গোয়া: ক্লাবের নামের আগে কেন 'এটিকে' বা আতলেতিকো দে কলকাতা থাকবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আন্দোলন শুরু করেছিলেন হাজার হাজার ফুটবলপ্রেমী। আইএসএল (ISL) চ্যাম্পিয়ন হওয়ার রাতে অবশেষে সমর্থকদের জন্য খুশির খবর দিলেন দলের অন্যতম মালিক সঞ্জীব গোয়েনকা।


জানিয়ে দেওয়া হল, আর এটিকে মোহনবাগান নয়, বরং মোহনবাগান সুপারজায়ান্টস নামে খেলবে সবুজ-মেরুন শিবির।


গোয়ায় বেঙ্গালুরু এফসি-কে টাইব্রেকারে হারিয়ে এটিকে মোহনবাগান আইএসএল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর মাঠে দাঁড়িয়ে গোয়েনকা বললেন, 'আমরা বিষয়টা আগেই ভেবে রেখেছিলাম। ঘোষণার জন্য অপেক্ষা করেছিলাম। আমাদের মনে হয় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মতো সময় আর পাওয়া যাবে না। এটাই সেরা সময়।'


রুদ্ধশ্বাস ম্যাচ


কাতার বিশ্বকাপে আর্জেন্তিনা-ফ্রান্স ফাইনালে একবার এক দল এগিয়েছে। তো পরের মুহূর্তেই গোল শোধ করে দিয়েছে প্রতিপক্ষ। শেষ পর্যন্ত টাইব্রেকারে ফয়সালা হয় ম্যাচের। লিওনেল মেসির হাতে ওঠে বিশ্বকাপ। 


আইএসএল ফাইনালের পরিসমাপ্তিও হল সেরকমই রুদ্ধশ্বাসভাবে। ৯০ মিনিটে ম্যাচের ফয়সালা হয়নি। নির্ধারিত সময় শেষ হয় ২-২ ফলে। অতিরিক্ত সময়েও এটিকে মোহনবাগান ও বেঙ্গালুরু এফসি - কোনও দলই গোল পায়নি।


অবশেষে টাইব্রেকারে হল ম্যাচের ফয়সালা। আর টাইব্রেকারে বেঙ্গালুরু এফসি-কে ৪-৩ গোলে হারিয়ে আইএসএল চ্যাম্পিয়ন হল এটিকে মোহনবাগান।


গোল। পাল্টা গোল। একবার এগিয়ে যাচ্ছে এটিকে মোহনবাগান (ATK Mohun Bagan)। তো পরের মুহূর্তেই সমতা ফেরাচ্ছে বেঙ্গালুরু এফসি (Bengaluru FC)। তারপর এগিয়ে যাচ্ছে বেঙ্গালুরু। শেষ বাঁশি বাজার আগে ফের ২-২ করে দিচ্ছে সবুজ মেরুন শিবির। পেনাল্টি। হলুদ কার্ড। গোললাইন সেভ। নাটকের কোনও উপকরণই বাদ গেল না এটিকে মোহনবাগান বনাম বেঙ্গালুরু এফসি ফাইনালে।


প্রথমার্ধের ১৩ মিনিটে কর্নার পায় এটিকে মোহনবাগান। পেট্রাটসের কর্নার কিক ক্লিয়ার করতে গিয়ে হাতে লাগিয়ে বসেন রয় কৃষ্ণা। রেফারি পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেন। পেনাল্টি থেকে গোল করে এটিকে মোহনবাগানকে এগিয়ে দেন পেট্রাটস।


যদিও গোল খেয়ে তেড়েফুঁড়ে খেলতে শুরু করে বেঙ্গালুরু এফসি। ৬০ শতাংশ বলের দখল নিজেদের কাছে রেখেছিল বেঙ্গালুরু। তার ফলও পায়। প্রথমার্ধে ৩ মিনিট ইনজুরি টাইম দিয়েছিলেন রেফারি। তিন মিনিট শেষ হতে তখন আর কয়েক সেকেন্ড বাকি। বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে নিজেদের বক্সে রয় কৃষ্ণাকে ফাউল করে বসেন শুভাশিস বসু। রেফারি পেনাল্টি দিলে কৃষ্ণা নন, শট নিতে যান সুনীল ছেত্রী। ঠান্ডা মাথায় গোল করেন তিনি। 


দ্বিতীয়ার্ধে উলটপুরাণ। ৭৮ মিনিটের মাথায় সুরেশ সিংহের কর্নার কিক থেকে শূন্যে লাফিয়ে হেড করে দুরন্ত গোল করেন রয় কৃষ্ণা। যিনি আবার এটিকে মোহনবাগানের প্রাক্তনী। তবে নিজের পুরনো দলের বিরুদ্ধে গোল করে কোনও উৎসব করলেন না কৃষ্ণা। নাটকের তখনও বাকি ছিল। শেষ বাঁশি বাজার ৬ মিনিট আগে সদ্য নামা কিয়ান নাসিরিকে ফাউল করেন পাবলো পেরেজ। পেনাল্টি থেকে নিজের ও দলের দ্বিতীয় গোল করেন পেট্রাটস।


অতিরিক্ত সময়ে আর কোনও গোল না হওয়ায় খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে। সেখানে বেঙ্গালুরু এফসি তৃতীয় ও পঞ্চম শটে গোল করতে ব্যর্থ হয়। তৃতীয় শট নিতে গিয়েছিলেন ব্রুনো। সেটি রুখে দেন বিশাল কায়েথ। পঞ্চম শট নষ্ট করেন পেরেজ।


আরও পড়ুন: দলে ফিরবেন রোহিত, দ্বিতীয় ওয়ান ডেতে কি সিরিজ জিততে পারবে ভারত?