• সুব্রত ভট্টাচার্য                                                                                                                                                  


 

 

পর্তুগাল-১ : আইসল্যান্ড-১

(নানি)               (বার্নাসন)

বছর কয়েক আগে প্রসেনজিতের ‘হনুমান ডট কম’ সিনেমায় ছবির মতো সুন্দর আইসল্যান্ডকে দেখেছিলাম। কিন্তু কোনও ধারণা ছিল না দেশটার ফুটবল সম্পর্কে।

মঙ্গলবার রাতে দেখলাম আইসল্যান্ডিক ফুটবলাররাও ওদের দেশের আগ্নেয়গিরির মতোই আগুনে। প্রথম বার ইউরোতে খেলতে আসার পথে কোয়ালিফায়ারে ওরা দু’পর্বে জোহান ক্রুয়েফের দেশকে শুধু হারায়নি। হারিয়েছে তুরস্ককেও। মূল পর্বের প্রথম ম্যাচেও মঙ্গলবার রুখে দিল রোনাল্ডোর পর্তুগালকেও। কিন্তু তা সত্ত্বেও ম্যাচটা এক তরফা হতে যাচ্ছে বলেই খেলাটা দেখতে বসেছিলাম। কারণ একটাই—ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। গতি, দৌড়, জোরালো হেড, রামধনুর মতো বাঁক খাওয়ানো সব দুর্দান্ত ফ্রিকিকের মালিক রোনাল্ডো নিজেই তো এখনকার ফুটবলের একটা বড় দৃশ্যসুখ। যাকে দেখতে সবাই মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে বসে পড়ে টিভির সামনে। এর সঙ্গে ওর নিজের তুখোড় কনফিডেন্স।  কয়েক দিন আগেই তো খবরের কাগজে পড়লাম যে ও নিজেকে গত কয়েক বছরের পারফরম্যান্সের নিরিখে সেরা  বলেছে। পেয়েছে পেলের শংসাপত্রও।

ইউরোর প্রথম ম্যাচে রোনাল্ডোকে দেখার পর কয়েকটা প্রশ্ন মাথায় আসছে। রোনাল্ডো কি ইদানীং অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী হয়ে পড়ছে? নাকি ওর চোট ওকে ছন্দে ফিরতে দিচ্ছে না? চোট লুকিয়ে ইউরোতে নেমে পড়েনি তো! প্রথম ম্যাচ দেখার পর এই আশঙ্কাই হচ্ছে। জানি প্রথম ম্যাচ। অনেকেই বলবেন নক আউটের জন্য নিজেকে লুকিয়ে রাখছে। তাও বলব যে রোনাল্ডোকে চিনি তাকে আইসল্যান্ডের বিরুদ্ধে দেখিনি।

আসলে দেশের জার্সিতে নামলে রোনাল্ডোর মতো একজন ক্রাউড পুলারকে যে দায়িত্ববোধ এবং তাগিদ দেখাতে হয় সেটাই তো দেখলাম না ইউরোর রোনাল্ডোর মধ্যে। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালে টাইব্রেকারে জয়ের গোল করে হাসিমুখে যতই পোজ দিক না কেন, গোটা ফুটবল দুনিয়া এত দিনে জেনে গিয়েছে রোনাল্ডো সেই ম্যাচে পুরো ম্যাচ ফিট ছিল না। এ দিনও রোনাল্ডোকে দেখে মনে হল সেই চোট এখনও সারেনি।

ওর প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বী লিওনেল মেসিও চোট এবং মামলার জোড়া ধাক্কা নিয়ে কোপায় খেলতে গিয়েছিল। কিন্তু পানামার বিরুদ্ধে নেমেই একটা ঝকঝকে হ্যাটট্রিক করে গিয়েছে। মেসি, রোনাল্ডোদের থেকে এই গোলের সুনামি দেখতেই তো মাঠে আসে।

সেখানে রোনাল্ডো এ দিন একদম ফ্লপ। প্রথমার্ধে নানির উদ্দেশে একটা ক্রস ছাড়া আর তো কিছুই দেখলাম না। সব সময়ই ডিফেন্ডারদের আড়ালে রয়ে গেল। কোথায় সেই ট্রেডমার্ক দৌড়, ফ্রিকিক? শেষ দিকে এরিয়াল বলেও হেড নিতে গিয়ে দোনোমোনো করল!

নানি বরং দুর্দান্ত প্লেসিংয়ে টিমকে এগিয়ে দিয়েছিল। পর্তুগাল রাইটব্যাক ভিয়েরিনহার কম উচ্চতাকে কাজে লাগিয়ে দ্বিতীয়ার্ধে গোল শোধ বার্নাসনের। গোটা ম্যাচে প্রাপ্তি এ টুকুই।