কলকাতা: আইপিএলে দিল্লি ক্যাপিটালসকে ৪৭ রানে হারাল আরসিবি। প্লে অফের দৌড়ে টিকে রইলেন বিরাট কোহলিরা। রাজস্থান রয়্যালসকে হারিয়ে প্লে অফের দিকে চেন্নাই সুপার কিংস (CSK vs RR)। সোমবার নামছে কেকেআর। খেলার দুনিয়ার সারাদিন।


কোহলিদের স্বপ্ন বেঁচে


পুরো পাঁচে পাঁচ। শুরুটা যতটা বাজে হয়েছিল। টুর্নামেন্টের শেষলগ্নে এসে ততটাই চমক দেখাচ্ছে এবার আরসিবি। টানা পঞ্চম জয় ছিনিয়ে নিল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (Royal Challengers Bengaluru)। দিল্লি ক্যাপিটালসের (Delhi Capitals) বিরুদ্ধেও ৪৭ রানে জয় ছিনিয়ে নিল ফাফ ডু প্লেসির দল। এমনকী শুধু জয় ছিনিয়ে নেওয়াই নয়। প্লে অফের প্রথম চারে ঢোকার অন্যতম দাবিদারও হয়ে উঠল তারা। দিল্লি বধের সঙ্গে সঙ্গেই পয়েন্ট টেবিলের প্রথম পাঁচে ঢুকে পড়ল রয়্য়াল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। 


ধোনিদের জয়


নাইট শিবিরের মুখে হাসি ফুটিয়ে রবিবার রাজস্থান রয়্যালসকে ৫ উইকেটে হারিয়ে দিল চেন্নাই সুপার কিংস (CSK vs RR)। কেকেআরের শীর্ষস্থান কেড়ে নেওয়ার দৌড়ে ছিল রাজস্থান রয়্যালস (Rajasthan Royals)। তবে চেন্নাইয়ের কাছে হারের পর ১২ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে সঞ্জু স্যামসনরা থেকে গেলেন দুইয়েই। যেখানে কেকেআর ১২ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার শীর্ষে।


রবিবার ঘরের মাঠ চিপকে রাজস্থান রয়্যালসকে ১০ বল বাকি থাকতে ৫ উইকেটে হারাল চেন্নাই। সেই সঙ্গে প্লে অফের দৌড়েও ভাল জায়গায় রইল সিএসকে। ১৩ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে তালিকায় তিনে উঠে এলেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনিরা।


বিতর্কিত আউট জাডেজা


রবিবার আইপিএলে (IPL 2024) শোরগোল পড়ে গেল রবীন্দ্র জাডেজার (Ravindra Jadeja Out Controversy) উইকেট ঘিরে। রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে বিরল নিয়মের শিকার হলেন চেন্নাই সুপার কিংসের অলরাউন্ডার। চেন্নাই সুপার কিংস ম্যাচ জিতলেও জাডেজার আউট ঘিরে চলল বিতর্ক।


ঠিক কী হয়েছিল ম্যাচে? কোন নিয়মে আউট হলেন জাডেজা, যা নিয়ে এত বিতর্ক?


ঘটনাটি চিপক স্টেডিয়ামের। রবিবার বিকেলের ম্যাচে যে মাঠে মুখোমুখি হয়েছিল চেন্নাই সুপার কিংস ও রাজস্থান রয়্যালস। রাজস্থানের ১৪১/৫ স্কোর তাড়া করতে নেমেছিল সিএসকে। তাদের ইনিংসের ১৬তম ওভারের পঞ্চম বল। আবেশ খানের বল থার্ড ম্যানে পাঠিয়ে দ্রুত এক রান পূর্ণ করেন সৌরাষ্ট্রের অলরাউন্ডার। দ্বিতীয় রানও নিতে গিয়েছিলেন তিনি। তবে থার্ড ম্যাচ ফিল্ডার বল থ্রো করে দেন রাজস্থানের উইকেটকিপার তথা অধিনায়ক সঞ্জু স্যামসনের হাতে। যে কারণে দ্বিতীয় রান নিতে অস্বীকার করেন চেন্নাই সুপার কিংসের অধিনায়ক রুতুরাজ গায়কোয়াড়।


কিন্তু জাডেজা ততক্ষণে ক্রিজের অর্ধেক পেরিয়ে গিয়েছেন। রুতুরাজ ফিরিয়ে দিতেই তিনি ঘুরে নিজের ক্রিজে ফেরার জন্য দৌড় শুরু করেন। ইতিমধ্যেই বল উইকেট লক্ষ্য করে থ্রো করেছিলেন সঞ্জু। সেই বল পিছন দিক থেকে জাডেজার হাতে লাগে। সঙ্গে সঙ্গেই ফিল্ডিংয়ে বাধা দেওয়ার জন্য (Obstructing the field) জাডেজার বিরুদ্ধে আউটের আবেদন করেন সঞ্জু-সহ রাজস্থানের ক্রিকেটারেরা। তৃতীয় আম্পায়ারের সাহায্য চাওয়া হয়। তৃতীয় আম্পায়ার রিপ্লে দেখে আউট ঘোষণা করেন। তাঁর মনে হয়েছিল, ইচ্ছাকৃতভাবে ফিল্ডিংয়ে বাধা দিয়েছেন জাডেজা।


মোদির শহরে পরীক্ষা কেকেআরের


ঘরের মাঠ ইডেন গার্ডেন্সে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে হারিয়ে প্লে অফ নিশ্চিত করার পর ২৪ ঘণ্টাও কাটেনি। দেশের পূর্ব প্রান্ত কলকাতা থেকে পশ্চিম প্রান্তের আমদাবাদে পৌঁছে গেলেন শ্রেয়স আইয়াররা। সোমবার সামনে প্রাক্তন এক নাইট তারকার দল। শুভমন গিলের গুজরাত টাইটান্সের বিরুদ্ধে ম্যাচ কেকেআরের (GT vs KKR)।


কেকেআরের প্লে অফ নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে। তবে পয়েন্ট টেবিলের প্রথম দুইয়ের মধ্যে থাকা নিশ্চিত হয়ে যাবে, যদি সোমবারও ম্যাচ জেতে কেকেআর। সেক্ষেত্রে প্রথম দল হিসাবে চলতি আইপিএলে ২০ পয়েন্টে পৌঁছে যাবেন নাইটরা। একমাত্র রাজস্থান রয়্যালস ছাড়া আর কোনও দলই কেকেআরকে ধরতে পারবে না। তাই মহার্ঘ ২ পয়েন্টের লক্ষ্যেই ঝাঁপাতে চাইবে কেকেআর।


হারের ধাক্কায় অভুক্ত সারারাত


মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে (KKR vs MI) দুবারের সাক্ষাতে দুবারই হারাচ্ছে কলকাতা নাইট রাইডার্স, আইপিএলে (IPL 2024) প্রথম দল হিসাবে প্লে অফের টিকিট নিশ্চিত করে ফেলছে, এরকম ঘটনা খুবই বিরল। ইডেনে মুম্বইকে হারানোর পর নাইট শিবিরে উৎসবের আবহ। রাতে টিমহোটেলে ফিরে কাটা হল কেক। ম্যাচের সেরা হয়েছেন বরুণ চক্রবর্তী। তাঁর স্পিনজাল মুম্বই ব্যাটিংকে নাস্তানাবুদ করে দেয়। টিমহোটেলে বরুণকে তাই সতীর্থদের বাড়তি খুনসুটিও সামলাতে হল। তাঁর দাড়িতে কেক লাগিয়ে দিলেন সতীর্থরা।


আনন্দের আবহেও অবশ্য একটা যন্ত্রণা কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে নাইট শিবিরকে। আর সেটা হল, ঘরের মাঠে ২৬১ রানের বিশাল স্কোর তুলেও পাঞ্জাব কিংসের কাছে হেরে যাওয়ার তিক্ত স্মৃতি। যা কেকেআর শিবিরকে জোরাল ধাক্কা দিয়েছিল। এতটাই ছিল সেই দুঃস্বপ্নের রাত যে, কেকেআর ক্রিকেটারেরা না খেয়ে ছিলেন। সেই ধাক্কাই যেন নতুন করে তাগিদ হয়ে দাঁড়ায় নাইট শিবিরের কাছে। সেই ম্যাচের পর থেকে টানা চার ম্যাচ জিতে প্লে অফে জায়গা পাকা করে নিয়েছেন নাইটরা।