চেন্নাই: একটা জয়ে যেন শাপমোচন। অনেক হিসেব নিকেশ বদলে নেওয়ার মঞ্চ। মঙ্গলবার মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে ৬ উইকেটে হারিয়ে অনেকগুলো অঙ্কের সমাধান করল দিল্লি ক্যাপিটালস। এক, ২০১০ সালের পর চেন্নাইয়ে কোনও আইপিএল ম্যাচ জিতল দিল্লি। দুই, মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে টানা ৫ ম্যাচ হারার পর অবশেষে জিততে সক্ষম হল দিল্লি। তিন, গতবার আইপিএলের ফাইনালে হারের মধুুর প্রতিশোধো নেওয়া গেল।


আর দিল্লির জয়ে বল হাতে যদি নায়ক হন অমিত মিশ্র, ব্যাটে তাহলে ভরসার নাম শিখর ধবন। পরপর দু'ম্য়াচে রান করলেন দিল্লির বাঁহাতি ওপেনার। আর মঙ্গলবার লো স্কোরিং ম্যাচে ৪২ বলে ৪৫ রান করে যেন দলের জয় কার্যত নিশ্চিত করে গেলেন ধবন। মুম্বইয়ের ১৩৭/৯ তাড়া করে ৪ উইকেট হারিয়ে ৫ বল বাকি থাকতে ম্যাচ জিতে গেল দিল্লি। 


একদিকে পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন দল। অন্যদিকে একবারও ট্রফি জয়ের স্বাদ না পাওয়া প্রতিপক্ষ। আরও তাৎপর্যপূর্ণ হচ্ছে, মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ও দিল্লি ক্যাপিটালস, দুই দলই গতবারের আইপিএলে ফাইনাল খেলেছিল। যে ফাইনালে শ্রেয়স আইয়ারদের স্বপ্নভঙ্গ ঘটিয়ে পঞ্চমবারের জন্য ট্রফি জেতে রোহিত শর্মার মুম্বই। চতুর্দশ আইপিএলে দুই দলের প্রথমবারের সাক্ষাতে প্রথমে ব্যাট করে মুম্বই। রোহিত শর্মা শুরুতেই ব্যাটে ঝড় তুলেছিলেন। স্বভাবসিদ্ধ আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে ব্যাট করে দিল্লি শিবিরে আতঙ্কের বার্তা পৌঁছে দিয়েছিলেন মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের অধিনায়ক। আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের জন্য যাঁর নামই হয়ে গিয়েছে 'হিটম্যান।' তবু প্রথমে ব্যাট করে খুব একটা স্বস্তিতে ছিল না মুম্বই। কারণ, অমিত মিশ্রর স্পিন জালে ঘায়েল মুম্বইয়ের বাকি ব্যাটসম্য়ানেরা। দিল্লির বিরুদ্ধে প্রথম ব্যাট করে মুম্বই আটকে গিয়েছিল ১৩৭/৯ স্কোরে।


রোহিত শর্মা ইনিংস ওপেন করতে নেমে ৩০ বলে ঝোড়ো ৪৪ রান করলেন। তিনটি চার ও তিনটি ছক্কা মেরেছেন মুম্বই অধিনায়ক। তাঁর বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের জন্য়ই শুরুতেই কুইন্টন ডি'ককের উইকেট হারালেও পাওয়ার প্লে-তে ওভারে দশ রান করে তুলেছে মুম্বই। তবু মুম্বইয়ের স্কোর দেড়শোও পেরল না। মাঝের ওভারে খেই হারাল মুম্বই ইনিংস। ঘাতক হয়ে হাজির হলেন অভিজ্ঞ লেগস্পিনার অমিত।


চার ওভারে মাত্র ২৪ রান খরচ করে ৪ উইকেট তুলে নিলেন হরিয়ানার লেগস্পিনার। তাঁর শিকারের তালিকায় রোহিত শর্মা, ঈশান কিষাণ, হার্দিক পাণ্ড্য ও কায়রন পোলার্ড। যে চারজনকে মুম্বই ব্যাটিংয়ের বিগহিটার মনে করা হয় এবং প্রত্যেক ম্যাচে প্রতিপক্ষ বোলারদের কাছে আতঙ্ক হিসাবে হাজির হন। এদিন অমিতের ঘূর্ণির সামনে অবশ্য কেউই সেভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলততে পারেননি। দু ওভারে মাত্র ১৫ রান দিয়ে দুটি উইকেট তুলে নিয়েছেন পেসার আবেশ খানও। মধ্যপ্রদেশের পেসারকে দেখে প্রাক্তনীরাও আশাবাদী। অনেকেই বলছেন, ভবিষ্যতে জাতীয় দলে খেলার মতো দক্ষতা রয়েছে আবেশের। রোহিত ছাড়া সূর্যকুমার যাদব (২৪), ঈশান (২৬) ও জয়ন্ত যাদব (২৩) ব্যাট হাতে কিছুটা লড়াই করেন।


জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই পৃথ্বী শ আউট হলেও ধবন ও স্টিভ স্মিথ (২৯ বলে ৩৩ রান) প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। ললিত যাদব ২৫ বলে ২২ রান করে অপরাজিত ছিলেন। শেষ পর্যন্ত শেষ হাসি তোলা ছিল ঋষভ পন্থদের জন্যই।