কলকাতা: বর্তমানে ভারতীয় দলের সেরা পেসারদের তালিকায় সবার প্রথমে যাদের নাম আসে, তাঁদের মধ্যে মহম্মদ শামি (Mohammed Shami) অন্যতম। সাম্প্রতিক সময়ে বিশেষ করে টেস্টে বিদেশের মাটিতে ভারতের ভাল পারফর্ম করার অন্যতম প্রধান কারণ হল মহম্মদ শামির বোলিং। তবে এই মহম্মদ শামিই একদা তাঁর রাজ্যের হয়ে সুযোগই পাননি।
উত্তরপ্রদেশের এক কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করা শামি তৌসিফ আলির চার সন্তানের অন্যতম হলেন মহম্মদ শামি। ছোটবেলা থেকেই শামির বল হাতে দক্ষতা ছিল নজরকাড়া তবে তিনি উত্তরপ্রদেশের অনূর্ধব-১৯ দলে সুযোগই পাননি। এর জন্য তাঁর কোচ বাদরুদ্দিন সিদ্দিকি অবশ্য রাজনীতিকেই দায়ী করেন। তবে অনূর্ধ্ব-১৯ দলে সুযোগ পেলেও, শামি ভেঙে পড়েননি, বরং কোচের পরামর্শে ঘরবাড়ি সবকিছু ছেড়ে দিয়ে তিনি চলে আসেন কলকাতায়। চোখে স্বপ্ন নিয়ে ২০০৫ সালেই কলকাতায় চলে আসেন শামি।
কলকাতায় আশায় পরেই তাঁর স্বপ্নউড়ান শুরু হয়। সিএবির প্রাক্তন সচিব দেবব্রত দাসের হাত ধরে তাঁর উত্থান শুরু। নেটে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বল করে প্রাক্তন ভারতীয় অধিনায়ককে বেশ প্রভাবিত করেন শামি। সৌরভের পরামর্শেই ২০১০-১১ সালে বাংলার (Bengal Ranji Team) রঞ্জি দলে সুযোগ পান শামি। তিন বছরের মধ্যেই জাতীয় দলেও ডাক পেয়ে যান তিনি। ২০১৩ সালে ইডেন গার্ডেন্সেই নিজের টেস্ট অভিষেক ঘটান শামি। অভিষেকেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ৯ উইকেট নেন শামি। তারপর থেকে ধীরে ধীরে ভারতীয় দলের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছেন শামি।
ইতিমধ্যেই শামি জাতীয় দলের হয়ে ৬৩টি ম্যাচ খেলে ২২৫ উইকেট নিয়ে ফেলেছেন, ৯০টি ওয়ান ডে ম্যাচে ১৬২ উইকেট। মাত্র দ্বিতীয় ভারতীয় বোলার হিসাবে ২০১৯ সালে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে হ্যাটট্রিক করেন শামি। আইপিএলও শামির লড়াইয়ের সাক্ষী থেকেছে। ২০১১ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত কলকাতা নাইট রাইডার্সের অঙ্গ থাকলেও, তিনি মাত্র তিনটি ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন। তবে সেই শামিই বর্তমানে গুজরাত টাইটান্স দলের বড় ভরসা। গত মরসুমে আইপিএলজয়ী গুজরাতের হয়ে ২০টি উইকেটও নিয়েছিলেন তিনি। এ মরসুমে বল হাতে তিনি আবারও জ্বলে উঠতে পারেন কি না, সেটাই দেখার বিষয়।
আরও পড়ুন: দাদা ঈশান অনুপ্রেরণা, এবার দিল্লি ক্যাপিটালসের জার্সিতে আইপিএল মাতাতে পারবেন অভিষেক?