কলকাতাঃ ঝিরিঝিরি বৃষ্টি শুরু হয়ে গিয়েছে। ইডেনের গেটের বাইরে দাঁড়িয়ে প্রদীপ শীল। বয়স ৭০ ছুঁইছুঁই। বিদ্যুৎ বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত কর্মী। একটা সময় চুটিয়ে ক্রিকেট খেলতেন। সময়ের নিয়মে ও বয়সের ভারে সে সব এখন অতীত। কিন্তু ক্রিকেট আদ্যোপান্ত প্রাণ। পরিবারের আর্থিক অবস্থা খুব একটা ভাল নয়। তাই ইচ্ছে থাকলেও টিকিট কেটে আইপিএল ম্যাচ দেখতে আসার সামর্থ্য নেই। বার্ধক্য জনিত সমস্যা শরীরে বাসা বেঁধেছে। তবে ক্রিকেটে টানে ও বিশেষ করে আন্দ্রে রাসেলের টানে চলে এসেছেন ইডেনে। কিন্তু ভেতরে ঢুকবেন কীভাবে বুঝতে পারছিলেন না। প্রশ্ন করতেই বললেন, ''শুনেছি কলকাতা নাইট রাইডার্স নাকি প্র্যাক্টিস করছে। রাসেলকে আমার খুব ভাল লাগে। ওঁকে একবার দেখতে চাই...'' তিন বছর পর নিজেদের ঘরের মাঠে খেলতে নামবে কলকাতা নাইট রাইডার্স। যে দলের সবচেয়ে বড় ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর এখন আন্দ্রে রাসেলই। আট থেকে আশি, এখনও যে তাঁর ব্যাটিং তাণ্ডবের মজে তা আরও একবার বোঝা গেল। 


প্রথম দিনের অনুশীলনে তাঁর দেখা পাওয়া যায়নি। দ্বিতীয়দিন তাই সবার ফোকাস ছিল তাঁর দিকেই। তিনি এলেন, কিন্তু মাঠে নামতে পারলেন না। তিনি আর কেউ নন, কলকাতা নাইট রাইডার্সের প্রাণভোমরা আন্দ্রে রাসেল। আইপিএলের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে কেকেআর। তবে বৃষ্টি তাল কাটল অনুশীলনের ২ দিনই। যার জন্য পূর্ব নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী যাদবপুর ক্যাম্পাসের বদলে ইডেনের ইন্ডোরে চলল অনুশীলন।


 দিনের অনুশীলনে অবশ্য ইন্ডোরেই গা ঘামালেন ক্যারিবিয়ান সুপারস্টার। বেরিয়ে যাওয়ার সময় গুটিকয়েক সাংবাদিক ও শ খানেক নাইট সমর্থক। রাসেলকে দেখতে পেয়েই সমর্থকদের চিৎকার। সকাল থেকেই আকাশের মুখ ভার ছিল। বেলা বাড়তেই বৃষ্টি শুরু। তবুও প্রিয় দলের প্রিয় তারকা যখন শহরে, তখন তাঁকে দেখার তো বাড়তি টান থাকবেই। তাই বৃষ্টি উপেক্ষা করেই কিছু নাইট সমর্থক ইডেনে এসেছিলেন। কড়া বেষ্টনী টপকে আসা অসম্ভব। তাই দূর থেকেই রাসেলকে দেখে উল্লাসে ফেটে পড়েন তাঁরা। 

গতকাল থেকে প্রস্তুতি পর্ব শুরু করে দিয়েছে নাইট শিবির। রাসেল ছাড়াও শিবিরে যোগ দিয়েছেন রিঙ্কু সিংহ, নীতিশ রানা, ভেঙ্কটেশ আইয়ারও। গতকাল প্র্যাক্টিসে হালকা চোট পেয়েছিলেন। হাসপাতালেও নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু এদিন হাসিমুখেই দেখা গেল আইয়ারকে। চোট তেমন গুরুতর নয় বোঝা গেল। সুনীল নারাইন এখনও আসেননি। সূত্রের খবর, আগামী ২৫ মার্চ হয়ত দলের সঙ্গে যোগ দেবেন তিনি।