কলকাতা: কেউ বলছেন অবিশ্বাস্য। কেউ আবার বলছেন চলতি আইপিএলের সেরা।


আইপিএল অভিষেকেই শোরগোল ফেলে দিয়েছেন বাংলার শাহবাজ আমেদ। বাউন্ডারি লাইনে অবিশ্বাস্য ক্ষিপ্রতায় ধরেছেন স্টিভ স্মিথের ক্যাচ! যে ক্যাচ দেখে মুগ্ধ ক্রিকেটপ্রেমীরা। বোর্ডের ওয়েবসাইটে যে ক্যাচের জন্য শাহবাজকে বলা হচ্ছে ‘সাব্বাশ আমেদ’!

শনিবার বিরাট কোহলির রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের হয়ে আইপিএলে অভিষেক হল শাহবাজের। আর প্রথম ম্যাচেই নজর কেড়ে নিলেন তিনি। ২ ওভার বল করলেন। দিলেন ১৮ রান। তবে শিরোনামে উঠে এলেন একটি দুরন্ত ক্যাচ নিয়ে।

রাজস্থান রয়্যালস ইনিংসের ২০তম ওভারের দ্বিতীয় বল। ক্রিস মরিসকে কভারের ওপর দিয়ে ছক্কা মারতে গেলেন স্মিথ। ডিপ কভারে ফিল্ডিং করছিলেন শাহবাজ। দৌড়ে গিয়েও তিনি বলের নাগাল পেতেন না। কিছুটা দৌড়েই তাই শরীর শূন্যে ভাসিয়ে দিলেন বাংলার স্পিনার-অলরাউন্ডার। অবিশ্বাস্যভাবে বল মাটিতে পড়ার আগেই তালুবন্দি করলেন তিনি। এবং ডাইভ মেরে মাটিতে পিছলে গিয়েও নিজেকে রুখে দিলেন বাউন্ডারি লাইনের ঠিক আগে। কোহলি-সহ আরসিবি ক্রিকেটারেরা যা দেখে উচ্ছ্বসিত। দুরন্ত ফর্মে থাকা স্মিথ যেন বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না যে, তাঁর শট সত্যিই বাউন্ডারি পার করেনি। স্মিথ ফিরলেন ৩৬ বলে ৫৭ রান করে।

ম্যাচের পরেও ২৫ বছরের বাংলার ক্রিকেটারের ওই ক্যাচ নিয়ে চর্চা চলল। যদিও শাহবাজের কীর্তিতে হতবাক নন বাংলা দলে তাঁর কোচ ও সতীর্থরা। বাংলার সিনিয়র দলের কোচ অরুণ লাল মোবাইল ফোনে এবিপি আনন্দকে বললেন, ‘শাহবাজ ইউটিলিটি ক্রিকেটার। ব্যাটিং বলুন, বোলিং বলুন বা ফিল্ডিং, নিজের সেরাটা দিতে সবসময় তৈরি। ওর ফিল্ডিং বরাবরই ভাল। বাংলার হয়েও অনেক ভাল ক্যাচ নিয়েছে।’





বাংলার অধিনায়ক অভিমন্যু ঈশ্বরণের কথায়, ‘শাহবাজের কাছে বল যাওয়া মানে নিশ্চিন্ত। ও ক্যাচ ধরবেই, রান বাঁচাবেই। বাউন্ডারি লাইনে তুখোড় ফিল্ডার। বাংলার ম্যাচেও ওকে বাউন্ডারি লাইনেই ফিল্ডিং করাই। ওর কাছে এরকম ক্যাচ প্রত্যাশিত।’

বাংলার সিনিয়র ক্রিকেটার অনুষ্টুপ মজুমদার বললেন, ‘দু বছর ধরে ওকে দেখছি। বাংলার হয়ে ঘরোয়া ক্রিকেটে একসঙ্গে অনেক ম্যাচ খেলেছি। সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ও সম্পদ। ফিল্ডিংয়ে সেফ হ্যান্ডস। ওর কাছে ক্যাচ যাওয়া মানে নিরাপদভাবে ও ধরবে। তবে স্মিথকে যে ক্যাচে ফেরাল, সেটাই ওর কেরিয়ারের সেরা।’

আইপিএলে ব্রাত্য মনোজ তিওয়ারি-অশোক ডিন্ডারা। ঋদ্ধিমান সাহা প্রথম দলে সুযোগ পাচ্ছেন না। খেলানো হচ্ছে না শ্রীবৎস গোস্বামী, ঈশান পোড়েলদের। একমাত্র নিয়মিতভাবে খেলছেন মহম্মদ শামি। এই পরিস্থিতিতে বিরাটের দলের হয়ে শাহবাজের ঝলমলে অভিষেক বাংলা ক্রিকেটে নতুন আশোর আলো জ্বেলে দিল।