কলকাতা: ঘরের মাঠে গুজরাত টাইটান্সের বিরুদ্ধে হেরে কলকাতা নাইট রাইডার্সের প্লে-অফে পৌঁছনোর পথ আরও কঠিন হল। রবিবার মুম্বই ইন্ডিয়ান্স বনাম রাজস্থান রয়্যালসের ম্যাচ রোহিত শর্মাকে উৎসর্গ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পল্টন ম্যানেজমেন্ট।
কেকেআরের হার
চার বছর আগে ওয়ান ডে বিশ্বকাপে তাঁকে জাতীয় দলে নেওয়া নিয়ে কম সমালোচনা হয়নি। বলা হয়েছিল, তিনি নাকি থ্রি ডি প্লেয়ার। যা নিয়ে অম্বাতি রায়ডু সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন। ট্যুইট করেছিলেন, আমি থ্রি ডি চশমা পরে সিনেমা দেখি। ক্রিকেট খেলি না...
সেই থ্রি ডি শো ফ্লপ হয়েছিল। জাতীয় দল থেকে ছাঁটাই হয়ে গিয়েছিলেন বিজয় শঙ্কর (Vijay Shankar)। এবারের আইপিএলে যাঁর পুনর্জন্ম হয়েছে। শনিবার ইডেনে (Eden Gardens) যিনি কেকেআরের (KKR vs GT) ঘাতক হয়ে হাজির হলেন।
শনিবার টসের পরই আকাশ কালো করে বৃষ্টি নামে ইডেনে। ভরদুপুরে যেন রাতের আঁধার। বৃষ্টি থামার পর নির্ধারিত সময়ের ৪৫ মিনিট পর শুরু হয় ম্যাচ। যে ম্যাচে নাইট শিবিরকে অন্ধকারে ডোবাল বিজয় শঙ্করের ব্যাট। শুরুতে ব্যাটিং করে কেকেআর তুলেছিল ১৭৯/৭। ১৩ বল বাকি থাকতে মাত্র ৩ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যপূরণ করল গুজরাত। ২৪ বলে অপরাজিত ৫১ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেললেন শঙ্কর। ১৮ বলে অপরাজিত ৩২ রান করে তাঁকে সঙ্গত করলেন ডেভিড মিলার।
রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ জিতল সানরাইজার্স
ফিলিপ সল্ট ও মিচেল মার্শের দুরন্ত ব্যাটিং দাপটের পরও শেষল্যাপ টপকাতে পারল না দিল্লি ক্যাপিটালস (Delhi Capitals)। টি নটরাজন, ভুবনেশ্বর কুমারদের দাপটে ৯ রানে ম্যাচ জিতল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ (Sunriser Hydrabad)। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে অভিষেক শর্মা ( ৬৭) ও হেনরিখ ক্লাসেনের (৫৩) জোড়া অর্ধশতরানে ভর করে নির্ধারিত ২০ ওভারের শেষে ৬ উইকেটে ১৯৭ রান তোলে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। জবাবে দারুণভাবে মাঝপথে এগোতে থাকলেও শেষপর্যন্ত ৬ উইকেটে ১৮৮ রানেই থেমে যায় দিল্লির ইনিংস। বিফলে যায় ফিলিপ সল্ট (৫৯) ও মিচেল মার্শের দুরন্ত (৬৩) জোড়া অর্ধশতরান ও ১১২ রানের পার্টনারশিপ। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ব্যর্থ হন দিল্লির অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নার (০)। এবারের আইপিএলে আট নম্বর ম্যাচে এটি দিল্লির ষষ্ট হার। অপরদিকে, ৮ ম্যাচে তৃতীয় জয় হায়দরাবাদের।
রোহিতকে ম্যাচ উৎসর্গ
গত মরসুমের হতাশাজনক পারফরম্যান্সের পর এ মরসুমে তুলনামূলক ভাল খেলছে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স (Mumbai Indians)। গত দুই ম্যাচ হারলেও, তার আগে পরপর তিনটি ম্যাচ জিতেছিল পল্টনরা। কাল জয়ের সরণিতে ফিরতে ঘরের মাঠে লিগ শীর্ষে থাকা রাজস্থান রয়্যালসের মুখোমুখি হতে চলেছে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স (MI vs RR)। এই ম্যাচটি দলের অধিনায়ক রোহিত শর্মার (Rohit Sharma) জন্য বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ হতে চলেছে।
রবিবার, ৩০ এপ্রিলই ৩৬-এ পা দেবেন রোহিত। মুম্বইকে রেকর্ড পাঁচ পাঁচবার আইপিএল খেতাব জেতানো রোহিত সদ্যই সপ্তাহখানেক আগে দলের অধিনায়ক হিসাবেও এক দশক পূর্ণ করেছেন। এই উপলক্ষ্যে রবিবারের ম্যাচটি দলের অধিনায়ককে উৎসর্গ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ম্যানেজমেন্ট। নিজেদের সোশ্যাল মিডিয়াতে এই সিদ্ধান্তের কথা সরকারিভাবে ঘোষণাও করেছে মুম্বই।
আরও পড়ুন: শরীরচর্চার সময় আচমকাই 'অ্যাজমা অ্যাটাক'! এই সমস্যা এড়াতে কী কী নিয়ম মেনে চলবেন?
ইডেনে হাজির ঋদ্ধির গুরু
ছাত্র খেলছে ইডেন গার্ডেন্সে (Eden Gardens)। আর তিনি শৈশবের গুরু হয়ে শিলিগুড়িতে বসে থাকবেন, তা আবার হয় নাকি! অগত্যা ছাত্রের খেলা দেখতে ইডেন গার্ডেন্সে হাজির হয়ে গেলেন জয়ন্ত ভৌমিক (Jayanta Bhowmick)। সঙ্গে শিলিগুড়ির কয়েকজন বন্ধু। ক্লাব হাউসের আপার টিয়ারে বসে নীরবে খেলা দেখে গেলেন জয়ন্ত।
পরিচয় করিয়ে দেওয়া যাক। জয়ন্ত হলেন ঋদ্ধিমান সাহার শৈশবের কোচ। গোটা ময়দান যাঁকে চেনে ভাইদা নামে। শনিবার ইডেনে কলকাতা নাইট রাইডার্স বনাম গুজরাত টাইটান্স ম্যাচ চলাকালীন তাঁকে দেখা গেল ক্লাব হাউসের আপার টিয়ারে। এবিপি লাইভকে জয়ন্ত বললেন, 'এই ম্যাচটা দেখতে আসার পরিকল্পনা ছিল না। আচমকাই ঠিক করি আসব। কয়েকজন বন্ধুও আসবে বলে জানায়। শুক্রবার রাতে কলকাতায় এসেছি। পাপালি (ঋদ্ধির ডাকনাম)-কেও কিছু জানাইনি। আজ থাকব। কাল শিলিগুড়ি ফিরে যাব।'
রশিদের মাইলস্টোন
বল হাতে ব্যাটারদের নাস্তানাবুদ করতে তাঁর জুড়ি মেলা ভার। এবার তবে মাঠে নামার সঙ্গে সঙ্গেই নজির গড়লেন রশিদ খান। আইপিএলে আজ কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিরুদ্ধে খেলতে নেমেছে গুজরাত টাইটান্স। ইডেনে সেই ম্য়াচে মাঠে নেমেই একশো আইপিএল ম্যাচ খেলার মাইলস্টোন ছুঁয়ে ফেললেন আফগান স্পিনার। উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে প্রথমবার আইপিএলে খেলেছিলেন রশিদ।
আইপিএলে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে ২০২১ সাল পর্যন্ত খেলেছিলেন রশিদ। ২০২২ সাল থেকে গুজরাত টাইটান্সের হয়ে খেলছেন তারকা লেগি। ৯৯ ম্য়াচে ১২৬ উইকেট ঝুলিতে পুরেছেন রশিদ। ২০.৩১ গড়ে বোলিং করেছেন তিনি। ইকনমি রেট ৬.৫০। সেরা বোলিং ফিগার ৪/২৪। শুধু বল হাতেই নয়, ব্য়াট হাতেও উল্লেখযোগ্য কিছু ম্যাচ খেলেছেন রশিদ। ৩২৬ রান করেছেন তিনি। গড় হয়ত বলার মত নয়, কিন্তু ১৫৪-র ওপর স্ট্রাইক রেটে ব্যাটিং করেছেন তিনি। সর্বোচ্চ ব্য়ক্তিগত ৪০।
২০১৮ মরসুমে সেরা পারফরম্যান্স ছিল রশিদের আইপিএলে। ১৭ ম্যাচে ২১ উইকেট নিয়েছিলেন সেবার। সেবার ২১ রানের বিনিময়ে ৩ উইকেট নিয়েছিলেন একটি ম্যাচে। এবারও এখনও পর্যন্ত ১৪ উইকেট ঝুলিতে পুরেছেন তিনি গুজরাতের হয়ে।
আরও পড়ুন: টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে নামার আগে কাউন্টিতে ফের সেঞ্চুরি হাঁকালেন পূজারা