কলকাতা: নৈশালোকের ইডেনে যখন আন্দ্রে রাসেলের ১৭ বলে ৪৮ রানের ঝড় আছড়ে পড়ল, ক্লাব হাউস লাগোয়া কর্পোরেট বক্সের ব্যালকনিতে দাঁড়ানো টিম মালিকের মুখে খুশির ঝলক। শাহরুখ খানের শুরুর সেই স্বস্তি বজায় রইল গোটা ম্যাচেই। কিংস ইলেভেন পঞ্জাবকে ২৮ রানে হারিয়ে ঘরের মাঠে পরপর দুই ম্যাচ জিতে দ্বাদশ আইপিএলে অভিযান শুরু করল কলকাতা নাইট রাইডার্স। সেই সঙ্গে চেন্নাই সুপার কিংসকে সরিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে উঠে এল শাহরুখের দল।


আইপিএলে কলকাতা-পঞ্জাব দ্বৈরথকে বীর-জারার যুদ্ধ হিসাবে দেখা হয়। বুধবার ইডেনে 'বীর' শাহরুখ ছিলেন। 'জারা' প্রীতি জিন্টা না থাকলেও পঞ্জাবের মূল আকর্ষণ হিসাবে ছিলেন ক্রিস গেল। সঙ্গে কিলার মিলার। ঘরের ছেলে মহম্মদ শামি। জাতীয় দলের তারকা কে এল রাহুল। তারকাসমৃদ্ধ প্রতিপক্ষকে অবশ্য ম্যাচে কার্যত দাঁড়াতেই দিলেন না নাইটরা। প্রথমে ব্যাট করে কেকেআর তুলল ৪ উইকেটে ২১৮ রান।

রবিন উথাপ্পা (৫০ বলে ৬৭ অপরাজিত), নীতীশ রানা (৩৪ বলে ৬৩) রান পেয়েছেন। চোট সারিয়ে ইনিংস ওপেন করতে নেমে মাত্র ৯ বলে ২৪ রান করেছেন সুনীল নারাইনও। তবে ম্যাচের রং বদলে যায় রাসেলের ব্যাটিং ঝড়েই। পঞ্জাবের কোনও বোলারই বিশেষ সুবিধা করতে পারেননি ক্যারিবিয়ান তারকার সামনে। শামির ডেলিভারিতে একবার বোল্ড হয়ে গিয়েও নো বল হওয়ায় প্রাণরক্ষা হয় রাসেলের। তাঁর ব্যক্তিগত রান তখন ৪ বলে ৩! ৩০ গজের বৃত্তের মধ্যে নির্ধারিত চারজন ফিল্ডার না থাকায় নো বল হয়। প্রাণ ফিরে পেয়ে পরের ১৩ বলে ৪৫ রান করেন রাসেল। শামির পরের ওভারে পরপর তিনটি ছক্কা ও একটি চার মারেন তিনি।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে গেল (১৩ বলে ২০ রান) ও মায়াঙ্ক অগ্রবাল (৩৪ বলে ৫৮ রান) ঝোড়ো শুরু করলেও তা ম্যাচ জেতানোর মতো ছিল না। পঞ্জাবের হয়ে রান পেয়েছেন ডেভিড মিলার (৪০ বলে ৫৯ অপরাজিত) ও মনদীপ সিংহও (১৫ বলে ৩৩ অপরাজিত)। তবে শেষরক্ষা হয়নি। ২০ ওভারে পঞ্জাব আটকে যায় ১৯০/৪ স্কোরে।

হারের পর পঞ্জাব অধিনায়ক আর অশ্বিন স্বীকার করে নেন, নো বলে রাসেলের জীবনরক্ষাই ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল। অশ্বিন বলেন, 'আমরা এই ছোটখাট ব্যাপারগুলো অত গুরুত্ব দিইনি। তবে পরের ম্যাচে এটা নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে। এর দায় আমিই নিচ্ছি।' বল হাতে ৩ ওভারে মাত্র ২১ রান দিয়ে দুটি উইকেটও নেন রাসেল। ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডারই ম্যাচের সেরা হয়েছেন। রাসেল বলেছেন, 'প্রথম ছয় ওভারের মধ্যে ক্রিস গেলকে ফেরাতে পেরে খুব স্বস্তি পেয়েছিলাম।' পরপর দুই ম্যাচে সেরার স্বীকৃতি। পুরস্কার হিসাবে পেয়েছেন দুটি গাড়ি। মজা করে রাসেল বলেছেন, 'এইভাবেই গাড়ি পেয়ে যেতে হবে। আর আমার গ্যারাজটাকেও একটু বড় করতে হবে এবার।' ম্যাচ জিতেও কেকেআর অধিনায়ক দীনেশ কার্তিক সতর্ক। বলেছেন, 'শুরুটা ভালই হয়েছে। তবে এটা অনেক বড় টুর্নামেন্ট। ছন্দ বজায় রাখতে হবে।'