কলকাতা: এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা হয়নি। কিন্তু ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (BCCI) বিশ্বস্ত সূত্রের খবর, আইপিএলের (IPL) সম্প্রচার স্বত্ব এবার বিক্রি হতে চলেছে রেকর্ড পরিমাণ অর্থে।
২০২৩ থেকে ২০২৭, পাঁচ বছরের জন্য় আইপিএলের টেলিভিশন ও ডিজিটাল স্বত্ব বিক্রি করতে চেয়ে ই-নিলামের আয়োজন করেছিল বিসিসিআই। সূত্রের খবর, শুধু ভারতীয় উপমহাদেশে টিভি স্বত্বের সর্বোচ্চ দর উঠেছে ম্যাচ প্রতি ৫৭ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা। অর্থাৎ, শুধু ভারতীয় উপমহাদেশে আইপিএলের প্রত্যেক ম্য়াচ টেলিভিশনে সম্প্রচারের জন্য বোর্ডের রোজগার হবে সাড়ে ৫৭ কোটি টাকা।
এখানেই শেষ নয়। সূত্রের খবর, ভারতীয় উপমহাদেশে আইপিএলের প্রত্যেক ম্য়াচ ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে সম্প্রচারের জন্য সর্বোচ্চ দর উঠেছে ৪৮ কোটি টাকা।
সব মিলিয়ে শুধুমাত্র আইপিএলের টিভি ও ডিজিটাল স্বত্ব বিক্রি করে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড ম্যাচ প্রতি রোজগার করতে পারে ১০৫ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা। ক্রিকেটের যে কোনও টুর্নামেন্টে যা রেকর্ড অর্থ তো বটেই, ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ, এনএফএলের মতো বিশ্বের সবচেয়ে দামি টুর্নামেন্টগুলির সঙ্গে একই আসনে বসে পড়তে চলেছে আইপিএল।
মাস দুয়েক আগের ঘটনা। আইপিএলের প্রথম সপ্তাহে টেলিভিশন ও ডিজিটাল মাধ্যমে দর্শকসংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গিয়েছিল। যা নিয়ে রীতিমতো তোলপাড় পড়ে যায়। বিভিন্ন মহলে আলোচনা শুরু হয়ে যায়, তাহলে কি জনপ্রিয়তা হারাচ্ছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের জমকালো টুর্নামেন্ট?
যদিও অবিচল ছিলেন বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। জানিয়েছিলেন, প্রথম সপ্তাহে দর্শকসংখ্যা কমায় তিনি উদ্বিগ্ন নন। সৌরভ এ-ও বলেছিলেন যে, টুর্নামেন্টের পরের দিকে দর্শক সংখ্যার এই খামতি দূর হয়ে যাবে।
বাস্তবে দেখাও গিয়েছিল সেই ছবি। আমাদের কলকাতায় বুকেই হয়েছিল আইপিএলের দুটি প্লে অফ ম্যাচ। এবং, সেখানে ঘরের দল কলকাতা নাইট রাইডার্স খেলেনি। প্লে অফের যোগ্যতাই অর্জন করতে পারেনি কেকেআর। কিন্তু তবু সেই জোড়া প্লে অফ ম্যাচ দেখতে উপচে পড়েছিল ইডেন। কানায় কানায় ভরে গিয়েছিল স্টেডিয়াম।
আমদাবাদের নবনির্মিত নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে আইপিএল ফাইনাল দেখেছিলেন রেকর্ড সংখ্যক দর্শক। স্টেডিয়ামেই প্রায় ১ লক্ষ ২০ হাজার মানুষ ম্যাচ দেখেছিলেন। এর সঙ্গে টিভি ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের দর্শকসংখ্যা ধরলে বেশ চমকে ওঠার মতো পরিসংখ্যান।
আগামী পাঁচ বছরের জন্য় আইপিএলে ম্যাচ পিছু টিভি স্বত্বের ন্যূনতম দর রাখা হয়েছিল ৪৯ কোটি টাকা। ই-নিলামে সেই দর ছাপিয়ে গিয়ে শেষ পর্যন্ত অঙ্কটা পৌঁছেছে সাড়ে ৫৭ কোটি টাকায়।
আগামী মরসুম থেকে প্রত্যেক আইপিএলে ৭৪টি করে ম্যাচ হবে। হিসেব করে দেখা যাচ্ছে, টিভি ও ডিজিটাল স্বত্ব মিলিয়ে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের মোট আয় হতে পারে ৩৯ হাজার ৩৫ কোটি টাকা। যা আগেরবারের আয়ের চেয়ে ১৩৯ শতাংশ বেশি। সব মিলিয়ে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের ক্রিকেট প্রশাসন যে বড়সড় চমক দিল, বলার অপেক্ষা রাখে না।
আরও পড়ুন: কার্তিকের আগে অক্ষরকে ব্যাটিং! পন্থের নেতৃত্ব নিয়েই প্রশ্ন গাওস্কর-স্মিথদের