সন্দীপ সরকার, কলকাতা: তাঁকে নাকি নিলামে কিনতে চায়নি প্রীতি জিন্টার (Preity Zinta) দল পাঞ্জাব কিংস (Punjab Kings)! নাম নিয়ে বিভ্রান্তি? নাকি গলদ চাল? শুভমন গিলের (Shubman Gill) গুজরাত টাইটান্সের (GT vs PBKS) বিরুদ্ধে কার্যত হারা ম্যাচ পাঞ্জাব কিংসকে জিতিয়ে রাতারাতি নায়ক হয়ে গিয়েছেন সেই শশাঙ্ক সিংহ (Shashank Singh)। তাঁর বিধ্বংসী ইনিংস নিয়ে এখনও চলছে আলোচনা। প্রবল চাপের মুখে এত ঠান্ডা মাথায় ম্যাচ বার করলেন কীভাবে? নিজেই নিজেকে নিয়ে বলেন, 'আই অ্যাম দ্য বেস্ট।' এত আত্মবিশ্বাস পান কোথা থেকে? আইপিএলে (IPL 2024) রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ জিতিয়ে ওঠার পরের দিনই জুম কলে এবিপি লাইভের প্রশ্নের উত্তর দিলেন পাঞ্জাব কিংসের ক্রিকেটার।


নিজেকে নিজেই বলেন 'আই অ্যাম দ্য বেস্ট'


শশাঙ্ক বলছেন, 'যখন ব্যাটিং করতে যাই, ভাবতেই হবে আমিই বিশ্বের সেরা। আপনার সামনে যে বোলারই আসুক না কেন, সে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা কেউ হোক বা রঞ্জি ট্রফির বোলার, আপনাকে নিজের দক্ষতায় আস্থা রাখতেই হবে। তা নাহলে মানসিকভাবে দুমড়ে দেবে প্রতিপক্ষ। আমি ব্যাটিং করতে যাওয়ার সময় তাই সব সময় ভাবি, আমিই সেরা। মুম্বইয়ে এতদিন ক্রিকেট খেলেছি, ছত্তীসগড়ে খেলেছি। খেলে খেলেই এসেছে এই আত্মবিশ্বাস।'


নাম নিয়ে ভ্রান্তিবিলাস


তাঁকে নাকি ভুল করে নিলাম থেকে কিনে ফেলেছিল পাঞ্জাব কিংস? শশাঙ্ক বলছেন, 'ওরকম হয়েই থাকে। এমন কোনও ব্যাপার নয়। নিলামের পরের দিনই সঞ্জয় স্যরের (সঞ্জয় বাঙ্গার) ফোন এসেছিল। স্যর বলেছিলেন, তোমাকেই নিতে চেয়েছিলাম। আর পাঞ্জাব কিংস বরাবর ঘরোয়া ক্রিকেটারদের সুযোগ দিতে চেয়েছে। ঘরোয়া ক্রিকেটে ভাল খেললেই ওরা ডাকে। এবারও সাত-আটজন ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলা প্লেয়ার রয়েছে। আমার অন্তর্ভুক্তি নিয়ে কোনও সমস্যা হয়নি। ড্রেসিংরুমে হোক বা দলের অন্দরে কোনও খারাপ মুহূর্ত তৈরি হয়নি।'


কিংবদন্তি লারার মন্ত্র


সানরাইজার্স হায়দরাবাদে খেলেছেন এক সময়। সেখানে মেন্টর হিসাবে পেয়েছেন কিংবদন্তি ব্রায়ান লারাকে। শশাঙ্ক বলছেন, 'হায়দরাবাদের হয়ে ১০টি মতো ম্যাচ খেলেছিলাম। তার মধ্যে ৫টিতে ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেয়েছিলাম। ব্রায়ান লারা স্যর ব্যাটিং কোচ ছিলেন। সবাই জানেন কী বড় মাপের ব্যাটার উনি। আমার ব্যাটিং নিয়ে অনেক পরিশ্রম করেছেন। পাঞ্জাব কিংসে এসেও খুব সমর্থন পাচ্ছি। শিখি পাজি (শিখর ধবন), সঞ্জয় স্যর সকলে পাশে থেকেছে। প্রথম ম্যাচে শূন্য করে আউট হওয়ার পরেও সবাই বলেছিল, কিচ্ছু ভেবো না। পরের ম্যাচে মন দাও। দল পাশে রয়েছে। এটাই সেরাটা বার করে আনে।'


গুজরাতের বিরুদ্ধে কৌশল কী ছিল?


শশাঙ্ক বলছেন, 'ম্যাচের আগে কাটাছেঁড়া তো হয়ই। কে কীরকম বল করে, কোন লেংথে বল করে, ব্যাটাররা কীরকম শট খেলে, সব কিছু নিয়েই আলোচনা হয়েছিল। এই পিচে কীরকম শট খেলব, সেটা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। ম্যাচে আমি ব্যাট করতে নামার আগেও ভাবছিলাম, কোনদিকে শট খেলব। রশিদ খানকে কীভাবে সামলাব। নূর আমেদের বলে আমার বিরুদ্ধে আউটের আবেদন হয়েছিল। মানসিক প্রস্তুতি আগেই শুরু করে দিয়েছিলাম। তাতেই ফল পেয়েছি।'


চাপের মুখে শান্ত থাকার মন্ত্র


শশাঙ্কের কথায়, 'গান শুনি। মাঝে মধ্যে ক্রিকেট থেকে দূরে সরে থাকাটাও ভাল। মাঠে হারি বা জিতি, সেই ফল মাঠেই ফেলে আসি। ড্রেসিংরুমে পাঞ্জাবি গান চলে। ক্রিকেট নিয়ে অল্পবিস্তর আলোচনা হয়। সিনেমা, ওয়েব সিরিজ নিয়ে গল্প হয়। তাতে মনের দিকে থেকে হাল্কা, চাপমুক্ত থাকা যায়।'


দেখুন পুরো সাক্ষাৎকার নীচের লিঙ্কে ক্লিক করে



ম্যাচ জিতিয়ে উচ্ছ্বাস


গুজরাত টাইটান্সের বিরুদ্ধে উইনিং শট খেলেই ব্যাট সামনের দিকে ইঙ্গিত করে দৌড়ে যান শশাঙ্ক। স্পেশ্যাল কিছু? শশাঙ্ক বলছেন, 'আমার ওপর যারা বিশ্বাস রেখেছিল, তাদের উদ্দেশে বার্তা ছিল ওটা। আসলে ধন্যবাদ জানাচ্ছিলাম। আবেগ গ্রাস করছিল খুব। যারা আমার দক্ষতায় আস্থা রেখেছিল, তাদের জন্যই তো এই সাফল্য।'


আরও পড়ুন: কেকেআরের ড্রেসিংরুমে বরুণ-নারাইনদের সঙ্গে খুনসুটি শাহরুখের, কী বললেন বাজিগর?




আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।