তো শেষবারের মতো খেলতে দেখা যাবে ক্যাপ্টেন কুলকে। আর তাই ধোনি-দর্শনের জন্য হুড়োহুড়ি চলছে।


কীরকম সেই উন্মাদনার পারদ?


রবিবার, ২৩ এপ্রিল ইডেনে চেন্নাই সুপার কিংস বনাম কলকাতা নাইট রাইডার্স ম্যাচ। এখন জনসাধারণের জন্য আইপিএলের যা টিকিট বিক্রি হয়, সবই অনলাইনে। যেদিন অনলাইনে কেকেআর বনাম সিএসকে ম্যাচের টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছিল, সেদিন ২-৩ ঘণ্টার মধ্যে তা নিঃশেষ হয়ে যায়। জটায়ুর ভাষায়, সেলিং লাইক হট কচুরিস।


তারপর থেকেই টিকিটের জন্য হাহাকার। কমপ্লিমেন্টারি টিকিট? সিএবি কর্তারা শুনলে আঁতকে উঠবেন। মনে হবে, কেউ যেন শব্দটি শোনেননি। বেশ, তবে দামের টিকিট? সিএবি কর্তারা পাল্টা প্রশ্ন করছেন, আছে আপনার কাছে? থাকলে দিন, পয়সা দিয়ে কিনব। ময়দানের বিভিন্ন ক্লাবের কর্তাদের অভিমানী চোখ-মুখ। কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে, কে বেশি টিকিট তুলে নিয়েছে আর কে টিকিট পায়নি। একে অপরকে দোষারোপ, যুক্তি, পাল্টা যুক্তি। সিএবি কর্তাদের কেউ কেউ হোয়াটসঅ্যাপ স্টেটাস দিয়ে রেখেছেন, নো রিকোয়েস্ট ফর আইপিএল টিকিট প্লিজ। অনেকেই পারলে মোবাইল ফোন বন্ধ করে রাখেন। শুক্রবার, ম্যাচের দুদিন আগেই অনেক সিএবি কর্তাকে সন্ধ্যার পর নিজেদের ঘরে পাওয়া গেল না। এক কর্তা তো দরজা ঠেলে ঢুকলেই হাত তুলে দিচ্ছেন। মাফ করবেন, হাত একেবারে ফাঁকা। সাক্ষাৎপ্রার্থী যে টিকিটের খোঁজে আসেননি, সেটা যেন বিশ্বাসই করানো যাচ্ছে না।


টানা তিন ম্যাচ হেরে রবিবার ইডেনে নামবেন নাইটরা। তবু উন্মাদনার কমতি নেই। কানায় কানায় ভরে যাবে গ্যালারি। ধোনি-দর্শনের সুযোগ কেউ হারাতে চাইছেন না। এমনকী, ন্যূনতম সাড়ে সাতশো টাকার টিকিটের জন্য হাজার দুয়েক টাকা দিতে রাজি হয়ে যাচ্ছেন অনেকেই।



আর সেই ম্যাচে সবচেয়ে বড় কাঁটা হতে পারে প্রকৃতি। কলকাতা-সহ গোটা বাংলায় তীব্র দাবদাহ চলছিল। তবে সপ্তাহান্তে স্বস্তির বৃষ্টি নামতে পারে শহরে। শুক্রবার বিকেলেও দু-এক ফোঁটা ঝরল। আকাশের মুখ ভার। বৃষ্টির আশঙ্কায় গোটা মাঠ ঢেকে রাখা হয়েছে। যাতে ম্যাচের আগে দু-এক পশলা ঢাললেও মাঠ বা পিচ কোনওভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।


মঞ্চ প্রস্তুত। শুধু নায়কের প্রবেশের অপেক্ষা। শনিবার বিকেলে শহরে পৌঁছে যাচ্ছেন ধোনি। গ্যালারিতে রবিবার হলুদ রংয়ের ঢেউ উঠতে পারে। ধোনির সমর্থনে এতই উদ্দামতা কাজ করছে বঙ্গ ক্রিকেটপ্রেমীদের।


সকলের শুধু একটাই মিলিত প্রার্থনা। প্রকৃতির রোষে যেন বাইশ গজের দ্বৈরথ পণ্ড না হয়।


আরও পড়ুন: হলুদ শাড়িতে কলকাতা-দিল্লির দ্বৈরথ দেখতে মাঠে হাজির সোনম, রইলেন অ্যাপেলের সিইও