লন্ডন: চলতি অ্যাশেজ সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক হয়েছে ইংল্যান্ডের ফাস্ট বোলার জোফরা আর্চারের। এই ম্যাচে তাঁর বোলিং যেমন একদিকে প্রশংসা আদায় করে নিয়েছে। তেমনি অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যান স্টিভ স্মিথ তাঁর বাউন্সারে আহত হওয়ার পর নির্লিপ্ত আচরণের জন্য সমালোচনার মুখে পড়েছেন আর্চার। শনিবার অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসের ৭৭ তম ওভারে আর্চারের বাউন্সার আছড়ে পড়ে স্মিথের ঘাড়ে। রিটায়ার্ড হার্ট হন স্মিথ। এর কিছুক্ষণ পরই ফের নেমে পড়েন তিনি। কিন্তু সেঞ্চুরি থেকে আট রান দূরে থেমে যেতে হয় তাঁকে।
বাউন্সারের আঘাতে যখন স্মিথ মাটিতে পড়ে গিয়েছেন, তখন আর্চারকে সহ খেলোয়াড় জস বাটলারের সঙ্গে হাসতে দেখা গিয়েছিল। তাঁর এই আচরণের তীব্র নিন্দায় মুখর হন সোশ্যাল মিডিয়া ইউজাররা। আর্চারের সমালোচনা করেন প্রাক্তন পাক ফাস্ট বোলার শোয়েব আখতারও। তাঁর ট্যুইট- বাউন্সার খেলারই অঙ্গ। কিন্তু কোনও ব্যাটসম্যানের আঘাত লাগলে তা কতটা গুরুতর, তা জেনে নেওয়াটা বোলারের শিষ্টাচার। স্মিথ যখন ব্যাথায় কাতরাচ্ছিলেন, তখন তাঁর কাছে থেকে দূরে সরে কাজটা ভালো করেননি আর্চার। আমি হলে প্রথমেই ব্যাটসম্যানের কাছে ছুটে যেতাম।



এই ঘটনা নিয়ে অবশেষে প্রতিক্রিয়া জানালেন আর্চার। টেস্টের পঞ্চম দিনের খেলা শুরুর তিনি বলেছেন, আমি ওই সময় কী ভাবছিলাম, তা জানি না। কোনও বোলার কাউকে আহত হতে বা ওই দিন ওই বা অন্য কোনও ম্যাচ না খেলতে পারে, এমনটা দেখতে চায় না। বিশেষ করে, কয়েক বছর আগে যা ঘটেছে, তারপর এই দৃশ্যটা একেবারেই ভালো নয়।
আর্চার এক্ষেত্রে ফিল হিউজের ঘটনার প্রসঙ্গ উল্লেখ করেছেন। ২০১৪-তে অস্ট্রেলিয়ায় শেফিল্ড শিল্ডের ম্যাচে ফিল হিউজ বাউন্সারে আহত হয়েছিলেন। পরে তাঁর মৃত্যু হয়।
অজি কোচ জাস্টিন ল্যাঙ্গার স্বীকার করে নিয়েছেন যে, স্মিথের আঘাত তাঁকে সেই ভয়াবহ ঘটনার কথা মনে করিয়ে দিয়েছিল।
ভবিষ্যতের বোলিং তারকা হিসেবে অনেকেই যাঁকে চিহ্নিত করেছেন সেই আর্চারের সঙ্গে টেস্ট ক্রিকেটের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান স্মিথের লড়াই দারুণ জমে উঠেছিল। আর্চার বলেছেন, ওই লড়াইটা বেশ উত্তেজনাকর ছিল। আমি সবাইকে বলছিলাম, নিজে থেকে ভুল করে ওকে আউট হতে আমি দেখিনি। ওকে কাঁপিয়ে দিতে চেয়েছিলাম। আমি শুধু ওকে আউট করতে চেয়েছিলাম।
স্মিথ আহত হওয়ার পর সবারই হৃদস্পন্দন এক লহমার জন্য স্তব্ধ হয়ে পড়েছিল বলেও জানিয়েছেন আর্চার। পরে স্মিথ উঠে দাঁড়িয়ে হাঁটাচলা করতে শুরু করার পর সবাই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে। কেউ কাউকে স্ট্রেচারে করে মাঠ ছাড়তে দেখতে চায় না।