পানাজি: মনিপুরের (Manipur) খেলাধূলোর প্রসঙ্গে উঠলেই এক লড়াকু মায়ের ছবি প্রথমেই মাথায় আসবে। তিনি মেরি কম (Merry Kom)। মহিলাদের বক্সিংয়ে কিংবদন্তি তিনি। সেই মনিপুরেরই আরও এক মায়ের লড়াই সবাইকে নিঃসন্দেহে অনুপ্রাণিত করবে। বাড়িতে দেড় বছরের মেয়েকে রেখে এসেছিলেন। উশুতে ন্যাশনাল গেমসে (National Games) অংশ নিয়ে নিজের চতুর্থ সোনা জিতলেন লেইমাপোকপুম সানাতোম্বী চানু (Sanatombi Chanu)।
গত বছর কন্যা সন্তান জন্মের পর ন্যাশনাল গেমসে প্রথম সোনা জিতলেন সানাতোম্বী। গত বছর নভেম্বরে কোল আলো করে মেয়ে এসেছিল। ছয় মাসের মধ্যে ম্যাটে ফিরে এসেছিলেন সানাতোম্বী। এরপর পাতিয়ালায় গত বছর সিনিয়র ন্যাশনাল ক্যাম্পের সোনা জেতেন সানাতোম্বী। চিনের হাংঝাউতে আয়োজিত এশিয়ান গেমসে তাঁকে পাঠানো হয়নি। ২০১৯ সালের পর থেকে এই প্রথম কোনা আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিলেন সানাতোম্বী। সোনা জয়ের পর এই অভিজ্ঞ উশু প্লেয়ার জানান, ''এর আগে ২০০৭ সালে রুপো, ২০১১ সালে দুটো সোনা ও ২০১৫ সালে সোনা জিতেছিলাম। কিন্তু এবারের সোনাটা সত্যিই স্পেশাল। আমি বাড়িতে আমার দেড় বছরের মেয়েকে রেখে এসেছি। ওর বাবাও জাতীয় গেমসে অন্য দলের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে।''
তিনি আরও বলেন, ''ডেলিভারির পরে ট্রেনিংয়ে এসে শুরুর দিকে খুব সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়েছিল। কিন্তু আমাকে ছোট ছোট করে জগিংয়ের মাধ্য অনুশীলন শুরু করতে হয়েছিল। এরপর ধীরে ধীরে স্ট্রেইংথ ট্রেনিং শুরু করি। মেয়ে জন্মের তিন মাসের মধ্যে ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপে গত বছর নভেম্বরে নেমেছিলাম। আমি সেটা জিততে চেয়েছিলাম নিজের আত্মবিশ্বাস ফিরে পাবার জন্য। সেখানে সোনা জিতে নেই পরে আমি।''
২০০৭ সালে অভিষেকের পর থেকে জাতীয় স্তরে উশুতে রীতিমত আধিপত্য দেখিয়েছেন ৩৪ বছরের এই তরুণী। ২০০৭ থেকে ২০০৯ টানা তিনবার সোনা জয়ের হ্যাটট্রিক করেন তিনি। ২০১১ সালে রুপো জেতেন তিনি। এরপর থেকে সোনা জিতেই এসেছেন সানাতোম্বী। আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টগুলোর মধ্যে ২০১৬ সালে সাউথ এশিয়ান গেমসে দুটো সোনা জেতেন। এছাড়াও ২০১৬ সালে বিশ্বকাপ থেকে ব্রোঞ্জ জেতেন তিনি। ২০১৭ ব্রিকস চ্যাম্পিয়নশিপেও ব্রোঞ্জ জেতেন তিনি।
মনিপুর পুলিশে কর্মরত সানাতোম্বী আরো কয়েক বছর খেলা চালিয়ে যেতে চান। এরপর কোচিংয়ের মাধ্যমে নিজের অভিজ্ঞতা ছড়িয়ে দিতে চান নতুনদের।
আরও পড়ুন: নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে সেমির দৌড় জমিয়ে দিলেন নবিরা, পয়েন্ট টেবিলে টেক্কা পাকিস্তানকে