মারগাও: চলতি আইএসএল-এ জোড়া হারের ধাক্কা কাটিয়ে কিছুটা ঘুরে দাঁড়াল এসসি ইস্টবেঙ্গল। আজ নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে চেন্নাইয়ান এফসি-র সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করলেন ড্যানিয়েল চিমা চুকুরা। ফলে ৪ ম্যাচে ২ পয়েন্ট হল লাল-হলুদ ব্রিগেডের। পয়েন্টের চেয়েও বড় কথা, দলটার আত্মবিশ্বাস অনেকটা বেড়ে গেল। লাল-হলুদ জার্সি যে লড়াইয়ের জন্য ১০০ বছর ধরে বিখ্যাত, সেটা যেন এই ম্যাচে ফিরে এল। সেটাই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।


পরপর দু’টি ম্যাচ হেরে দলটা প্রচণ্ড চাপে ছিল। বিশেষ করে যেখানে স্বয়ং কোচ তাঁর দলের মান নিয়ে প্রকাশ্যে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন, সেখানে শুভম সেন, মহম্মদ রফিক, হীরা মণ্ডলের মতো বঙ্গসন্তানদের কাছে নিজেদের প্রমাণ করার তাগিদ ছিল। প্রত্যেকেই দুরন্ত লড়াই করলেন। বিশেষ করে তরুণ গোলকিপার শুভম সেন। ওড়িশা এফসি-র বিরুদ্ধে ৬ গোল হজম করার পর ভেঙে না পড়ে দারুণভাবে ফিরে এলেন তিনি। শুধু ৫৮ মিনিটে একটা সেন্টার গ্রিপ করতে গিয়ে ফস্কান। ডিফেন্ডাররা সতর্ক থাকায় গোল করতে পারেনি চেন্নাই। এরপর অবশ্য আর খুব একটা ভুল করেননি শুভম। ফলে বহুদিন পর লাল-হলুদ গোলদুর্গ অক্ষত থাকল।


আজ জয়ও পেতে পারত এসসি ইস্টবেঙ্গল। ৭৫ মিনিটে আমির ডার্বিসেভিচের ফ্রি-কিক থেকে বক্সের মধ্যে ফাঁকায় বল পেয়ে গিয়েছিলেন রাজু গায়কোয়াড়। কিন্তু তাঁর দুর্বল হেড বারের উপর দিয়ে চলে যায়। এরপরেও একাধিক সুযোগ পেয়েছিলেন চিমা, রফিকরা। কিন্তু তাঁরা গোল পাননি। উল্টোদিকে চেন্নাইও একাধিক সুযোগ পেয়েছিল। কিন্তু আজ লাল-হলুদের জালে বল জড়ানো সম্ভব হয়নি।


আজ গোল না পেলেও, রক্ষণে দলকে দারুণভাবে সাহায্য করলেন চিমা। একাধিকবার বক্সে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে ট্যাকল করে দলকে গোল খাওয়ার হাত থেকে বাঁচিয়ে দেন তিনি। ৫৬ মিনিটে ড্যারেন সিডলের পরিবর্তে নেমে অ্যান্টনিও পেরোসেভিচও ভাল খেললেন। তিনি নামার পর লাল-হলুদের আক্রমণে গতি আসে। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই জয়নার লরেন্সের বদলে নামা রাজু এবং ড্যানিয়েল গোমেজের বদলে নামা আদিল খানও রক্ষণকে কিছুটা ভরসা দিলেন। দলে ফিরে টমিস্লাভ মার্সেলাও ভাল খেললেন। দিনের শেষে এগুলিই এসসি ইস্টবেঙ্গলের পক্ষে ইতিবাচক দিক।


তবে জয়ে ফিরতে গেলে এসসি ইস্টবেঙ্গলের মাঝমাঠ এবং আক্রমণে এখনও অনেক উন্নতি করতে হবে। মিডফিল্ডারদের নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়ার অভাব আজকের ম্যাচেও বারবার দেখা গেল। অনেক মিসপাসও হচ্ছে। মিডফিল্ডারদের সঙ্গে স্ট্রাইকারদের দূরত্বও থেকে যাচ্ছে। এসবের সুযোগ নিতে পারছে বিপক্ষ দলগুলি। এই ভুল যত দ্রুত শুধরে নিতে পারবেন রফিক, ডার্বিসেভিচরা ততই দলের পক্ষে ভাল।