ভুবনেশ্বর: গতবারের চ্যাম্পিয়ন ওডিশা এফসি-কে তাদের ঘরের মাঠে হারিয়ে কলিঙ্গ সুপার জিতে নিল ইস্টবেঙ্গল এফসি। রবিবার ভুবনেশ্বরের কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে লাল-হলুদ বাহিনী টানা ১৫ ম্যাচে অপরাজিত থাকা ওডিশা এফসি-র ধারাবাহিক সাফল্যের দৌড় থামাল ৩-২-এ জিতে। দীর্ঘ ১২ বছর পর জাতীয় পর্যায়ের কোনও ট্রফি জিতল কলকাতার শতাধিক বছরের ঐতিহ্যবাহী এই ক্লাব। ২০১২-য় ফেডারেশন কাপ জয়ের পর ২০২৪-এর সুপার কাপ নিয়ে ঘরে ফিরছে তারা। শুধু ট্রফি নয়, আগামী মরশুমে এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ২-এ খেলার ছাড়পত্রও পেয়ে গেল তারা।



রবিবার সন্ধ্যায় উত্তেজনায় ঠাসা ম্যাচে প্রথমে গোল করে এগিয়ে যাওয়া সত্ত্বেও সেই ব্যবধান ধরে রাখতে পারেনি ওডিশা। পরপর দু’টি গোল খায় তারা। উত্তেজনার পারদ এতটাই উঁচুতে ওঠে যে, দ্বিতীয়ার্ধে ওডিশার দলের দীর্ঘদেহী ডিফেন্ডার মুর্তাদা ফলকে লাল কার্ড দেখে বাইরে বেরিয়ে যেতে হয়।

নির্ধারিত সময়ের প্রায় আধ ঘণ্টা (বাড়তি সময় সহ) দশ জনে খেলে ওডিশা। তা সত্ত্বেও নির্ধারিত সময়ের একেবারে শেষ মুহূর্তে পাওয়া পেনাল্টি থেকে করা গোলে সমতা আনে তারা। হাতের মুঠোয় আসা জয় পিছলে গেলেও অতিরিক্ত সময়ে তা আবার হাতের মুঠোয় নিয়ে আসে লাল-হলুদ বাহিনী।

এ দিন প্রথমার্ধে ব্রাজিলীয় তারকা ফরোয়ার্ড দিয়েগো মরিসিওর দেওয়া গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় ওডিশা এফসি। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই তাদের চাপে রেখে প্রথম গোল শোধ করেন নন্দকুমার শেখর, যিনি গত মরশুমে এই ওডিশা এফসি-র হয়েই খেলতেন। পরে পেনাল্টি থেকে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন সল ক্রেসপো। এই গোলের মিনিট সাতেক পরেই লাল কার্ড দেখেন মুর্তাদা ফল।

১২ বছর পর ট্রফি জয়ের আনন্দে যখন উল্লাস শুরু করে দিয়েছিলেন ইস্টবেঙ্গল সমর্থকেরা, তখনই স্টপেজ টাইমের শেষ মিনিটে ঘটে চূড়ান্ত অপ্রত্যাশিত ঘটনা। গোলমুখী দিয়েগো মরিসিওকে অবৈধভাবে বাধা দেন ইস্টবেঙ্গলের গোলকিপার প্রভসুখন গিল এবং রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজান। পেনাল্টি থেকে গোল করে সমতা আনেন আহমেদ জাহু।

অতিরিক্ত সময়ের শুরুতেই শৌভিক চক্রবর্তী লাল কার্ড দেখায় ফের লড়াই শুরু হয় সমানে সমানে। কিন্তু শেষ হাসি হাসে কলকাতার দলই। কারণ, তাদের একজন ক্লেটন সিলভা আছেন। তিনিই বরাবরের মতো এ দিনও ত্রাতা হয়ে ওঠেন এবং অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয়ার্ধে দুর্দান্ত এক গোল করে ওডিশার কাছ থেকে সুপার কাপ ছিনিয়ে নেন।