সন্দীপ সরকার, কলকাতা: আপনি শরীর সচেতন? রোজ নিয়ম করে শরীরচর্চা করেন? তাহলে নিশ্চয়ই তা করেন সাতসকালে, কিংবা সন্ধ্যায় অফিস থেকে ফিরে হাজির হয়ে যান জিমে। ঘণ্টা খানেকের কসরত করে তারপর যেন স্বস্তি। চিকিৎসকেরাও বলে থাকেন, রোগভোগ কমাতে, সুস্থ থাকতে নিয়মিত শরীরচর্চা ভীষণ জরুরি।
খেলা আপনার পেশা হলে তো কথাই নেই। শরীরসাধনায় আরও কড়াকড়ি। নিয়ম মেনে পারলে দুবেলা শারীরিক কসরত। সঙ্গে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনে পরিমিত, স্বাস্থ্যকর আহার। তাতেই থাকবেন সুপারফিট। আর ফিট হ্যায় তো হিট হ্যায়... খেলোয়াড়েরা যে মন্ত্র মেনে চলেন অক্ষরে অক্ষরে।
কিন্তু তাই বলে সারারাত জেগে ঘাম ঝরানো, তারপর সকালের সূর্য দেখে বিছানায় যাওয়া! এমন অদ্ভূত নিয়ম মেনে চলছেন কোনও অ্যাথলিট, কার্যত শোনাই যায় না।
তবে সকলের কাছে যা বেশ ব্যতিক্রমী, ভারতের মাটিতে আন্দ্রে রাসেলের (Andre Russell) কাছে সেটাই রোজনামচা। ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের অলরাউন্ডার সারারাত জেগে শরীরচর্চা করেন। দিনের আলো ফুটলে ঘুমোতে যান। দুপুরে ঘুম থেকে উঠে সারেন ‘ব্রেকফাস্ট’। তারপরই হাজির হয়ে যান মাঠে। বিধ্বংসী মেজাজে বল ওড়াতে থাকেন গ্যালারিতে।
আইপিএলে (IPL 2024) রাসেল খেলেন শাহরুখ খান-জুহি চাওলার দল কলকাতা নাইট রাইডার্সে (KKR)। কলকাতাই ক্যারিবিয়ান তারকার সেকেন্ড হোম। গত শনিবার সকালে মায়ামি থেকে দুবাই হয়ে শহরে পৌঁছেছেন রাসেল। সেদিন সন্ধ্যা থেকেই ইডেনে নেমে পড়েছেন প্র্যাক্টিসে। রোজই নিয়ম করে বোলারদের শাসন করছেন মাসল-রাসেল। পেসার হোক বা স্পিনার, নেটেও রেয়াত পাচ্ছেন না রাসেলের ব্যাটের চাবুক থেকে।
যা দেখে আইপিএল (IPL) শুরু হওয়ার আগে স্বস্তিতে নাইট শিবির। দলের অন্যতম প্রধান ম্যাচ উইনার ছন্দে থাকা মানে বিপক্ষের ত্রাস হয়ে উঠবেন, একা হাতে বার পাল্টে দেবেন ম্যাচের রং, কেকেআর টিম ম্যানেজমেন্ট ভালই জানে। আর সেই কারণেই প্র্যাক্টিসে রাসেলের দাপট দেখে খুশি হচ্ছেন কোচ চন্দ্রকান্ত পণ্ডিত, মেন্টর গৌতম গম্ভীররা।
কোথা থেকে এত বড় বড় ছক্কা মারার শক্তি পান রাসেল? কেকেআর শিবির থেকে বলা হচ্ছে তাঁর অদ্ভুত এক স্বভাবের কথা। ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার ভারতে এসে বডি ক্লক পরিবর্তন করেন না। রাসেল ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের বাসিন্দা। ভারতের সময়ের সঙ্গে বিস্তর ফারাক। ভারতে যখন দিন, ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে রাত। ভারতে যখন রাত, ওয়েস্ট ইন্ডিজে দিন। ভারতে খেলতে এলে রাসেল অবশ্য নিজের দেশের সময় মেনে চলেন। সেই কারণে ভারতীয় সময় মাঝরাত পেরিয়ে জিমে কসরত করতে যান। সারারাত জেগে থাকেন। তারপর ভারতে যখন সকাল, তখন ঘুমোতে যান রাসেল। নিজের দেশে সেটাই যে বিশ্রাম নেওয়ার সময়।
কেকেআর শিবিরের একজন বলছিলেন, ‘রাসেল এখানে সারারাত জেগে থাকে। ভারতীয় সময় রাত সাড়ে তিনটে-চারটে নাগাদ জিমে যায়। সকাল ৬টা পর্যন্ত জিমে কসরত চলে। তারপর ঘরে ফিরে ঘুমোয়। দুপুর পর্যন্ত ঘুমোয় রাসেল। ঘুম থেকে উঠে খাবার খেয়ে প্র্যাক্টিসে চলে আসে। ম্যাচ থাকলেও একই রুটিন। ও বডি ক্লক পাল্টায় না। ওয়েস্ট ইন্ডিজের সময় মেনে চলে। আর তাতেই এত প্রাণশক্তি নিয়ে মাঠে নামে।’
প্র্যাক্টিসে রাসেলের ধ্বংসলীলা দেখে নাইট সমর্থকেরাও উচ্ছ্বসিত। বলাবলি হচ্ছে, ধন্য রাসেলের টাইম ম্যানেজমেন্ট।
আরও পড়ুন: বিরাটই ব্রহ্মাস্ত্র, আকাশ ছুঁতে পারে আকাশ, স্পিন বিভাগ আইপিএলে কাঁটা আরসিবির
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে