বেঙ্গালুরু: দিনটা ছিল উৎসবে, উল্লাসের। ১৮ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে আইপিএল ট্রফি উঠেছিল বিরাট কোহলির হাতে। আগের রাতেই খেতাব জিতেছিল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (Royal Challengers Bengaluru)। শহরে ফিরেছিল বিজয়ী দল। চারিদিকে বাঁধনভাঙা উচ্ছ্বাস। তবে সেই আনন্দ, উচ্ছ্বাস, মুহূর্তেই বদলে যায় হতাশায়। কোহলিদের এক ঝলক দেখার হুড়োহুড়িতে ৪ জুন মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন ১১জন আরসিবি সমর্থক। আরসিবির বিজয়োল্লাসে (RCB Victory Parade) আহত হন শয়ে শয়ে মানুষ।
এই ঘটনার জেরে পরবর্তীতে গ্রেফতার হন মার্কেটিং প্রধান নিখিল সোসালেসহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়। চাকরি যায় অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বিকাশ কুমার বিকাশসহ তিন পুলিশ কর্তার। তিনিই এর বিরুদ্ধে ৫ জুন এক পিটিশন দায়ের করেছিলেন। এই পিটিশনের ভিত্তিতে সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিসট্রেটিভ ট্রাইবুনাল গোটা বিষয়টি বিচার করে আরসিবিকেই প্রাথমিকভাবে দায়ী করে। পুলিশকে এই ঘটনার দায় থেকে মুক্ত করে আরসিবিকে ভর্ৎসনা করে ক্যাট। আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজির এই গোটা বিষয়ে পুলিশের সঙ্গে ঠিকঠাকভাবে পরামর্শ না করার ফলেই এই ঘটনা হয়েছে বলে জানানো হয়। পুলিশের তরফে মাত্র ১২ ঘণ্টায় সবটা সঠিকভাবে আয়োজন করা সম্ভবপর নয় বলেও ট্রাইবুনালের তরফে জানানো হয়।
ট্রাইবুনালের তরফে জানানো হয়, 'তিন থেকে পাঁচ লক্ষ সমর্থকদের এই সমাগমের জন্য প্রাথমিকভাবে আরসিবিই দায়ী। আরসিবি পুলিশের থেকে না সঠিকভাবে অনুমতি নিয়েছিল, না তাদের মতামতের তোয়াক্কা করে। হঠকারিতায় সোশ্যাল মিডিয়ায় তারা একটি পোস্ট করে দেয় এবং সেই পোস্টের জেরেই এত মানুষ জড়ো হন। ৪ জুন সময়ের অভাবের জন্য পুলিশ ঠিকঠাক ব্যবস্থা করতে পারেনি। যথাযোগ্য সময়টাই তো তাদের দেওয়া হয়নি।'
এরপর আরও কড়া ভাষায় বলা হয় পুলিশের কাছে আদালিনের প্রদীপ নেই, তারাও মানুষ। 'পুলিশ আধিকারিকরাও মানুষ। ওরা ভগবান বা জাদুকর নয়। ওদের কাছে আলাদিনের প্রদীপের জিনও নেই যে প্রদীপ ঘষলেই সবটা জাদুর মতো হয়ে যাবে।' দাবি ট্রাইবুনালের। কর্ণাটক ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের তরফেও যে গোটা বিষয়টা পুলিশকে সঠিকভাবে জানানো হয়নি, সেটাও স্পষ্ট করে দেওয়া হয়।
এই সিদ্ধান্তের পর কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধারামাইয়া জানান যে তাঁরা সহমত নন এবং তাঁদের কাছে এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করারও বিকল্প রয়েছে। শেষমেশ তিনি এর বিরুদ্ধে আপিল করার সিদ্ধান্ত নেন কি না, সেটাই এবার দেখার বিষয় হতে চলেছে।