নয়াদিল্লি: রাজধানী নয়াদিল্লিতে গতকাল মুখোমুখি হয়েছিল দিল্লি ক্যাপিটালস ও কলকাতা নাইট রাইডার্স (DC vs KKR)। সেই ম্যাচে ১৪ রানে দিল্লিকে হারিয়ে জয়ের সরণিতে ফিরেছে কেকেআর। এই ম্যাচের পরেই এক ঘটনা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় শোরগোল পড়ে যায়। ঘটনার কেন্দ্রে রিঙ্কু সিংহ (Rinku Singh) ও কুলদীপ যাদব (Kuldeep Yadav)।
রিঙ্কু ও কুলদীপ বর্তমানে দুই ভিন্ন আইপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজির হয়ে খেলেন। তবে উভয়েই ঘরোয়া ক্রিকেটে উত্তরপ্রদেশের হয়ে খেলেন। জাতীয় দলেও কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে খেলেন তাঁরা। তবে কাল ম্যাচ শেষেই রিঙ্কু ঠাস ঠাস করে দুইবার চড় মারতে দেখা যায় কুলদীপকে। রিঙ্কু যে গোটা ঘটনাটা উপভোগ করেননি, তা তাঁর অঙ্গভঙ্গি দেখেই স্পষ্ট বোঝা যায়। আইপিএল আর সতীর্থকে চড় মারা। এই ঘটনা কিন্তু এই প্রথম নয়। অতীতে হরভজন সিংহের এস শ্রীসন্থকে চড় মারার ঘটনা এখনও নিশ্চয়ই সকলের মনেই তাজা। কুলদীপ-রিঙ্কুর ঘটনার পর অনেকেই সেই ঘটনার সঙ্গে তুলনা টানেন অনেকে।
তবে এই বিষয়টি একেবারেই হরভজন-শ্রীসন্থের কাণ্ডের মতো নয় বলেই বোঝানোর চেষ্টা করে কেকেআর। নাইটদের সোশ্যাল মিডিয়ার তরফে গতকালের বিষয়টি নিয়ে বের হওয়া না না রিপোর্টের দাবি সম্পূর্ণ খণ্ডন করে একটি ভিডিও পোস্ট করা হয় যেখানে ম্যাচ শেষে রিঙ্কু ও কুলদীপকে জমিয়ে আড্ডা দিতে, মজাদার না না পোজ় দিতে দেখা যায়। এরপরেই দুইজনের অতীতের একাধিক ছবির স্লাইড চালিয়ে দেওয়া হয়। সেই ভিডিওর ক্যাপশনে কেকেআর লেখে, 'মিডিয়া (চাঞ্চল্যকর) বনাম (দুই বন্ধুর মধ্যেকার) সত্যি! আমাদের দুই উত্তরপ্রদেশের ছেলেদের মধ্যেকার বন্ধুত্ব অত্যন্ত গভীর।'
গতকাল কেকেআর দুরন্তভাবে জয়ে ফেরে। গম্ভীর হীন মরশুমে যেন ছন্দ হারিয়েছিলেন তাঁর দীর্ঘদিনের সহযোদ্ধা নারাইন। ছন্দে ফেরার জন্য ক্যারিবিয়ান তারকা বেছে নিলেন মঙ্গলবার দিল্লি ক্যাপিটালস ম্যাচকেই। যে ম্যাচ নাইটদের কাছে মরণ-বাঁচন। জিতলে প্লে অফের দৌড়ে ভেসে থাকা। হারলে প্লে অফের স্বপ্ন ভেন্টিলেশনে ঢুকে পড়া।
সেই ম্যাচে প্রথমে ব্যাট হাতে ইনিংস ওপেন করে ১৬ বলে ২৭ রান। রাহমানউল্লাহ গুরবাজের সঙ্গে মিলে ওপেনিং জুটিতেই দলের ইনিংসকে ফিফথ গিয়ারে পৌঁছে দেওয়া। যার সৌজন্যে পাওয়ার প্লে-র ৬ ওভারের শেষে কেকেআরের স্কোর দাঁড়ায় ৭৯/১। নারাইন ও গুরবাজের পর ঝড় উঠে অজিঙ্ক রাহানের ব্যাটেও। চলতি আইপিএলে দিল্লি ক্যাপিটালসের বিরুদ্ধে এটাই কোনও দলের সর্বোচ্চ পাওয়ার প্লে স্কোর।
পরে বল হাতেও জ্বলে উঠলেন নারাইন। ৪ ওভারে মাত্র ২৯ রান খরচ করে নিলেন ৩ উইকেট। কলকাতা নাইট রাইডার্সের জার্সিতে ২০৮টি উইকেট হয়ে গেল তাঁর। শিকারের তালিকায় কারা? দিল্লি ক্যাপিটালসের সর্বোচ্চ স্কোরা ফাফ ডুপ্লেসি। ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা দিল্লি অধিনায়ক অক্ষর পটেল। ও তরুণ তুর্কি ট্রিস্টান স্টাবস। বলা হয়, ফিল্ডিংয়ে একটু শ্লথ নারাইন। এদিন ফিল্ডিং করার সময় রান আউট করে দিলেন কে এল রাহুলকে।
সঙ্গে বাড়তি দায়িত্বও চেপে বসল নারাইনের কাঁধে। ফাফ ডুপ্লেসির জোরা শট ধরতে গিয়ে হাতে এমন চোট পেলেন রাহানে যে, মাঠ ছেড়ে বেপিয়ে যেতে হল। দিল্লি ইনিংসের বয়স তখন ১১.১ ওভার। বাকি ম্যাচে কেকেআরকে নেতৃত্ব দিলেন নারাইন। এবং নিখুঁত নেতৃত্ব। চাপের মুখে মাথা ঠাণ্ডা রাখলেন। ১৯০/৯ স্কোরে আটকে গেল দিল্লি।