সন্দীপ সরকার, কলকাতা: চেন্নাই সুপার কিংসের (Chennai Super Kings) ১৪তম ওভার। হাই কোর্ট এন্ড থেকে দৌড় শুরু করলেন উমেশ যাদব (Umesh Yadav)। যিনি ধারাবাহিকভাবে ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার গতিতে বল করেন। ডানহাতি পেসারের বল হাত থেকে বেরনো মাত্র অফস্টাম্পের দিকে সরে গেলেন অজিঙ্ক রাহানে। উইকেটকিপারের মাথার ওপর দিয়ে ল্যাপ স্কুপ। বল উড়ে গেল চেন্নাই সুপার কিংস ডাগ আউটের ওপর দিয়ে। দেখে কেউ বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না। সত্যিই রাহানে তো! মানে অজিঙ্ক রাহানে, মুম্বইয়ের ক্রিকেটার, যিনি ধ্রুপদী ঘরানার ধারক ও বাহক, কপিবুকের বাইরে যাঁকে শট খেলতে দেখা যায় না, তিনিই এমন বিরল কাণ্ড ঘটিয়েছেন!
রবিবাসরীয় ইডেনে এরকম একের পর এক বিস্ময়ের উপকরণ। যেখানে কলকাতা নাইট রাইডার্স হোম ম্যাচ খেলছে। আর গ্যালারি গর্জন করছে, 'সিএসকে... সিএসকে...'। গোষ্ঠ পাল সরণি দিয়ে হেঁটে যেতে গেলে যে শব্দব্রহ্ম শুনে কেউ বিভ্রান্ত হয়ে পড়তে পারেন। কলকাতাতেই আছেন তো! নাকি মেরিনা বিচের ধার ধরে হাঁটছেন!
কেকেআর শিবিরে একটা অভিশাপ বারবার তাড়া করে ফেরে। কোনও ক্রিকেটারকে ছেড়ে দেওয়া হলে অন্য দলে গিয়ে ম্যাচের পর ম্যাচ জিতিয়ে দেন। সূর্যকুমার যাদবকে দেখুন। শুভমন গিলকে দেখুন। কুলদীপ যাদবেরও পুনর্জন্ম হয়েছে দিল্লি ক্যাপিটালসে গিয়ে।
সেই তালিকায় নবতম সংযোজন অজিঙ্কা রাহানে। যাঁকে এ মরসুমের জন্য রিটেন করেনি কেকেআর। মিনি অকশনে তাঁকে কিনেছিল সিএসকে। আর মহেন্দ্র সিংহ ধোনি যে দলের অধিনায়ক, সেখানে টেস্ট ব্যাটসম্যানের তকমা গায়ে সেঁটে যাওয়া ক্রিকেটারও ল্যাপ স্কুপ মারবেন। তিন নম্বরে নেমে ২৯ বলে অপরাজিত ৭১ রান করে দিয়ে যাবেন। ধোনির ব্যাটিং দেখতে মুখিয়ে থাকা গ্যালারি দেখবে, মহানায়কের মঞ্চের আলো কেড়ে নিয়ে যাচ্ছেন এমন একজন, যাঁকে আইপিএলে পার্শ্বচরিত্র দিতে গিয়েও অনেকে দুবার ভাববেন।
সেই রাহানের ব্যাটিং বিক্রমে প্রথমে ব্যাট করে সিএসকে তুলল ২৩৫/৪। রাহানের পাশাপাশি আলো ছড়ালেন ডেভন কনওয়ে ও শিবম দুবে। ৪০ বলে ৫৬ রান করলেন কনওয়ে। ২১ বলে ৫০ রান শিবম দুবের। ধোনি শেষে নেমে খেললেন মাত্র ২ বল। করলেন ২ রান। চলতি আইপিএলে সর্বোচ্চ স্কোর তুলল চেন্নাই। ম্যাচ জিততে ২৩৬ রান তুলতে হবে কেকেআরকে। ঘরের মাঠে যা অগ্নিপরীক্ষার সমান। পারবেন কি নাইটরা?
তৃতীয় উইকেটে মাত্র ১৬ বলে ৫০ রান যোগ করে ফেললেন রাহানে ও শিবম দুবে। সেই পার্টনারশিপেই ঘায়েল হল কেকেআরের দর্প। ঘরের মাঠে মান বাঁচানোই দায় নাইটদের।