কলকাতা: করোনা আবহ তাঁদের জীবনটা বদলে দিয়েছে সম্পূর্ণভাবে। প্রায় ছ'মাস কার্যত 'বন্দি' থাকতে হয়েছে জৈব সুরক্ষা বলয়ে। কারণ, তাঁরা প্রত্যেকেই আইএসএলে (ISL) খেলেছেন। কেউ এটিকে মোহনবাগানে (ATK MB)। কেউ চেন্নাইয়িন এফসিতে (Chennaiyin FC)। তো কেউ এসসি ইস্টবেঙ্গলে। টুর্নামেন্ট শেষ হওয়ার পর আইএসএলে খেলা বাংলার ফুটবলাররা খোশমেজাজে। সকলে মিলে পার্ক স্ট্রিটের এক অভিজাত হোটেলে প্রাতঃরাশ সারলেন। শ্যেফ প্রাচী অপূর্ব তাঁদের জন্য ক্যালকাটা ফেভারিটস ও ইন্টারন্যাশনাল ক্লাসিকসের মিশ্রণে বিশেষ পদ তৈরি করেছিলেন। খাওয়ার ফাঁকে জৈব সুরক্ষা বলয়ের জীবন কতটা কঠিন, তা নিয়েই সকলে আড্ডা দিলেন।


বায়ো বাবলে অগ্নিপরীক্ষা


এবারের আইএসএলের আবিষ্কার মনে করা হচ্ছে কিয়ান নাসিরিকে (Kyan Nassiri)। এটিকে মোহানবাগানের হয়ে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী এসসি ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে হ্যাটট্রিক করে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন। যাঁর আরেকটা পরিচয়, তিনি ইস্টবেঙ্গলের কিংবদন্তি জামশিদ নাসিরির ছেলে। আইএসএল খেলে ফিরেছেন সদ্য। এবিপি লাইভকে কিয়ান বললেন, 'জৈব সুরক্ষা বলয়ে এবারই প্রথম এতদিন ছিলাম। আমাদের সঙ্গে পরিবারের কেউ বা বন্ধুবান্ধব ছিল না। মাঝে মধ্যে তো অন্য খেলোয়াড়দের সঙ্গে এক ঘরে থাকাটাও কষ্টকর হয়ে যেত। খেলায় মনোনিবেশ করতে গেলে একজন ফুটবলারের ব্যক্তিগত জীবনেরও প্রয়োজন হয়।'


তাঁর সঙ্গে একমত জিতেন্দ্র সিংহ। যিনি খেলেন জামশেদপুর এফসি-তে। বলছেন, 'টানা ৬ মাস পরিবার ও বন্ধুদের ছাড়া থাকাটা ভীষণই কঠিন।' যোগ করছেন, 'মানসিক ধকল কাটানোর জন্য আমি প্লে স্টেশনে ফিফা খেলতাম।'


চেন্নাইয়িন এফসি-র হয়ে আইএসএল খেলেন জবি জাস্টিন। 'জৈব সুরক্ষা বলয় আমাদের কাছে নতুন একটা ব্যাপার,' বলছিলেন জবি। তবে এর মধ্যে ইতিবাচক দিকও খুঁজে পাচ্ছেন। বলছেন, 'তবে জৈব সুরক্ষা বলয়ে থাকার সময় ফুটবলারদের মধ্যে সম্পর্ক আরও গাঢ় হয়।'


এসসি ইস্টবেঙ্গলের অধিনায়ক অরিন্দম বলছেন, 'জৈব সুরক্ষা বলয়ের জন্য যতই মানসিক প্রস্তুতি নেওয়া হোক না কেন, ধকলটা সহ্য করা সহজ নয়। বিশেষ করে ম্যাচ হারার পর সকলেই পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে পছন্দ করে। তাতে পরাজয় ভুলে মানসিকভাবে পরের ম্যাচের জন্য চাঙ্গা থাকা যায়। কিন্তু সেটা এখন আর সম্ভব নয়।'




ক্রিকেটে হয়েছে, ফুটবলে?


করোনা আবহে খেলোয়াড়দের মানসিকভাবে তরতাজা রাখতে ক্রিকেটে চালু হয়েছে রোটেশন। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডও সেই রাস্তায় হেঁটেছে। এমনকী, বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মাদের মতো তারকাদেরও ঘুরিয়ে ফিরিয়ে খেলানো হচ্ছে। কোনও সিরিজে খেলানো হচ্ছে যশপ্রীত বুমরা, মহম্মদ শামিকে, তো পরের টুর্নামেন্টে তাঁদের বিশ্রাম দিয়ে সুযোগ দেওয়া হচ্ছে ভুবনেশ্বর কুমার, দীপক চাহারদের। জৈব সুরক্ষা বলয়ে টানা থাকার ধাক্কার সঙ্গে যুঝতে ফুটবলেও কি দেখা যাবে সেই রোটেশন পদ্ধতি?


এবিপি লাইভকে নর্থ ইস্ট ইউনাইটেডের হয়ে আইএসএল খেলা গোলকিপার শুভাশিস রায়চৌধুরী বললেন, 'সেটা কোচের ওপর নির্ভর করছে। আগে অবনমনের ভয় থাকত। তাই সবাই সেরা ফুটবলারদের সব ম্যাচে খেলাতে চাইত।'


তবে অরিন্দমের কথায়, 'ক্রিকেট আর ফুটবল সম্পূর্ণ আলাদারকম দুটো খেলা। ফুটবলে রোটেশন পদ্ধতি পরীক্ষামূলকভাবে প্রয়োগ করে আগে দেখতে হবে। রিজার্ভ বেঞ্চে ২ থেকে ৩জন দুর্দান্ত মানের ফুটবলার থাকতে হবে। ফুটবলে যা হয় না। তাই রোটেশন চালু করা কঠিন।'


মুম্বই ম্যাচে কামিন্সকে পাওয়া যাবে বলে সমস্যায় কেকেআর? কিন্তু কেন?