হায়দরাবাদ: ডেকান চার্জার্স নাম দিয়ে শুরু হয়েছিল আইপিএলে (IPL 2024) পথ চলা। টুর্নামেন্ট শুরুর দ্বিতীয় বছরেই খেতাব জয়। কিন্তু ২০১২ সালে সান গ্রুপ এই দলের মালিকানা নেওয়ার পর ফ্র্যাঞ্চাইজির নাম বদলে হয় সানরাইজার্স হায়দরাদ (Sunrisers Hyderabad)। ২০১৬ সালে প্রথমবার ডেভিড ওয়ার্নের নেতৃত্বে আইপিএলে চ্যাম্পিয়ন হয় সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। 


শক্তি


অবশ্যই অজি পেসার প্যাট কামিন্সের অন্তর্ভূক্তি। অগাধ অভিজ্ঞতা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। গত বছর টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ও ওয়ান ডে বিশ্বকাপ জিতেছেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক হিসেবে। ভুবনেশ্বর কুমার ছাড়া সেভাবে অভিজ্ঞ পেস আক্রমণ ছিল না সানরাইজার্সের। কামিন্স দলে যোগ দেওয়ায় পেস বোলিং শক্তি বাড়বে নিঃসন্দেহে। উমরান মালিক ও টি নটরাজন রয়েছেন। গত উমরানের সবচেয়ে বড় সম্পদ। দীর্ঘকায় প্রোটিয়া বাঁহাতি পেসার মার্কো ইয়েনসেন রয়েছেন তালিকায়। ব্যাটিং অর্ডারে ট্রাভিস হেড, গ্লেন ফিলিপস ও হেনরিখ ক্লাসেন টি-টোয়েন্টি ফর্ম্য়াটের জন্য বিশ্ব ক্রিকেটের তিন গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটার। তিনজনই মারকাটারি ব্যাটিং করে থাকেন। এছাড়াও এইডেন মারক্রাম ও ময়ঙ্ক আগরওয়াল তো রয়েইছেন। এখনও পর্যন্ত যা টিম কম্বিনেশন তাতে ময়ঙ্ক ও হেডকেই হয়ত ওপেনিংয়ে দেখা যাবে। স্পিন বোলিং বিভাগে বিশ্বমানের লেগস্পিনার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা থাকছেন দলে। তিনি ম্য়াচের রং বদলে দিতে পারেন একাই।


 






দুর্বলতা


অভিষেক শর্মা, রাহুল ত্রিপাঠী, ওয়াশিংটন সুন্দরের মত স্বদেশী ক্রিকেটাররা কেউই সেভাবে ফর্মে নেই। আগের মরশুমে মারক্রামের নেতৃত্বে ভালই খেলেছিল সানরাইজার্স। কিন্তু হঠাৎ করেই কামিন্সকে দলে নেওয়ার পর মারক্রামকে অধিনায়ক পদ থেকে ছেঁটে ফেলা হয়েছে। কোথাও একটা সেই বিষয়টি নেতিবাচক হতে পারে। বিশেষ করে নতুন অধিনায়কের নেতৃত্বে গুছিয়ে নিতে সময় লাগতে পারে সানরাইজার্সের। বারবার গ্রুপ পর্বে শুরুটা ভাল করেও খেই হারিয়ে ফেলেছে সানরাইজার্স আগেও। এবার কি সেই রোগ সারিয়ে উঠতে পারবে তারা?


 



গেমচেঞ্জার


গ্লেন ফিলিপস ও ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার নাম উল্লেখ করতেই হয়। কিউয়ি তারকা ফিলিপস ব্যাট হাতে মিডল অর্ডারে নেমে ফিনিশারের দায়িত্ব সামলাতে ওস্তাদ। দেশের জার্সিতে প্রচুর বিধ্বংসী ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। নিঃসন্দেহে সানরাইজার্স শিবিরের সেরা ফিল্ডারও হতে চলেছেন ফিলিপস। প্রায় অসম্ভব এমন অনেক ক্যাচ তালুবন্দি করেছেন পয়েন্ট ও কভারে দাঁড়িয়ে। কখনও বাউন্ডারি লাইনেও বাডপাখির মত দৌড়ে গিয়ে ক্যাচ লুফেছন। হাসারাঙ্গা শ্রীলঙ্কার জার্সিতে টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সর্বাধিক উইকেটের মালিক। ৬৩টি ম্যাচে ১০০টি উইকেট নিয়েছেন তিনি। টপকে গিয়েছেন মালিঙ্গার মত কিংবদন্তিকে। এর আগে আইপিএলে আরসিবির হয়েও খেলেছেন ওয়ানিন্দু।


এক্স ফ্যাক্টর


এখানেও প্যাট কামিন্সের নামই বলতে হবে। অজি অধিনায়ক আইপিএলের মঞ্চে প্রথমবার নেতৃত্বভার সামলাবেন। শোনা যায় অজি ড্রেসিংরুমে কামিন্সের বেশ জনপ্রিয়তা রয়েছে। সানরাইজার্স শিবিরেও তেমন ছবি দেখা গেলে কিন্তু প্লেয়ারদের পারফরম্য়ান্সেও তার প্রতিফলন দেখা যাবে। ডানহাতি পেসারের চারটি ওভার অবশ্যই চাপের হতে চলেছে প্রতিপক্ষের ব্যাটারদের কাছে। এছাড়াও ব্যাট হাতেও লোয়ার অর্ডারে লম্বা লম্বা ছক্কা হাঁকাতে পারেন। ২০২২ মরশুমে কেকেআরের জার্সিতে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে ১৪ বলে ঝোড়ো অর্ধশতরান হাঁকিয়েছিলেন অজি তারকা। 


দীর্ঘ ৭ বছর ট্রফির ভাঁড়ার শূন্য। নিজামের শহর কি এবার ফের আইপিএল ট্রফির স্বাদ পেতে চলেছে? কামিন্সের নেতৃত্বে সেই লক্ষ্যপূরণের পালা।