কে এই নবনীতা গৌতম?
আসুন পরিচয় করিয়ে দেওয়া যাক। নবনীতা রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের মাসাজ থেরাপিস্ট। তাঁকে নিয়ে হইচই পড়ে গিয়েছে কারণ, আরসিবির ইতিহাসে এর আগে কখনও কোনও মহিলা সাপোর্ট স্টাফ নিয়োগ করার ঘটনা ঘটেনি। আইপিএলের ইতিহাসেও মহিলা সাপোর্ট স্টাফ বিরল। ডেকান চার্জার্স একবার দুই মহিলাকে নিয়োগ করেছিল। অ্যাশলে জয়েস ও প্যাট্রিসিয়া জেনকিন্স। কিন্তু সেটা আইপিএলের একেবারে শুরুর দিকে। সেদিক থেকে দেখতে গেলে নবনীতাকে দলের মাসাজ থেরাপিস্টের দায়িত্ব দিয়ে ব্যতিক্রমী পদক্ষেপ করেছে আরসিবি কর্তৃপক্ষ।
আর সুন্দরী নবনীতা হয়ে দাঁড়িয়েছেন সকলের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু। আইপিএলে আরসিবির ম্যাচ চলাকালীন টিভি ক্যামেরায় দেখা যাচ্ছে, ডাগ আউটে ক্রিকেটারদের সঙ্গেই বসে রয়েছেন নবনীতা। ফিল্ডিং করতে গিয়ে কোহলির কাঁধে আঘাত লেগেছে? ডাক পড়ছে তাঁর। এ বি ডিভিলিয়ার্সের পেশিতে টান? দৌড়ে হাজির হচ্ছেন নবনীতা। দলের কেউ বাউন্ডারি মারলে, বোলাররা উইকেট নিলে উত্তেজিত হয়ে পড়ছেন। দলের রুদ্ধশ্বাস জয়ের পর দৌড়ে মাঠে ঢুকে ক্রিকেটারদের সঙ্গে ফিস্ট পাম্প করতেও দেখা যাচ্ছে এই সুন্দরীকে।
সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে আরসিবি শিবিরে খোঁজ নিয়ে জানা গেল, ভারতীয় বংশোদ্ভূত নবনীতা কানাডার নাগরিক। বছর তিনেক ধরে ভারতে অনেকটা করেই সময় কাটাচ্ছেন। বিভিন্ন দলের মাসাজ থেরাপিস্টের দায়িত্ব সামলেছেন তিনি। নবনীতা বলছেন, ‘আমার পরিবারের সকলে ক্রিকেটের ভক্ত। যদিও কানাডা ছেড়ে এখানে আসায় সকলের আপত্তি ছিল। তবে আমি সুযোগটা হাতছাড়া করতে চাইনি। পরিবারের সকলের সঙ্গে কথা বলি। সকলকে বোঝাতে সক্ষম হই। তারপরই এই দায়িত্ব গ্রহণ করা।’
নবনীতা নিজে ক্রিকেট অন্ত প্রাণ। জানিয়েছেন, ছোট থেকেই সব ধরনের খেলাধুলো ভালবাসেন। তবে সবচেয়ে পছন্দের খেলা হল ক্রিকেট। আরসিবির দায়িত্বই মাসাজ থেরাপিস্ট হিসাবে তাঁর প্রথম কাজ নয়। খেলার মাঠে পূর্ব অভিজ্ঞতাও রয়েছে। এর আগে বাস্কেটবল, ফুটবল টিমের দায়িত্ব সামলেছেন। কানাডায় ক্রিকেট দলের সঙ্গেও কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর।
কতটা চ্যালেঞ্জিং মাসাজ থেরাপিস্টের দায়িত্ব? আরসিবি-র ওয়েবসাইটে নবনীতা বলেছেন, ‘ভালবাসলে সব কাজই ভাল লাগে। আমিও অন্তর থেকে মাসাজ থেরাপিস্টের দায়িত্বটা পালন করি।’ মরুদেশে প্রবল গরমের মধ্যে খেলতে হচ্ছে ক্রিকেটারদের। শরীরের ধকল বেশি হচ্ছে। ক্লান্তি অনেক বেশি করে থাবা বসাচ্ছে। মাসাজ থেরাপিস্টের কাজও আরও কঠিন হয়ে গিয়েছে। নবনীতার কথায়, ‘ক্রিকেটারদের ফিট আর তরতাজা রাখতে সফট টিস্যু থেরাপি করাচ্ছি। শরীরের কোন পেশিগুলো বেশি সক্রিয় আর কোনগুলো কম, সেগুলো নির্দিষ্ট করে চিহ্নিত করে নিই। তারপর শুরু হয় আমার থেরাপি। প্রত্যেক খেলোয়াড়ের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা আলাদা হয়। আবার মাঠে কে কোন ভূমিকা পালন করে থাকে, তার ওপরও অনেক কিছু নির্ভর করে। যেমন ব্যাটসম্যানদের জন্য একরকম মাসাজ পদ্ধতি, বোলারদের জন্য আরেকরকম।’
আইপিএল, তাও আবার রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের অংশ হতে পারাটা নবনীতার কাছে স্বপ্ন সত্যি হওয়ার মতো। আরসিবি সূত্রে খবর, ব্যক্তিগতভাবে বিরাট কোহলির ভক্ত নবনীতা। বিরাটদের দলের দায়িত্ব নিতে তাই দুবার ভাবেননি। কানাডা থেকে উড়ে এসেছেন ভারতে।