নয়াদিল্লি: গত মরশুমে যেন পুনর্জন্ম হয়েছিল তাঁর। গত বছর আইপিএল শুরুর আগে গৌতম গম্ভীরের সেই বিখ্যাত লাইন, 'আমার জন্য বুলেট খেয়ে নিতে পারে সুনীল নারাইন।' গোটা টুর্নামেন্টে ব্যাটে-বলে পারফর্ম করে কলকাতা নাইট রাইডার্সকে তৃতীয় আইপিএল ট্রফি দিয়েছিলেন নারাইন।
গম্ভীর আর এখন কেকেআরের (KKR) মেন্টর নন। তিনি ভারতীয় দলের কোচ। কেকেআর শিবিরে ইদানীং গম্ভীরের প্রসঙ্গ উঠলেও থামিয়ে দেন কোচ চন্দ্রকান্ত পণ্ডিত। যেন বিরক্তই হন কিছুটা। আর গম্ভীর হীন মরশুমে যেন ছন্দ হারিয়েছিলেন তাঁর দীর্ঘদিনের সহযোদ্ধা নারাইন।
ছন্দে ফেরার জন্য ক্যারিবিয়ান তারকা বেছে নিলেন মঙ্গলবার দিল্লি ক্যাপিটালস ম্যাচকেই। যে ম্যাচ নাইটদের কাছে মরণ-বাঁচন। জিতলে প্লে অফের দৌড়ে ভেসে থাকা। হারলে প্লে অফের স্বপ্ন ভেন্টিলেশনে ঢুকে পড়া।
সেই ম্যাচে প্রথমে ব্যাট হাতে ইনিংস ওপেন করে ১৬ বলে ২৭ রান। রাহমানউল্লাহ গুরবাজের সঙ্গে মিলে ওপেনিং জুটিতেই দলের ইনিংসকে ফিফথ গিয়ারে পৌঁছে দেওয়া। যার সৌজন্যে পাওয়ার প্লে-র ৬ ওভারের শেষে কেকেআরের স্কোর দাঁড়াল ৭৯/১। নারাইন ও গুরবাজের পর ঝড় উঠল অজিঙ্ক রাহানের ব্যাটেও। চলতি আইপিএলে দিল্লি ক্যাপিটালসের বিরুদ্ধে এটাই কোনও দলের সর্বোচ্চ পাওয়ার প্লে স্কোর।
পরে বল হাতেও জ্বলে উঠলেন নারাইন। ৪ ওভারে মাত্র ২৯ রান খরচ করে নিলেন ৩ উইকেট। কলকাতা নাইট রাইডার্সের জার্সিতে ২০৮টি উইকেট হয়ে গেল তাঁর। পুরুষদের টি-২০ ক্রিকেটে কোনও এক দলের হয়ে এত উইকেট নেওয়ার নজির রয়েছে একমাত্র সমিত পটেলের। সেই নজির স্পর্শ করলেন নারাইন।
শিকারের তালিকায় কারা? দিল্লি ক্যাপিটালসের সর্বোচ্চ স্কোরা ফাফ ডুপ্লেসি। ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা দিল্লি অধিনায়ক অক্ষর পটেল। ও তরুণ তুর্কি ট্রিস্টান স্টাবস। বলা হয়, ফিল্ডিংয়ে একটু শ্লথ নারাইন। এদিন ফিল্ডিং করার সময় রান আউট করে দিলেন কে এল রাহুলকে।
সঙ্গে বাড়তি দায়িত্বও চেপে বসল নারাইনের কাঁধে। ফাফ ডুপ্লেসির জোরা শট ধরতে গিয়ে হাতে এমন চোট পেলেন রাহানে যে, মাঠ ছেড়ে বেপিয়ে যেতে হল। দিল্লি ইনিংসের বয়স তখন ১১.১ ওভার। বাকি ম্যাচে কেকেআরকে নেতৃত্ব দিলেন নারাইন। এবং নিখুঁত নেতৃত্ব। চাপের মুখে মাথা ঠাণ্ডা রাখলেন।
১৯০/৯ স্কোরে আটকে গেল দিল্লি। ১৪ রানে ম্যাচ জিতে নিল কেকেআর।