কলকাতা: লক্ষ্য অসম্ভব না হলেও, কঠিন ছিল। প্রথমবার আইপিএল (IPL) মঞ্চে নেমেই কোয়ালিফায়ার টু-তে ওঠার জন্য লখনউ সুপার জায়ান্টসের প্রয়োজন ছিল ২০৮ রান। লড়াই করেও কঠিন কাজ হাসিল করতে পারলেন না কে এল রাহুলরা। ফলে ইডেন থেকেই বেজে গেল লখনউয়ের বিদায়ঘণ্টা। ১৪ রানে ম্যাচ জিতে কোয়ালিফায়ার টু-তে জায়গা করে নিল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর। ফাইনালের টিকিট পেতে শুক্রবার রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে মাঠে নামবেন বিরাট কোহলি-ফাফ ডুপ্লেসিরা।


মঞ্চ সাজানো ছিল বিরাট কোহলির (Virat Kohli) জন্য। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ও আইপিএলে যাঁর শেষ সেঞ্চুরি ইডেনে (Eden Gardens)। পয়মন্ত মাঠে ফের রং ছড়াবেন কোহলি, ভরা ইডেনও যেন সেই স্বপ্নে বিভোর হয়েছিল।


কোহলি পারেননি। ইনিংস ওপেন করতে নেমে ২৪ বলে ২৫ রানে আউট হয়ে ফেরেন তিনি। কোহলির জন্য সাজানো মঞ্চে বুধবার দেখা গেল রজত-রাজ। তিন নম্বরে ব্যাট করতে নেমে ৫৪ বলে ১১২ রান করে অপরাজিত রইলেন মধ্যপ্রদেশের ব্যাটার রজত পাতিদার (Rajat Patidar)। মাত্র ৪৯ বলে সেঞ্চুরি সম্পূর্ণ করলেন। তাঁর সঙ্গে যোগ্য সঙ্গত করলেন দীনেশ কার্তিক (Dinesh Karthik। ২৩ বলে ৩৭ রানে অপরাজিত রইলেন ডিকে। এক সময় ইডেন ছিল যাঁর হোমগ্রাউন্ড। কলকাতা নাইট রাইডার্সের অধিনায়ক ছিলেন বলে ইডেনের নাড়িনক্ষত্র যাঁর নখদর্পণে।


অবিচ্ছেদ্য পঞ্চম উইকেটে ৪১ বলে ৯২ রান যোগ করেন রজত ও কার্তিক। শেষ ৫ ওভারে আরসিবি তুলল ৮৪ রান। যা ম্যাচের রং পাল্টে দিয়ে গেল। নির্ধারিত ২০ ওভারে আরসিবি তোলে ২০৭/৪। কে এল রাহুলদের সামনে জয়ের লক্ষ্য ছিল ২০৮ রানের। 


জবাবে ব্যাট করতে নেমে লড়াই করলেন রাহুল ও কিছুটা দীপক হুডা। দীপক ২৬ বলে ৪৫ রান করে আউট হলেও দলকে লড়াইয়ে রেখেছিলেন রাহুল। শেষ ২ ওভারে ম্যাচ জিততে লখনউয়ের দরকার ছিল ৩৩ রান। তখনও পর্যন্ত লড়াইয়ে ছিল লখনউ। তবে ঊনিশতম ওভারে পরপর ২ বলে রাহুল (৫৮ বলে ৭৯ রান) ও ক্রুণাল পাণ্ড্যকে তুলে নিয়ে লখনউয়ের স্বপ্নভঙ্গ ঘটান জস হ্যাজলউড। ১৯৩/৬ স্কোরে আটকে যায় লখনউ।


টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন লখনউয়ের অধিনায়ক কে এল রাহুল। চলতি আইপিএলে কার্যত ম্য়াচ জেতার ফর্মুলাই হয়ে দাঁড়িয়েছে, টস জেতো, বিপক্ষকে আগে ব্যাট করতে পাঠাও। তারপর রান তাড়া করো। এবারের আইপিএলের গ্রুপ পর্বের খেলা হচ্ছিল মহারাষ্ট্রের দুই শহর মুম্বই ও পুণেতে। সন্ধের পর থেকে শিশির পড়ছিল। তাই পরের দিকে বল গ্রিপ করতে সমস্যায় পড়ছিলেন বোলাররা। সব অধিনায়কই তাই চাইছিলেন শুরুতে ফিল্ডিং করে নিতে। এবং রান তাড়া করতে নেমে প্রতিপক্ষ বোলারদের শিশির সমস্যার ফায়দা তুলতে। কলকাতাতেও সেই নিয়মের ব্যতিক্রম হতে দেননি রাহুল।


লখনউয়ের বোলাররা শুরুটা করেছিলেন ভাল। শুরুতেই ফাফ ডুপ্লেসিকে (০) ফিরিয়ে দেন মহসিন খান। অল্প রানে ফেরেন কোহলিও। তবে ক্যাচ ফেলে ম্যাচ বিপক্ষের হাতে সাজিয়ে দেন লখনউ ক্রিকেটারেরা। রজতেরও ক্যাচ পড়ে দুবার। যার মাসুলও গুনতে হল লখনউ শিবিরকে। আবেশ খান, রবি বিষ্ণোই, সকলেই প্রচুর রান খরচ করেছেন।


বিরাট রান না পেলেও তাঁকে ঘিরে উন্মাদনা ছিল দেখার মতো। ম্যাচের শেষ ওভারে বিরাটকে ছুঁতে মাঠে দর্শকও ঢুকে যায়। শেষ পর্যন্ত ইডেন থেকে সুখস্মৃতি নিয়েই ফিরছেন কোহলি।


আরও পড়ুন: অরুণ টেস্ট অন্ত প্রাণ, আমার পছন্দ টি-২০ ও ওয়ান ডে, বলছেন সদ্যবিবাহিত বুলবুল