রোগা ছিপছিপে চেহারা। এই ছেলে আবার ক্রিকেট খেলতে পারবে নাকি? সে তো অনেক পরিশ্রমের খেলা। তার থেকে দাবাটাই ওর জন্য ঠিক আছে। ঘরোয়া ক্রিকেট খেলার সময় থেকই এমন অনেক খোঁচা হজম করতে হয়েছিল তাঁকে। চৌষট্টি খোপের কারিকুরিতে তিনি ওস্তাদ। কিন্তু মন যে মাঠের ২২ গজে পড়ে। তাই কে কি বলছেন, তা নিয়ে বেশি ভাবতে চাননি যুজবেন্দ্র চাহাল। শুরু করেছিলেন ক্রিকেট খেলা। জাতীয় দলের জার্সিতে কুড়ির ফর্ম্যাটে সর্বাধিক উইকেট শিকারি আগেই হয়েছিলেন। আর গতকাল কেকেআরের বিরুদ্ধে ম্যাচের পর আইপিএলের ইতিহাসেও এখন সর্বোচ্চ উইকেটের মালিক হরিয়ানার এই লেগস্পিনার। 


আইপিএলে এতদিন পর্যন্ত সর্বাধিক উইকেট ছিল ডোয়েন ব্র্যাভোর। ১৬১ ম্যাচে ১৮৩ উইকেট নিয়েছিলেন। গত বছর ১২ মে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে শেষ আইপিএল ম্যাচ খেলেছিলেন ব্র্যাভো। ঠিক এক বছরের মাথায় গতকাল ১১ মে সেই রেকর্ড ভেঙে দিলেন চাহাল। কেকেআরের বিরুদ্ধে নিজের ৪ ওভারের কোটা পূরণ করে ২৫ রান খরচ করার বিনিময়ে ৪ উইকেট তুলে নেন চাহাল। বেঙ্কটেশ আইয়ার, নীতিশ রানা, রিঙ্কু সিংহ ও শার্দুল ঠাকুরকে ফেরান তিনি। ব্র্যাভোর থেকে অনেক কম ম্যাচ খেলেছেন চাহাল। ১৪৩ ম্যাচ খেলে এখনও পর্যন্ত তাঁর শিকার ১৮৭ উইকেট।


২০০৯ সালে জাতীয় অনূর্ধ্ব ১৯ কোচবিহার ট্রফিতে ৩৪ উইকেট নিয়ে প্রথম সবার নজরে আসেন চাহাল। মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে ২০১৩ সালে প্রথমবার আইপিএলে অভিষেক। সেই মরসুমে একটি ম্যাচ খেলে ৩৪ রান খরচ করলেও কোনও উইকেট পাননি। এর পরের বছরই আরসিবি নিলাম থেকে তুলে নেয় চাহালকে। ২০২২ পর্যন্ত বিরাট শিবিরের অংশ ছিলেন তিনি। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। আইপিএলে ভাল পারফরম্যান্স জাতীয় দলেও ডাক চলে আসে ২০১৬ সালে। সেই থেকে সীমিত ওভারের ফর্ম্যাটে প্রায় নিয়মিত সদস্য তিনি। গত মরসুমে আইপিএলে হ্যাটট্রিক করেছিলেন কেকেআরের বিরুদ্ধে। এমনকী গত মরসুমের পার্পল ক্যাপ জয়ীও ছিলেন চাহালই। ১৭ ম্যাচ থেকে ২৭ উইকেট ঝুলিতে পুরেছিলেন তিনি। 


ব্র্যাভো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন। আইপিএলেও আর খেলেন না। চাহালকে টপকানোর সুযোগ তাঁর নেই। অন্যদিকে তৃতীয় স্থানে থাকা পীযূশ চাওলা ১৭৬ ম্যাচে ১৭৪ উইকেটের মালিক। বয়সের যা ফারাক তাতে চাহালকে ছােঁয়া হয়ত মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের স্পিনারের পক্ষেও সম্ভব নয়। 


চলতি আইপিএলেও পার্পল ক্যাপ জেতার দৌড়ে সবার আগে রয়েছেন ৩২ বছরের এই বোলার। ১২ ম্যাচ ২১ উইকেট তুলে নিয়েছেন ইতিমধ্যেই। রাজস্থানকে খেতাব জেতানোর পাশাপাশি বেগুনি টুপি জয়ের সুবর্ণ সুযোগ রয়েছে চাহালের সামনে। তিনি কি পারবেন? কি মনে হয় আপনার?                  এবিপি লাইভ